১৮ মে ২০২৪, ০৩:২২ অপরাহ্ন, ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
বানারীপাড়ায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাক মাস্টারের দাফন সাংবাদিক সোহেল সানি ও রাহাদ সুমনের নানি কোহিনুর বেগমের ইন্তেকাল প্রধানমন্ত্রী চান বাংলাদেশের সকল মানুষ এক ছাতার নিচে বাস করবে-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী আগৈলঝাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত জীবননগরে সড়ক দুর্ঘটনায় হাতপাখা বিক্রেতার মৃত্যু মেয়েরা চাকরি শুরু করার পর থেকেই ডিভোর্সের সংখ্যা বেড়েছে চুয়াডাঙ্গায় ‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল’নীতি বাস্তবায়নে পেট্রোল পাম্প মালিকদের সাথে পুলিশের মতবিনিময় চুয়াডাঙ্গার জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ১৫দিন ধরে অনুপস্থিত,মেলেনি নোটিশের জবাব বাবুগঞ্জে ইউপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের ১৫ টি ল্যাপটপ চুরি তিন লাখ রেনু পোনা জব্দ, ৯ জেলে আটক বরিশালের হিজলা ও মুলাদীতে।
ঘোড়াঘাটে ছাগলের পিপিআর রোগের টিকা প্রদান অভিযান শুরু

ঘোড়াঘাটে ছাগলের পিপিআর রোগের টিকা প্রদান অভিযান শুরু

মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়াঘাট(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ছাগল ভেড়ার পেস্টি ডেস পেটিটস ইন রুমিন্যন্ট(পিপিআর) এর রোগের টিকা প্রদান অভিযান শুরু হয়েছে।
৩০ সেপ্টেম্বর থেকে এ টিকা অভিযান শুরু করা হয়। ১০ ্অক্টোবর পর্যন্ত টিকা প্রদান ্অভিযান চলবে।
একটি পৌরসভা ও উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রাম পাড়া মহল্লায় টিকা প্রদান করা হবে। ৫০ হাজার ছাগল ভেড়াকে টিকা দেওয়া হবে। এ উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় ছাগল ভেড়ার পিপিআর রোগের লক্ষণ,প্রতিরোধ,ও ছাগলের পিপিআর রোগের চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করেন, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডা:বিপ্লব কুমার দে,তিনি বলেন,পিপিআর হচ্ছে সংক্ষিপ্ত নাম, এর পুরো নাম,পেস্টি ডেস পেটিটস ইন রুমিন্যন্ট।পিপিআর গবাদিপশু যেমন ছাগল ভেড়া গাড়ল এর একটি মারাত্মক ভাইরাসজনিত রোগ।

পিপিআর কি?ছাগলের পিপিআর রোগ একটি মরণঘাতি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে গবাদিপশুর মুখ থেকে হলুদে এক ধরনের পদার্থ নিঃসৃত হতে দেখা দেয়, ছাগলের জ্বর আসে, ডাইরিয়া হয়, শ্বাসকষ্ট হয় ইত্যাদি লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে ছাগলের মৃত্যুর হার প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ হয়ে থাকে। আবার এই রোগের চিকিৎসা করাতে গেলে খরচও বেড়ে যায়। যার কারণে একবার ছাগলের খামারে যদি পিপিআর রোগে আক্রান্ত ছাগল চিহ্নিত হয়, সেক্ষেত্রে খামারিদের বড় একটি লোকসানের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
ছাগলের পিপিআর রোগের কারণভাইরাস খুব দ্রুত নিজেদের বংশবিস্তার করতে সক্ষম এবং সাধারণত একটি প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে স্থানান্তরিত হয়। যখন একটি প্রাণী ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন আক্রান্ত প্রাণীটি অন্যান্য সুস্থ প্রাণীদের আক্রান্ত করতে পারে। যা স্পর্শে হতে পারে, কিংবা স্পর্শ ছাড়াই উভয় পদ্ধতিতে ছড়াতে সক্ষম।
যে ভাইরাসটির কারণে ছাগলের পিপিআর রোগ হয় সেটি হচ্ছে মরবিলি ভাইরাস। ছাগলের লালা, নাক বা মুখ থেকে বের হওয়া তরল পদার্থ ইত্যাদি থেকে রোগটির ভাইরাস ছাড়িয়ে থাকে। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এই রোগটি ছড়ানোর বড় একটি কারণ।

ছাগলের পিপিআর রোগের লক্ষণ কি?ছাগলের পিপিআর রোগের কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে। যা প্রকাশ পেলে আপনি খুব সহজেই রোগটি চিহ্নিত করতে পারবেন৷ ছাগলের পিপিআর রোগের লক্ষণগুলো হচ্ছে–
হঠাৎ করেই ছাগলের জ্বর আসে। ছাগলের পুরো শরীর গরম হয়ে যায়। তাপমাত্রা ১০৫ থেকে ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে হতে পারে।
ছাগলের নাক, কান, মুখ এমনকি চোখ থেকেও এক ধরনের গাঢ় তরল পদার্থ বের হতে থাকে। এই তরল পদার্থটি কয়েকদিন পর আরো গাঢ় হয়ে হলদে এক ধরনের পদার্থে রূপ নেয়।

নাক থেকে নিঃসৃত হওয়া হলদে পদার্থটির কারণে অনেক সময় নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যার দরুন ছাগলের শ্বাসকষ্ট হয়।

পিপিআর রোগের আরেকটি বড় লক্ষণ হচ্ছে আক্রান্ত ছাগলটি ডায়রিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যায়।

ছাগলে জিহ্বা, দাঁত, মুখের তালু ইত্যাদি নরম অংশে এক প্রকার ক্ষুদ্র ঘা দেখতে পাওয়া যায়, যা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব।

ছাগলের চোখও এই রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়। ছাগলের চোখ থেকে এক ধরনের সাদা পদার্থ বের হতে থাকে, যা চোখকে অনেক সময় ঢেকে রাখতে পারে।

পিপিআর রোগে আক্রান্ত হলে ছাগলটির ওজন খুব দ্রুততার সাথে কমতে থাকে।

ছাগলের পিপিআর রোগের প্রতিকারঃমরণঘাতী এই রোগ থেকে ছাগলকে প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই পূর্ব থেকেই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। যদিও পিপিআর রোগের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে এর একটি টিকা রয়েছে, যা ব্যবহার করলে ছাগলের পিপিআর রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। যার প্রয়োগের ফলে ছাগল সহজে পিপিআর রোগে আক্রান্ত হবে না।
তো, কোথায় পাবেন পিপিআর রোগের প্রতিরোধকারী টিকাটি? বাংলাদেশের প্রত্যেকটি উপজেলার প্রাণী সম্পদ দপ্তরে পিপিআর রোগ প্রতিরোধকারী টিকাটি পেয়ে যাবেন। একটি ছাগলকে মাত্র ১ সিসি পিপিআর প্রতিরোধী টিকা প্রয়োগ করতে হবে। টিকা প্রয়োগ করার ১৫ দিনের মধ্যে ছাগলটির শরীরে পিপিআর রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে।
কিন্তু এই ক্ষমতা শুধুমাত্র এক বছর স্থায়ী হয়। তাই এক বছর পর পর এই রোগের টিকাটি দিতে হবে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি ছয় মাস পরপর পিপিআর রোগের রোগ প্রতিরোধকারী টিকা প্রয়োগ করা হয়। পিপিআর রোগ প্রতিরোধী টিকাটি প্রাণী সম্পদ দপ্তর বিনামূল্যেই খামারিদের প্রদান করে থাকে।
ছাগলের পিপিআর রোগের প্রতিরোধঃপূর্ব সতর্কতা অবলম্বন করাই ছাগলের পিপিআর রোগের প্রতিরোধের কার্যকরী পদক্ষেপ হতে পারে। নিয়মিত ছাগলকে পিপিআর রোগ প্রতিরোধের টিকা প্রয়োগ করলে ছাগলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই খামারিদের উচিত প্রতি ছয়মাস পর পর পিপিআর রোগ প্রতিরোধী টিকাটি ছাগলের উপর প্রয়োগ করা।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019