২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫১ অপরাহ্ন, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
আসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধী নবুয়তের পাশে সেই মানবিক এএসআই জাহিদ

আসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধী নবুয়তের পাশে সেই মানবিক এএসআই জাহিদ

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি /বরিশালের বানারীপাড়ার একজন অসহায় জীবন সংগ্রামী প্রায় চলৎশক্তিহীন শারীরিক প্রতিবন্ধী নবুয়তের জন্য মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিলেন মানবিক পুলিশখ্যাত বানারীপাড়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক(এএসআই) জাহিদুল ইসলাম। ‘মানুষ মানুষের জন্য” – এ নীতিবাক্য হৃদয়ে ধারণ করেই সর্বদা অসহায় ও দুখি মানুষের পাশে দাঁড়ান এ পুলিশ কর্মকর্তা। তাছাড়া মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও তিনি আপোসহীন। তারই ধারাবাহিকতায় বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের বড় করফাকর(লক্ষ্মীপুরা) গ্রামের প্রয়াত হাবীবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী অসহায় নবুয়তের সংগ্রামী জীবনের কথা পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে জেনে এএসআই জাহিদ তাকে ঝুঁকিপূর্ণ পেশা ছেড়ে বাড়িতে মোরগ-মুরগীর খামার দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেন। এজন্য তিনি নবুয়তকে ৬৩টি দেশি মোরগ-মুরগীর বাচ্চা মা-সহ নানা জায়গায় খুঁজে খুঁজে কিনে এনে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন এবং একটি ছোট্ট খামার ঘরের ব্যবস্থা করে দেন। জাহিদ পুলিশের এ মানবিকতায় নবুয়তের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে খুশির ঝিলিক। বিস্মিত হন এলাকাবাসীও। অপরদিকে নবুয়তের শারীরিক যে সমস্যা তাতে তার ভিক্ষা করার কথা। কিন্তু “নবীর শিক্ষা করো না ভিক্ষা” এ প্রতিপাদ্যকে হৃদয়ে ধারণ করে সে নেমেছে জীবন সংগ্রামে। সামান্য কিছু পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করে মা, স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে-সহ পাঁচ সদস্যের সংসার চালিয়ে অাজও কোনোমতে টিকে অাছে। শত ঝড়-ঝঞ্জা উপেক্ষা করেও সন্ধ্যানদীতে ছোট নৌকায় করে জেলেদের কাছে চা-বিস্কুট, পান-সিগারেট ও অন্যান্য খাবার বিক্রি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। প্রায় চলৎশক্তিহীন দু’ হাতে কোনোমতে একটু শক্তি পায়। হাত দু’টিকে সে পায়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে দু’ হাত ও নিতম্বের উপর ভর করেই তাকে চলাফেরা করতে হয়। দু’ হাতের মাধ্যমে একটু বৈঠা ধরতে পারে। কিন্তু নদীতে এ ব্যবসা তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও সে ভয়কে জয় করার অদম্য ইচ্ছা নিয়ে বৈঠা হাতে নেমে পড়েছে। তার আশু বিপদের কথা চিন্তা করেই জনবান্ধব পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম তাকে নিজ বাড়িতে কর্মসংস্থানের এ ব্যবস্থা করে দেন। প্রসঙ্গত
এর আগে এ এসআই জাহিদুল ইসলাম তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালির মীর্জাগঞ্জে করোনা রোগে মৃতদের লাশ দাফনের জন্য ১৭ শতক সম্পত্তি দান করে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এছাড়াও তিনি বানারীপাড়ায় জনহিতকর নানা কাজ করে একজন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে সুপরিচিতি ও সুনাম কুড়িয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে এএসআই জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমৃত্যু তার এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে তাকে সর্বদা উৎসাহিত করেন বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম,বিপিএম(বার)।

উল্লেখ্য, পুলিশের এএসআই জাহিদুল ইসলাম সমাজসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ চারবার এবং দ্রুত ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য তিনবার-সহ মোট সাতবার বরিশাল জেলার শ্রেষ্ঠ এএসআই’র পুরস্কার লাভ করেন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019