২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
অনলাইন ডেস্ক
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধের উপর ১৫ দশমিক দুই কিলোমিটার দীর্ঘ আউটার রিং রোড নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৩ সালে একনেকে অনুমোদনের পর ২০১৬ সালে কাজ শুরু হয়। ২০১১ সালে সিডিএ’র হাতে নেয়া ৮৫৬ কোটির প্রকল্প তখনই একদফা সংশোধিত হয়ে দাড়ায় ১ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে কাজ শুরুর পর ২০১৮ সালে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। মেয়াদ বাড়ে ২০১৯ এর জুন পর্যন্ত। কিন্তু চলতি বছরও কাজ শেষ না হওয়ায় মেয়াদ বাড়ছে আরও একদফা।
একইরকম অবস্থা কক্সবাজার বিমানবন্দরের ২০০৯ সালে হাতে নেয়া প্রকল্প এখনো শেষ হয়নি, কিন্তু ব্যয় ৩০২ কোটি থেকে ৬ দফায় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১৫ কোটিতে। এগুলো দেশের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি আর দক্ষতার উদাহরণ মাত্র। চলতি অর্থবছরের শেষ ছয় একনেক সভা পর্যালোচনায় দেখা যায়, অনুমোদিত ২৭ প্রকল্পের ১২ টি সংশোধিত। পর্যবেক্ষকরা বলছেন উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে লাগামহীন।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে পার কিলোমিটার রোড কনস্ট্রাকশন ব্যয় এই মুহূর্তে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। এই ব্যয় প্রায় ৬০ কোটি টাকার কাছাকাছি। যা ভারতে প্রায় ১২ বা ১৩ কোটি। এশিয়া এবং ওয়ার্ল্ড এভারেজ তার চেয়ে কম।
আরও পড়ুন: প্রতি কিলোমিটার রাস্তায় খরচ ৮৬ কোটিরও বেশি!
অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘এই ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন পর্যায়ে সাড়ে ৮ থেকে শুরু করে প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত মোট বাজেটের অর্থ অপচয় হয় দুর্নীতির মাধ্যমে।’
২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত দশ বছরে একেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুশাসন পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যয় ও মেয়াদ যৌক্তিক করতে তিনি বারবার তাগিদ দিয়েছেন। কিন্তু দলীয় প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম আর বাস্তবায়ন অদক্ষতায় অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।
অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘আমাদের সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে এর অন্যতম কারণ হচ্ছে যে, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী মহলের অনিয়মের মাধ্যমে কার্যাদেশ বিক্রয় করা।’
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যখন প্রজেক্ট ডেভেলপমেন্ট করা হয় তখন ‘প্রজেক্ট ফিজিবিলিটি’ বা ‘প্রজেক্ট প্ল্যান’ এখানে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। প্রজেক্টের মনিটরিংয়ে ঘাটতি রয়েছে।’
অক্টোবর পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ, যে গতি গেলো চারবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম চারমাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিলো ১১ শতাংশ।