২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শফিকুল ইসলাম দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি: ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার রয়েছে বহু দর্শনীয় স্থান। এমনই একটি স্থাপনা রতনপুর জমিদার বাড়ি। জমিদার বংশের শেষ নিদর্শন বাড়িটি দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হিসাবে বিষণ্ণ মৌনতায়। অযত্ন আর অবহেলায় এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছে। দর্শনার্থীরা জমিদারবাড়ির ভগ্নাংশ দেখে দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরআগে জমিদার বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সবরকম প্রচেষ্টা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছিলেন উপজেলা প্রশাসন। বিরামপুর শহর হতে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে নিরিবিলি মনোরম পরিবেশে জমিদার বাড়িটি অবস্থিত।
জানা যায়, বিরামপুরসহ আশপাশে অঞ্চলগুলোতে প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করার জন্য অষ্টাদশ শতকে ব্রিটিশরা ফুলবাড়ি জমিদারের পক্ষে রাজকুমার সরকারকে রতনপুর কাচারিতে পাঠান। সাধারণ খাজনা আদায়কারী থেকে জমিদার বনে যান তিনি। পরে তিনি বিলাসবহুল সুদৃশ্য দ্বিতল অট্টালিকা নির্মাণ করেন। কিন্তু তার এ সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। তার এক ছেলে রতন পানিতে ডুবে মারা যায়। পরে তার অন্য ছেলে রখুনি কান্ত বাবু জমিদার হন। ‘৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে রখুনি কান্ত বাবু সস্ত্রীক কলকাতায় পাড়ি জমান। বর্তমানে রখুনি কান্ত বাবুর জমিদার বাড়ির পাশে রয়েছে ইসলামিক মিশন, মাদ্রাসা, মসজিদ, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানসহ বিশাল একটি পুকুর। রখুনি কান্ত বাবুর ১২০০ বিঘা জমি ফলদ, বনজ ও ওষধি বাগান রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির অভাবে অনেক সম্পত্তি বিলীন ও বেদখল হয়ে গেছে। শুধু বাড়িটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যুগ যুগ ধরে এই জমিদার বাড়িটি মেরামত ও সংস্কার না করায় তা ধ্বংস হতে চলছে। এটি সংস্কারের মাধ্যমে প্রত্নত্তাত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করার দাবি এলাকাবাসীর।
বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের খায়রুল আলম রাজু জানান, এ অঞ্চলের নিজস্ব সংস্কৃতি ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে রতনপুর জমিদার বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানাই।
অপূর্ব সৌন্দর্যে মোড়া জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে জমিদারবাড়িটি উপজেলা প্রশাসন থেকে সংস্কারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
কালের সাক্ষী রতনপুর জমিদার বাড়িটি এলাকাবাসী সংস্কার ও প্রয়োজনীয় মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে।