২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩১ অপরাহ্ন, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, মঙ্গলবার, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
নলছিটিতে গৃহবধূর হত্যার অভিযোগে স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ গাইবান্ধায় মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের উদ্বোধন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সাথে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ বোরকা পরে বালিকা মাদরাসায় যুবক, ধরা পড়ে খেলেন গণপিটুনি ২৪ বছর কারাভোগ শেষে ভ্যান নিয়ে বাড়ি ফিরলেন ওলিউল কাতারের সঙ্গে ৫ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই পথিকের তৃষ্ণা নিবারণে নলছিটি ফ্রি পানির বুথ করছে বিডি ক্লিন দামুড়হুদায় স্থানীয় এমপির নিকট আত্নীয় হওয়ায় ঘোষনা দিয়ে উপজেলা আঃলীগের সাঃ সম্পাদকের মনোনয়ন প্রত্যাহার গোবিন্দগঞ্জে অটোবাইক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা কালে জনতার হাতে ২ জন আটক জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচী উপলক্ষে জনসচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত
স্ত্রীকে ২ কোটি টাকার ফ্ল্যাট উপহার দিয়ে দুদকের জালে ঝালকাঠির সাব-রেজিস্ট্রার।

স্ত্রীকে ২ কোটি টাকার ফ্ল্যাট উপহার দিয়ে দুদকের জালে ঝালকাঠির সাব-রেজিস্ট্রার।

ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: স্ত্রীকে ২ কোটি টাকার ফ্ল্যাট উপহার দিয়ে এবার দুদকের ঝালে ফাঁসলেন ঝালকাঠির সাব-রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান। তার স্ত্রী মোসাম্মৎ ইসরাত জাহান পেশায় গৃহিণী। কিন্তু কাগজে-কলমে তাকে ব্যবসায়ী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর পেছনে কারণও আছে। কিছু না করেই তিনি প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের তিনটি ফ্ল্যাট; নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও পটুয়াখালীতে ৪২ শতাংশ জমির মালিক হয়েছেন। ৪৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র এবং ব্যাংকে নগদ ৩৫ লাখ টাকা জমাও আছে তার নামে।

প্রশ্ন উঠেছে, ঘরের কাজের বিনিময়ে এত সম্পদের মালিক কীভাবে হলেন তিনি? এজন্য স্বামী মো. মজিবুর রহমানকে কৃতিত্ব দিতে হয়। পেশায় তিনি সাব-রেজিস্ট্রার। বর্তমান কর্মস্থল ঝালকাঠি সদর। স্ত্রীকে এতটাই ভালোবাসেন যে ঘুষের টাকায় অঢেল সম্পদের মালিক বানিয়েছেন তাকে!

স্ত্রী ইসরাতকে ঢাকার শ্যামপুর থানার জুরাইনের কেয়ারীনগর অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টে হাজার বর্গফুটের তিনটি ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছেন। যার বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। শুধু কী তাই! স্ত্রীর নামে ৪৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩৫ লাখ টাকা জমাও রেখেছেন তিনি। এছাড়া ইসরাত জাহানের নামে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও পটুয়াখালীতে ৪২ শতাংশ জমি কিনে দিয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রার স্বামী মজিবুর রহমান।

স্ত্রীর প্রতি এমন ভালোবাসার উদ্দেশ্য কী— বিষয়টি তদন্তে মাঠে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তে বেরিয়ে আসে ‘অবৈধ আয় বৈধ করতে’ স্ত্রীর প্রতি এমন ভালোবাসা প্রদর্শন।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার ভূঁইঘর মৌজায় ৩.৭০ শতাংশ জমি, মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে ১০ শতাংশ জমি এবং পটুয়াখালী জেলার বাউফলে ২৯ শতাংশ জমি রয়েছে ইসরাতের নামে। এছাড়া ঢাকার শ্যামপুর থানার জুরাইনের কেয়ারীনগর অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টে ১০১৬ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট (বিল্ডিং নং- ৭, ফ্ল্যাট নং- ই ৪), একই প্রজেক্টে ১০৬৯ বর্গফুটের আরও একটি ফ্ল্যাট (বিল্ডিং নং- ৭ , ফ্লাট নং- এ ৪) এবং ৫৮৩ বর্গফুটের পৃথক একটি ফ্ল্যাটের মালিক গৃহিণী ইসরাত। রয়েছে ৪৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র এবং ব্যাংকে নগদ জমা আছে ৩৫ লাখ টাকা। এমন তথ্য রয়েছে দুদকের হাতে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, অবৈধ সম্পদ বৈধ করতে স্ত্রীর নামে ব্যবসায়িক জাল কাগজপত্র তৈরি করেন স্বামী মো. মজিবুর রহমান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তার এমন অপকর্মের ভুক্তভোগী হয়েছেন স্ত্রী। এখন দুর্নীতি মামলার প্রধান আসামি স্ত্রী ইসরাত। সহযোগী হিসেবে আসামি করা হয়েছে সাব-রেজিস্ট্রার স্বামী মো. মজিবুর রহমানকে।

গত ১০ জুন অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মো. মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহানকে আসামি করে মামলা করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা উপপরিচালক মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলায় তাদের বিরুদ্ধে এক কোটি ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার ভূঁইঘর মৌজায় ৩.৭০ শতাংশ জমি, মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে ১০ শতাংশ জমি এবং পটুয়াখালী জেলার বাউফলে ২৯ শতাংশ জমি রয়েছে ইসরাতের নামে। এছাড়া ঢাকার শ্যামপুর
থানার জুরাইনের কেয়ারীনগর অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টে ১০১৬ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট (বিল্ডিং নং- ৭, ফ্ল্যাট নং- ই ৪), একই প্রজেক্টে ১০৬৯ বর্গফুটের আরও একটি ফ্ল্যাট (বিল্ডিং নং- ৭ , ফ্লাট নং- এ ৪) এবং ৫৮৩ বর্গফুটের পৃথক একটি ফ্ল্যাটের মালিক গৃহিণী ইসরাত। রয়েছে ৪৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র এবং ব্যাংকে নগদ জমা আছে ৩৫ লাখ টাকা। যদিও এজাহারে তিনটি ফ্ল্যাটের দালিলিক মূল্য আমলে নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকৃত বাজারমূল্য আসেনি মামলায়। ঝালকাঠি সদর সাব-রেজিস্ট্রার মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঝালকাঠিতে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগের পাহাড় রয়েছে। টাকা ছাড়া কোন দলিল রেজিষ্ট্রি হয়না তার দপ্তরে। টাকা দিয়ে অবৈধ কাগজও বৈধ করা তার পেশার অংশ মনে করেই অপকর্ম করতেন তিনি।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর সাব-রেজিস্ট্রার মজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকের একাধিক তলবি নোটিশেও হাজির হননি তিনি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019