০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, ৭ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি, শুক্রবার, ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অনলাইন ডেস্ক
দুই সন্তানের জননী নিলুফা ইয়াসমিনকে শ্বাসরোধ হত্যার সাত মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মামলার প্রধান আসামি স্বামীকে গ্রেফতারের পর এই রহস্য উদঘাটন হয়। ঘুম থেকে ডেকে তোলার অপরাধে স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিনকে শ্বাসরোধে করে হত্যা করেন স্বামী ছইদার সরকার ওরফে সহিদার রহমান।
রোববার বিকেলে রংপুর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার শাহজাহান।
তিনি জানান, রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছোট হাজিপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আব্দুল মমিনের মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিনের সঙ্গে ১৪ বছর আগে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী তেলীপাড়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে সহিদার রহমানের। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে দুটি সন্তান জন্ম নেয়। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর নিলুফা ইয়াসমিনকে তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন গুরুতর অবস্থায় বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সেসময় পরিবারের লোকজন এলাকাবাসীকে জানিয়েছিল, নিলুফা ইয়াসমিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওই সময় নিলুফা ইয়াসমিনের পিতার পরিবারেরও কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু থানা পুলিশের সন্দেহ হলে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ওই ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় ইউডি মামলা হয়।
সম্প্রতি চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে নিলুফারকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের আলোকে নিলুফা ইয়াসমিনের বাবা আব্দুল মমিন বাদী হয়ে গত ১৩ জুলাই স্বামী সহিদার রহমান ও শ্বশুর আব্দুল হাইসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে আসামি করে বদরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বদরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোয়ার হোসেন ওই রাতেই স্বামী সহিদার রহমান গ্রেফতার করেন। এরপর তিনি পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
সহিদার রহমান স্ত্রীকে হত্যার বর্ণনার বরাত দিয়ে ওই ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার শাহজাহান বলেন, ঘটনার দিন স্থানীয় হাটে নাইট ডিউটি করে সহিদার রহমান ভোরে বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। দুপুরে স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন গরুকে খাবার দেওয়ার জন্য স্বামীকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। এ সময় তিনি রেগে হয়ে স্ত্রীর গলা চেপে ধরেন। স্ত্রী নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে রেখে বাড়ির বাইরে যান। কিছুক্ষণ পর বাড়িতে এসে নিলুফাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় স্বামী প্রচার করেন, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।