৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, মঙ্গলবার, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এবারই প্রথমবারের সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালালো দেশটি। তবে সংঘাতের উত্তেজনা যেন এখানেই থামছে না।
এবার জর্ডানে হামলার হুমকি দিয়েছে ইরান। মূলত ইসরায়েলকে সহযোগিতা করলে জর্ডান পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটি। রোববার (১৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের একটি সামরিক সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে, জর্ডান গুরুতর প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে পারে এবং ইহুদিবাদী দেশটির সাথে জোটবদ্ধ হলে তারা (ইরানের) পরবর্তী টার্গেট হতে পারে।
এর আগে সিরিয়ার রাজধানীতে তেহরানের কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে রোববার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালায় ইরান।
ইরানের এই হামলা প্রতিরোধে অবশ্য ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, ইরানের এই নজিরবিহীন হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে মুসলিম দেশ জর্ডানও।
আমেরিকার মিত্র এই দেশটি ইসরায়েলের দিকে উড়ন্ত কয়েক ডজন ইরানি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে। কয়েকটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য সামনে আনে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উত্তর ও মধ্য জর্ডান জুড়ে ইসরায়েলের দিকে হামলা চালাতে উড়ে যাওয়া কয়েক ডজন ইরানি ড্রোন জর্ডান ভূপাতিত করেছে বলে দুটি ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা সূত্রকে’ উদ্ধৃত করে জানিয়েছে রয়টার্স। মূলত জর্ডানের যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের নিক্ষেপ করা এসব ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইরানের নিক্ষেপ করা এসব ড্রোন হামলা চালাতে জেরুজালেমের দিকে যাচ্ছিল এবং পথিমধ্যেই ড্রোনগুলোকে জর্ডান উপত্যকার জর্ডানিয়ান অংশে গুলি করে ভূপাতিত করে জর্ডানের যুদ্ধবিমান।
এছাড়া অন্য ড্রোনগুলোকে ইরাক-সিরিয়া সীমান্তের কাছে আটকে দেওয়া হয় বলেও জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ওই সূত্রগুলো আর বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
তেহরান টাইমস বলছে, ইরানের ওই সামরিক সূত্রটি জোর দিয়ে বলেছে- জর্ডান যদি ভবিষ্যতে কোনও পদক্ষেপে জড়িত হওয়ার পথ বেছে নেয় তবে দেশটি ইরানের সামরিক অভিযানের পরবর্তী লক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে।
আর এর প্রতিক্রিয়ায় সম্ভাব্য সংঘর্ষের পটভূমিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে জর্ডান এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া ইরানের আধা-সরকারি বার্তাসংস্থা ফারস দেশটির একটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, তেহরানের প্রতিশোধমূলক হামলার সময় ইসরায়েলের সমর্থনে যে কোনও পদক্ষেপের জন্য জর্ডানকে নজরে রাখছে ইরান। এমনকি দেশটি (জর্ডান) ‘পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু’ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে ইরান।
ফারস জানিয়েছে, ‘সামরিক এই পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত একটি সূত্র বলেছে, (আমরা) ইসরায়েলে শাস্তিমূলক আক্রমণের সময় জর্ডানের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি … এবং যদি তারা (ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্য) সম্ভাব্য কোনো পদক্ষেপে অংশ নেয় তবে তারা (জর্ডান) পরবর্তী টার্গেট হবে।’