২৮ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৩ অপরাহ্ন, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স
লক্ষ্মীপুরে রায়পুরে গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার বিথিকে অপহরণ ও লাশ গুমের মামলার সাত মাস পর তাকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রোববার ঢাকা সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে বিকালে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতে ওই গৃহবধূ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. ফরিদ উদ্দিন। তিনি জানান, ইয়াসমিন আক্তার বিথিকে অপহরণ ও হত্যা করে লাশ গুম করা হয়নি। সাতমাস পর তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। জবানবন্দিতে বিথি সেটি স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার চরপাতা গ্রামের গৃহবধূ বিথির স্বামী আবদুর রব ওমানে থাকেন। এ সুযোগে এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এসব বিষয়ে একাধিকবার সামাজিকভাবে দুই পরিবারের মধ্যে শালিস বৈঠকও হয়। এর জের ধরে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে ইয়াসমিন আক্তার বিথি কাউকে কিছু না বলে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পর দিন রায়পুর থানায় গৃহবধূর শ্বশুর আবদুল কাদের থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
ঘটনার একমাস পর গত বছরের ১৯ নভেম্বর গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার বিথির বাবা বাবুল মিয়া বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ( রায়পুর-১) আদালতে অপহরণ ও লাশ গুমের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় শ্বশুর আবদুল কাদের, শাশুড়ি খুকি বেগম, আবদুল কাদেরের মেয়ের জামাতা আক্তার হোসেন ও বিনু আক্তারসহ ৪ জনকে। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআই নোয়াখালীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
তবে অভিযোগ রয়েছে, শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে ইয়াসমিন আক্তার বিথির বাবা বাবুল মিয়া ও তার মা হাসিনা আক্তার মিলে এ অপহরণ ও লাশ গুমের নাটক সাজিয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
এদিকে আদালত প্রাঙ্গনে কান্নাজড়িত কন্ঠে আবদুর কাদের বলেন, কী অপরাধে বিথিকে অপহরণ ও লাশ গুমের মামলা দেওয়া হয়েছে। এ মামলার কারণে দীর্ঘ সাত মাস ঘরে ঘুমাতে পারিনি। অর্থ ও সম্মান সব গেল। বিথির বাবা বাবুল, মা হাসিনা ও চাচা সৈয়দ আহমদের ইন্ধনে এ মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে এই মামলা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।