০৪ মে ২০২৪, ০২:০৮ অপরাহ্ন, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স:: বরিশালে এক নারীকে হত্যার পর ড্রামে ঢুকিয়ে লাশ গুম চেষ্টার ঘটনার মূলহোতা আব্দুল খালেক হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক মাস পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ৩টার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার হিজলতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। খালেক গৌরনদী উপজেলার বাসিন্দা এবং বরিশাল নগরীর কাশিপুরে নির্মাণাধীন একটি ভবনের কেয়ারটেকার।
নিহত সাবিনা ওই উপজেলার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়াসুর এলাকার কাতার প্রবাসী শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তিন সন্তানের জননী সাবিনা পার্শ্ববর্তী মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর এলাকার সাহেব আলীর মেয়ে। নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। কাতার প্রবাসী স্বামীর সহায়তায় বিদেশে লোক পাঠাতেন সাবিনা।
শুক্রবার বেলা ১২টায় নগরীর রূপাতলীতে পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, গত ২০ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে গৌরনদীর ভূরঘাটা বাসস্ট্যান্ডে একটি বাসের ছাদ থেকে ব্যারেলের মধ্য বোরখা পরিহিত অজ্ঞত পরিচয়ের নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই নারীর পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হলেও হত্যাকারীর পরিচয় উদঘাটন কিংবা তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশের হাতে আটক খুনী পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি খালেক স্বীকার করেছে বিদেশ নেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়েছিল সাবিনা। পরে বিদেশ না পাঠানোয় টাকা ফেরত চান।কিন্তু টাকা ফেরত না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২০ নভেম্বর সাবিনাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কাশিপুরে ডেকে আনেন। টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটান। এ ঘটনায় গৌরনদী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে খালেককে গৌরনদী থানায় সোপর্দ করা হবে।
সাবিনার দেবর মনির হাওলাদার জানান, কাতার যাওয়ার জন্য খালেক হাওলাদার তার ভাবীর (সাবিনা) কাছে ৪ লাখ টাকা দেয়। বিদেশ পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় এক পর্যায়ে খালেক টাকা ফেরত চায়। সাবিনা তাকে দেড় লাখ টাকা ফেরত দেয়। বাকি আড়াই লাখ টাকা পায় খালেক। পাওনা টাকার জন্য বিভিন্ন সময় তাগাদা দিতো খালেক। বিদেশ যেতে না পেরে সে নগরীর কাশীপুর আনসার ব্যাটালিয়ন অফিস সংলগ্ন ভূঁইয়া বাড়ি মসজিদের পাশে মাহিলাড়ার বাসিন্দা ব্যাংকার সচীন রায়ের নির্মাণাধীন ভবনে ম্যানেজার হিসেবে কাজ নেয়।
এর আগে ২০ নভেম্বর বাসটি গৌরনদীর ভূরঘাটায় যাওয়ার পর কেউ ব্যারেল নিতে না যাওয়ায় বাস শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে ব্যারেল খুলে মরদেহ দেখের বাসের হেলপার। এরপর পুলিশকে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাবিনার মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে পুলিশ তার পরিচয় জানতে পারে। এরপর দেবর মনির এসে তার ভাবী সাবিনার মরদেহ শনাক্ত করেন।’