১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৫ অপরাহ্ন, ১৬ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি, রবিবার, ৩রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স : শেরপুরের নকলায় রাবিয়া (৮০) নামের এক বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বিধবা ভাতা কার্ড বাতিল করার অভিযোগ উঠেছে। গত প্রায় সাত মাস ধরে তিনি বিধবা ভাতা পাচ্ছেন না। উপজেলার ৬নং পাঠাকাটা গ্রামের জাঙ্গিরারপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জাঙ্গিরারপাড় গ্রামের রাবিয়া বেগমের নাম পরিবর্তন করে মাহমুদা নামের আরেকজনের নামে সেই ভাতা দেওয়া হচ্ছে বলে উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর কর্তৃক জানানো হয়েছে। জানা যায়, প্রায় ১৭ বছর আগে রাবিয়ার স্বামী সুবেতুল্লাহ মারা যান। রাবিয়ার চার ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় ছেলে নজরুল ইসলামের টানাপোড়েন সংসারে কোনোরকম জীবনযাপন করছেন।
২০০৯ সালে বিধবা ভাতায় যুক্ত হন রাবিয়া বেগম। এরপর তিন মাস অন্তর অন্তর তিনি এক হাজার পাঁচশত টাকা করে নিয়মিত ভাতা পান। তবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে তার মোবাইলে ভাতা ম্যাসেজ আসা বন্ধ হয়ে যায়। কেন এমনটি হয়েছে তা জানতে পারেনি রাবিয়া।
এই অবস্থায় স্থানীয় আরিফুর রহমান নামের একজন ওই বিধবা নারীর বই নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গেলে জানতে পারেন, প্রায় এক বছর আগে উপকারভোগী রাবিয়া মারা গেছেন। তাই আরিফুর রহমান তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করেন এবং অন্য একদিন তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে রাবিয়াকে নিয়ে যান। বারিয়া মারা যাননি তা প্রমাণের চেষ্টা করেন আরিফুর রহমান। তখন ওই কর্মকর্তা বলেন, আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিব।
এ বিষয়ে রাবিয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কীভাবে মরলাম, কখন মরলাম তা অফিসের লোকজনই কইতে পারবো। আমারতো কেউ নাই, এই কয়ডা টেহা দিয়া কোনোমতে চলছিলাম তাও বন্ধ করে দিছে ওরা।আপনারা একটা ব্যবস্থা কইরা দিলে আল্লাহ আপনাদের ভালো করবে। এহনতো আমি ওষুধও কিনে খাইতে পারি না, যে ছেলের কাছে থাকি তারও দুই ছেলে এক মেয়ে। ছেলেটা রাজমিস্ত্রীর কাজ করে তার সংসার চালায়।
ওই বৃদ্ধার বিধবা ভাতা কার্ডের বহি নং-১১৬৩। বইয়ের ফটোকপি নিয়ে নকলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে অনলাইন সার্চ করে দেখা যায় ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে রাবিয়াকে মৃত দেখানো হয়েছে এবং কৈয়াকুড়ী কান্দাপাড়ার সুচেন আলীর মেয়ে মাহমুদা এর নাম প্রতিস্থাপন করা হয়। এরপর থেকে মাহমুদা বিধবা ভাতা পাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বলেন, এটা ভুলক্রমে হয়েছে, বৃদ্ধার একটা ব্যবস্থা করবো। ইউপি চেয়ারম্যন আ. সালাম সরকার বলেন, এটা ভুলক্রমে হতে পারে এবং মেম্বার এই কাজটি করেছে। কিন্তু মৃত নিশ্চয়তার সনদে ইউপি চেয়ারম্যানের সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে। সমাজসেবা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন এবং দ্রুত ব্যবস্থ্য নিবেন বলে জানিয়েছেন।