২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স:: বরিশাল নগরীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক যুবক প্রতিপক্ষের লোমহর্ষক সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। কয়েকজন মিলে সোহাগ খান নামের বিশোর্ধ্ব যুবককে তুলে নিয়ে মারধর করাসহ মোটরসাইকেলের চাবি দিয়ে তার ২ চোখ তুলে নিয়েছে। কোতয়ালি মডেল থানাধীন শহরের কশাইখানা এলাকার এই নৃশংস ঘটনায় পার্শ্ববর্তী মোহাম্মদপুর এলাকার সোহাগ খান আইনের আশ্রয় নিয়ে এখন জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে এক ধরণের ভীতির মধ্যে আছেন। পুলিশ তার মামলায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও জামিনে বেড়িয়ে খুন-জখমের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এমতাবস্থায় অন্ধ সোহাগ জীবনের নিরাপত্তাসহ তার ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি রেখেছে। সোমবার বরিশাল প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানিয়েছেন পেশায় ব্যবসায়ী সোহাগসহ তার গোটা পরিবার।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর শহরের কশাইখানা এলাকায় বিশ্বাসের হোটেলের সম্মুখে নাজমুল, আল আমিন, সাইফুল ও রাব্বি হামলা চালায়। তারা সম্পর্কে ভাই বলে জানা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনের ছোট বোন মুক্তা আক্তার জানান, চরবদনা মৌজার একখন্ড ভূ-সম্পত্তি নিয়ে হাটখোলা হকার্স মার্কেট এলাকার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি মোবারক সিকদার ও তার চার ছেলের সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। ওই জমিটি তারা ভোগ করলেও বছর সাতেক আগে মোবারক সিকদার নিজের দাবি করে। এবং দখলে নিতে নানামুখী হয়রানি শুরু করে। এনিয়ে তাদের সাথে বিরোধ দেখা দিলে এর পুর্বেও কয়েক দফা হামলা করে।
সেই ধারাবাহিকতায় গত ৪ ডিসেম্বর সকালে সোহাগ কশাইখানা এলাকার বিশ্বাসের দোকানে নাস্তার উদ্দেশে রওনা দিয়ে যায়। এসময় পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে মোবারকের ছেলে নাজমুলের নির্দেশে অপর তিন ভাই আল আমিন, সাইফুল এবং রাব্বি তার গতিরোধ করে এবং হামলা চালায়। মারধরের একপর্যায়ে তারা মোটরসাইকেলের চাবি দিয়ে যুবকের দুই চোখ উপড়ে নেয়। এবং তাকে ডাকাত হিসেবে আখ্যায়িত করে থানা পুলিশে দেওয়ার হুমকি দিলেও পরবর্তীতে পরিস্থিতি বেগতিক অনুমানে নিয়ে পালিয়ে যায়।
রোমহর্ষক এই ঘটনায় সোহাগের বড় ভাই মাসুম খান বাদী হয়ে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করলে পুলিশ নাজমুল ও রাব্বিকে আটক করে। পরবর্তীতে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক আল আমিন এবং মো. সাইফুলকে সাথে নিয়ে ফের সন্ত্রাস শুরু করে। থানা পুলিশকে বিষয়টি একাধিকবার অবহিত করা হলেও কোনো প্রকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
সংবাদ সম্মেলনের এমন অভিযোগ তুলে ধরে যুবক সোহাগ খান বলেন- তার অন্তসত্ত্বা স্ত্রী কয়েকদিন পর প্রথম সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছেন। ফলে তিনি পিতা হতে গেলেও সন্তানের মুখ দেখার কোনো সুযোগ বা ভাগ্য থাকছে না। যাদের জন্য তিনি চোখ হারিয়ে নিজের সন্তানকে দেখা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন, তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। এক্ষেত্রে তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সোহাগ খানের মা মাসুদা বেগম, অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী ইয়াসমীন, শশুর বাবুল খান, বড় ভাই ও মামলার বাদী মো. মাসুম খান।’