১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী নগরীর শাহমুখদুম থানাধীন বড়বনগ্রাম (চকপাড়ায়), গত কয়েকদিন ধরে রাতের আঁধারে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে অবৈধভাবে পুকুর ভরাটের কার্যক্রম। আজ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পুকুরের এক-তৃতীয়াংশ ভরাটের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করে ফেলা হয়েছে।
২০০০ সালের জলাশয় সংরক্ষণ আইনের এর ২ (চ) ধারায় প্রাকৃতিক জলাশয়ের সংজ্ঞাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত মামলার রায় পাওয়ার এক বছরের মধ্যে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিবকে এ আদেশটি বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। গেজেট প্রকাশিত হলে, ব্যক্তি মালিকানার পুকুরও চাইলেই ভরাট করে ফেলা যাবে না।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের এ সংক্রান্ত রায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে রুল শুনানিতে অ্যাডেভোকেট মনজিল মোরসেদ আদালতকে বলেন, পরিবেশ আইন-১৯৯৫ ও জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ এর বিধান অনুসারে যে কোনও জলাশয় ভরাট নিষিদ্ধ এবং ব্যক্তিগত পুকুর হলেও তা জলাধারের সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তা ভরাট করা যাবে না।
কিন্তু অলৌকিক ক্ষমতায় এই বৈশ্বিক করোনা মহামারিতেও নির্দিধায় চালিয়ে যাচ্ছে পুকুর ভরাটের কাজ। এদিকে এলাকাবাসীর দাবী পুকুরটি ভরাট হলে ঐ এলাকার শত শত বাড়ি ঘর পানিতে নিমজ্জিত সহ নানা দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
পুকুরটি ভরাট বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ঐ এলাকার অসহায় ভুক্তভুগী সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রাজশাহী নগরীর শাহমুখদুম থানাধীন বড়বনগ্রাম (চকপাড়ায়) যে অবৈধ পুকুর ভরাট চলছে, এর সাথে জড়িত রয়েছে ঐ এলাকার জমির দালাল ও প্লট ব্যবসায়ী কয়েক জনের নাম। পুকুর ভরাটে জড়িতরা হলেন, মোস্তফা, আলম, শফিকুল ও সেলিম। এলাকাবাসী বলছেন, অলৌকিকভাবে তারা ধরা ছোয়ার বাহিরে আছেন।
যখন সরকারী অফিস আদালত বন্ধসহ সারাদেশে চলছে লকডাউন, ঠিক তখনই সুযোগ সন্ধানীরা এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে পুকুর ভরাট করছেন।
প্রায় দেড় থেকে দু বিঘার এই পুকুরটি দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত এলাকায় পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষায় অগ্রনী ভুমিকা রেখেছে। কিন্তু সম্প্রতি এই পুকুরটি ভরাটে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পুকুর খেকো এই ভুমি দস্যুরা।
রাতের আধাঁরেই ইতিমধ্যে পুকুরটি এক তৃতীয়াংশ ভরাট করা হয়েছে। তাই ঐ এলাকার ভুক্তভুগী জনগণ সহ নগরীর সচেতন মহলের দাবী দ্রুতই এই অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল বলেন, সিটি কর্পোরেশনের ভিতরে সরকারী পুকুর হলে আমাদের করণীয় ছিল। কিন্তু এটি পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজ।
পরে বোয়ালিয়া জোনের সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবুল হায়াত’কে, মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
এরপর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মাহামুদা আক্তার কে ফোন দিলে তিনিও ফোন রিসিভ করেনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে ১৭ নং ওয়ার্ড কমিশনার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত আছি, ঐ এলাকার কয়েকজন মিলে সিন্ডিকেট তৈরি করে গভীর রাতে বালু ফেলে অবৈধভাবে পুকুরটি ভরাট করছে।
এ বিষয়ে আরোও জানতে শাহ্মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত রয়েছি, আইনগতভাবে যেটা ব্যবস্থা নেয়ার আমি সেটা নিব।