০৬ মে ২০২৪, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, সোমবার, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ঝালকাঠি জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে “প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রচার প্রকল্পে “ দর্শনার মাদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায় অভিভাবক সম্মেলন,নাজেরা ও হিফ্জুল কুরআান বিভাগের ক্লাস উদ্বোধন বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড় ও কালবৈশাখীর আশঙ্কা বরগুনায় ডলার ও রিয়াল প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চুয়াডাঙ্গায় স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে আনসার সদস্যের আত্মহত্যা আশ্রয়ণের ৮০ ঘর সাত লাখে বিক্রি করলেন চেয়ারম্যান কাবিননামায় দেনমোহর নিয়ে প্রতারণা, স্ত্রী গ্রেফতার গৌরনদীতে আ.লীগের ১০৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা দামুড়হুদায় অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান বাবুগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তরুণ ছাত্রলীগ নেতা জুয়েলের গণসংযোগ
দুই সাংবাদিককে বেধড়ক পেটাল তালেবান//

দুই সাংবাদিককে বেধড়ক পেটাল তালেবান//

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তানে সরকার গঠন করতে না করতেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, সাংবাদিক পেটানোর অভিযোগ উঠল তালেবানের বিরুদ্ধে। দেশটিতে নারী সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের বিরুদ্ধে চলা বিক্ষোভের ফুটেজ নেয়ার সময় কাবুলে বেধড়ক পেটানো হয় ২ সাংবাদিককে। এদিকে, এমন হস্তক্ষেপে শঙ্কিত গণমাধ্যমকর্মীরা।

আবারও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তালেবানের বিরুদ্ধে। দখলের তিন সপ্তাহ পর কোনো নারী সদস্য ছাড়াই কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের নিয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে দেশটির নারীরা। রাজধানীসহ একের পর এক প্রদেশে চলছে বিক্ষোভ। কাবুলের পশ্চিমাঞ্চলে রাজপথে বিক্ষোভের ফুটেজ সংগ্রহের সময় বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন তাকি দারইয়াবি ও নেমাত নাগিধি। এদের মধ্যে একজন ভিডিও এডিটর আরেকজন রিপোর্টার।

তাকি দারইয়াবি বলেন, অন্তত ১০ মিনিট ধরে সাত আট জন মিলে যে যেভাবে পেরেছে আমাদের পিটিয়েছে। এমনকি লাঠি দিয়ে পেটানোর পরেও থামেনি। এমন অবস্থা হলে আফগানিস্তানে সাংবাদিকতাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

নেমাত নাগিধি বলেন, অনেক কষ্ট করে বোঝানোর চেষ্টা করেছি আমি সাংবাদিক। তারা কোনোরকম গুরুত্বই দেয়নি। উল্টো মজা করে বলেছে তুমি রিপোর্টার? যারা পিটিয়েছে সবার বয়স ১৮ বছরের মধ্যেই হবে। আমরা এই দেশে স্বাধীন গণমাধ্যম চাই।

এর আগে, কাবুল দখলে নেয়ার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও বিদেশি বাহিনীগুলোকে সহায়তা করা আফগান সাংবাদিকদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশির সময় তাদের না পেয়ে আত্মীয়-স্বজনকে হত্যার অভিযোগ উঠে তালেবানের বিরুদ্ধে।

আগস্ট মাসের মাঝামাঝি আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নিয়েছে কট্টরপন্থী তালেবানরা। ফলে দেশটির খেলাধুলায় এসেছে নানা সীমাবদ্ধতা। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে মেয়েদের খেলাগুলো। কদিন আগে তালেবানের সংস্কৃতিবিষয়ক কমিশনের উপপ্রধান আহমাদুল্লাহ ওয়াসিক বলেছিলেন মেয়েদের ক্রিকেট খেলতে দেওয়া হবে না।

এই চিত্রের জোরালো সমর্থন মিলবে ‘আমাদের রক্ষা করুন’ শিরোনামে আফগান সাংবাদিকদের খোলা চিঠি থেকে। এই খোলা চিঠি পৃথিবীজুড়েই প্রকাশিত হয়েছে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মানবাধিকার সংগঠন এবং গণমাধ্যম নিয়ে কাজ করেন এমন সংগঠন গুলোর কাছে দেড়শ’ জনেরও বেশি আফগান গণমাধ্যম কর্মী বলছেন, আমরা আমাদের জীবন ও আমাদের পরিবারের সদস্যদের রক্ষার ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বিশ্বকে আমাদের জীবন এবং পরিবার রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা জানি না ভবিষ্যতে কী হবে। বিশ্বকে অবশ্যই আমাদের কণ্ঠস্বর শুনতে হবে। বিবিসির হয়ে কাজ করেছেন এমন বেশ কয়েকজন আফগান সাংবাদিকও তাদের রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে দৃশ্যত: কোনো স্বাধীন গণমাধ্যমের অস্তিত্ব ছিল না। এ সময় টেলিভিশন, সংগীত এবং সিনেমা নিষিদ্ধ ছিল। নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গুলো প্রকাশিত হতো, কিন্তু এগুলোতে মানুষের কোন ছবি ছাপানো হতো না।

কুড়ি বছর আগে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করে মার্কিন বাহিনী কাবুলের দখল নিলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় । এই সময়ে চালু হয় বেসরকারি টেলিভিশন, একাধিক সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেলের সম্প্রচার শুরু হয়; এফ এম রেডিও চালু হয়, বিশ্বিবিদ্যালয়গুলো সাংবাদিকতার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা চালু করে, মোবাইল ফোন যোগাযোগের নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করে, উন্মুক্ত হয় ডিজিটাল প্রযুক্তি।

সূত্রগুলো জানাচ্ছে : এই বিশ বছরে ১৭০টিরও বেশি এফএম রেডিও অনুমোদন পায়, কাবুল থেকেই প্রকাশিত হয় ৯ টি সংবাদপত্র, ৭টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং ৫টি বার্তা সংস্থায় কাজ করেন কয়েক হাজার সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মী। দেশটিতে প্রায় ৮৬ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে, ২২ শতাংশ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে।

কিন্তু গত ১৫ আগস্ট তালেবানের হাতে আফগান সরকারের পতনের পর পরিস্থিতির বদল হলো দ্রুত। তালেবানের আশ্বাস সত্ত্বেও আফগানিস্তানে স্বাধীন গণমাধ্যম সম্ভব হবে না বলে ধারণা করছেন সাংবাদিকরা । তাদের এই ধারণা সত্য প্রমাণিত হলো নতুন তালেবান সরকারকে দেখেই; কারণ আগেকার যে তালেবান সরকার গণমাধ্যমকে বিকশিত হতে দেয়নি, এখনকার নেতৃত্বে তারাই অধিষ্ঠিত।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019