০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন, ৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, বুধবার, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
হারুনসহ তিন অতিরিক্ত আইজিপিকে বাধ্যতামূলক অবসর দর্শনায় কেরুজ টেন্ডার বাক্স ভাঙচুরের মামলা,আসামী ২০/২৫ জন কালকিনিতে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ১০০০ পিচ শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ। ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী ঝড় হবে হ্যারিকেন মিল্টন দুর্গাপূজা হলো সাম্যের প্রতীক ও মৈত্রীর প্রতীক- উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা হাসানাত আব্দুল্লাহসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা মোরেলগঞ্জে ৩ দিনব্যাপী স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী অসুস্থ এম. এ মান্নান সিলেট ওসমানী হাসপাতালে দর্শনায় আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির ব্যাংকের ৪৮ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সুন্দরবনের উপকূলীয় মোরেলগঞ্জে ব্রিজের অভাবে চরম দুর্ভোগে ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্তত ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টর্চার সেলের সন্ধান মিলেছে

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্তত ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টর্চার সেলের সন্ধান মিলেছে

অনলাইন ডেস্ক ঃঃঃঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর হলগুলোতেও গড়ে উঠেছে ‘টর্চার সেল’। বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ‘টর্চার সেলে’ মেধাবী ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে হত্যার পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্তত ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হলে ‘টর্চার সেলের’ সন্ধান মিলেছে।

এসব কক্ষে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক বেচাকেনাও। মাদক সেবন তো আছেই। কক্ষগুলো কথিত ছাত্রনেতাদের কব্জায় থাকায় তাদের ব্যাপারে প্রশাসনকেও অসহায় দেখা গেছে। এসব কক্ষে ডেকে নিয়ে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটলেও অজানা আতঙ্কে কেউ মুখ খুলছেন না।
জানা গেছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের ১০০১ নং কক্ষটি ‘টর্চার সেল’ ছাড়াও মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ঘটলেই এই কক্ষ থেকেই বের হতে থাকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা।

ছাত্র নেতা নামধারী শিক্ষার্থীরা নানা অজুহাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওই কক্ষে ডেকে নিয়ে করা হয় মারধর। কয়েকজন ছাত্র বলছেন, এই কক্ষটিতে ইয়াবা, মদ ও গাঁজা সেবনের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নামে এসব অপকর্ম করা হলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পর্যন্ত পান না। পান থেকে চুন খসলেই সাধারণ ছাত্রদের ওই কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের পঞ্চম তলায়ও অনুরূপ আরেকটি কক্ষ রয়েছে, যা নিয়ে ছাত্রদের অভিযোগের শেষ নেই। নির্যাতনের ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট ইব্রাহিম মোল্লা অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, ১০০১ নং কক্ষটি দীর্ঘদিন সিলগালা করা ছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন ৭-৮ জন ছাত্র তালা ভেঙে কক্ষে ঢুকে বসবাস শুরু করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়েও অদৃশ্য কারণে পারিনি।

এই কক্ষের ছাত্রদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ আসছিল। সতর্কও করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো কিছুই কাজে আসেনি। প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলর সভায় তখন রুটিন দায়িত্বে থাকা ভিসিকে বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত করার কথা বলা হলেও তিনি এড়িয়ে যান। কেউ-ই কর্নপাত করছে না। ছাত্রদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি একাধিকবার। আমার হাত-পা বাঁধা। হায়ার অথরিটি না চাইলে কিছুই করার নেই।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট রাহাত হোসেন ফয়সাল অবশ্য জানান, এই হলে মাদক সেবনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হলে একটি অভিযোগ বাক্স রয়েছে। অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অশ্বিনী কুমার হলের এ ব্লকের ৩১০ নং কক্ষে দেদার চলে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি। সূত্র বলছে, এই কক্ষে প্রতি রাতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয় হয়। কোনো ছাত্র প্রতিবাদ করলেই তাকে মারধর করা হয়। কলেজের ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক হল ও জীবনানন্দ দাশ হলেও একাধিক কক্ষকে টর্চার সেল বানানো হয়েছে। পাশাপাশি চলে মাদকের বেচাকেনা। কথা হয় হলের কয়েকজন আবাসিক ছাত্রের সঙ্গে। তারা বলেন, শিক্ষক বা কলেজ কর্তৃপক্ষ তো সব জানে। তারাও কিছু বলেন না।

আমরা তো দূরের কথা। এসব বিষয়ে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, আমাদের কলেজের বিভিন্ন হলে মাদক সেবনের বিষয়ে আমি অবগত রয়েছি। এই বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। হল সুপারদের ডাকা হয়েছে, তাদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে কোন কক্ষে কী সমস্যা হচ্ছে। বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করতে দেয়া হবে না।

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসেও এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। ২ নং ছাত্রাবাসের টিভি রুমে সাধারণ ছাত্রদের ওপর একাধিকবার টর্চারের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে ১ নং হলের দ্বিতীয়তলায় ৪৭তম ব্যাচের বেশ কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে মাদকের রমরমা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। গাঁজা, ইয়াবা ও মদ প্রায় প্রতিদিনই এই হলের দ্বিতীয়তলার একাধিক কক্ষে ঢোকে। কলেজের এক শিক্ষক জানান, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে এদের কিছু বলেও লাভ হয় না।

এরা নেশাগ্রস্ত হওয়ায় কোনো কিছুই পরোয়া করে না। পাশাপাশি সরকারি বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রধান ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষে অস্ত্র থাকার অভিযোগ রয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের নামে তারা নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।

কথা হয় বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খানের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, বরিশালের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাস বা হলগুলোতে আমাদের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। হলে থেকে কক্ষ দখল করে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছি আমরা।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019