২১ মে ২০২৪, ০২:০০ অপরাহ্ন, ১২ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, মঙ্গলবার, ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
বাবুগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় চেয়ারম্যান প্রার্থী স্বপনের সেন্টার কমিটি গঠন চুয়াডাঙ্গায় ধান ও চাল ক্রয় শুরু মাইকিং করে ক্রয় মূল্য প্রচার চুয়াডাঙ্গায় সন্ধ্যায় স্ত্রীর গলায় দড়ি,রাতে অভিযুক্ত স্বামীকে গণপিটুনি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের স্টিকার লাগানো গাড়িতে মিলল ৭ লাখ পিস ইয়াবা মোটরসাইকেলের কাগজ দেখতে চাওয়ায় দুই পুলিশকে পেটালেন যুবক আগৈলঝাড়ার বাকাল ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত পর্যটকদের নিরাপদ আবাসন নিশ্চিতে টুরিস্ট পুলিশ সুপারের হোটেল ফার্স অ্যান্ড রিসোর্ট পরিদর্শন বিএনপি নেতার গেটে সাইনবোর্ড ‘ভোট চাহিয়া লজ্জা দেবেন না প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, পুলিশ সদস্য আটক ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে: প্রধানমন্ত্রী
বরিশালে বিয়ের পিড়িতে দু’হাত বিহীন কনে

বরিশালে বিয়ের পিড়িতে দু’হাত বিহীন কনে

আজকের ক্রাইম ডেক্স॥ অবশেষে জীবনের বাকিটা সময় স্বামীর সংসারে সুখের খোঁজে বিয়ের পিড়িতে বসেছেন শিশুকালে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় দুই হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ফাল্গুনী সাহা। বর সুব্রত মিত্র ছোট বেলা থেকেই পরিচিত, তবে তাদের সাথে বিগত পাঁচ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো।

সেই প্রেমের সম্পর্ক থেকেই সাত পাকে বাঁধা পরলেন ফাল্গুনী ও সুব্রত। সবকিছু জেনে শুনে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা সদরের বাসিন্দা সুব্রত মিত্র বেশ জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে বসেন বিয়ের পিড়িতে। দুই পরিবারের সম্মতিতে বরিশাল নগরীর ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী শংকর মঠ মন্দির প্রাঙ্গনে বুধবার দিবাগত রাতে তাদের বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় উৎসুক জনতা ভীড় করেন বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে।

বর সুব্রত মিত্রর মহানুভবতা ও দৃষ্টিভঙ্গি কতোটা উচ্চমানের তা নিয়েও হতবাক হয়েছেন অনেকে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিয়ের বেশ কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে মুহুর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুব্রত মিত্র পটুয়াখালীতে বেসরকারী সংস্থা কোডেক এর ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি দুই হাত হারা ফাল্গুনী বরিশাল ব্র্যাক অফিসে সহকারী এইচআর পদে কর্মরত রয়েছেন।

দুইজনের বাড়ি গলাচিপাতে হলেও ফাল্গুনী নগরীর বিএম কলেজ সংলগ্ন ইন্দোবাংলা ফার্মাসিউটিক্যালের সামনে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। জগদীশ চন্দ্র সাহার মেয়ে ফাল্গুনী সাহা বলেন, ২০০২ সালে গলাচিপায় আমাদের পাশের বাড়ির ছাদে বসে বৈদ্যুতিক তারে দুর্ঘটনার কারণে দুই হাতই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে আমি নিজেকে কখনো দুর্বল মনে করিনি। দুই হাতের যতটুকু অংশ ছিলো, ততটুকু দিয়েই আমি পড়াশুনা শেষ করে এখন চাকরি করছি।

তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালে গলাচিপা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৩ সালে উত্তরা ট্রাস্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছি। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিওলোজি ও এনভায়রনমেন্ট সাবজেক্টে ২০১৮ সালে অনার্স ও পরে মাস্টার্স শেষ করে চাকরি জীবনে প্রবেশ করেছি।

ফাল্গুনী সাহা বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় দৃষ্টিভঙ্গি আর মানসিকতা ঠিক থাকলে প্রতিবন্ধকতা কোনো বিষয়ই নয়। আমাদের বিয়ের বিষয়টি দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করছি। বর সুব্রত মিত্র বলেন, ফাল্গুনীর দুই হাত নেই এটা আমার কাছে কোনো সমস্যা মনে হয়নি। একটা মানুষের হাত নেই বলে কি তিনি বিয়ে করতে পারবে না, তার পরিবার হবে না, এমনটা হতে পারে না।

আমি ওকে স্বপ্ন দেখাই, আমি ওকে ভালোবাসা শেখাই এবং আমি ওকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে অবশেষে বিয়েও করেছি। আমরা সামনের দিনে যেন ভালো থাকতে পারি, এজন্য সবাই আমাদের জন্য আশীর্বাদ করবেন। সুব্রত মিত্রর ছোট বোন শ্রাবন্তী বলেন, অন্য বিয়েগুলো যেমন হয়, এখানেও তার কোন কমতি ছিলোনা। বরং অন্য বিয়ের চেয়ে এই বিয়ে ভালো ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019