২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, শুক্রবার, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তে দু’ দেশের পতাকা বৈঠক শেষে ভারতীয় নাগরিককে ফেরত কাঠালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ১ ডাকাত গ্রেফতার দামুড়হুদায় নাশকতার মামলায় জামায়াতের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সাবেক চেয়ারম্যান,সাবেক ভাইস ঝালকাঠি পৌরসভার দুই খেয়াঘাট ইজারায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাবুগঞ্জে পাট ক্ষেত দিয়ে হাটার প্রতিবাদ করায় কৃষককে কুপিয়ে জখম টুরিস্ট পুলিশের মতবিনিময় সভা গাজীপুর জেলার শালবন গ্রীন রিসোর্টে সাথে ঝালকাঠিতে জাতীয় দিবস পালন না করায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে শোকজ ঝালকাঠিতে ভূমি সেবার টেকসই মানোন্নয়নের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের সাথে টিআইবি-সনাকের অধিপরামর্শ সভা বরিশালে মসজিদে নামাজ চলাকালীন এসি বিস্ফারণ, কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সমাদৃত করেছেন-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ৩০ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক। আজকের ক্রাইম-নিউজ

ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ৩০ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক। আজকের ক্রাইম-নিউজ

আজকের ক্রাইম ডেক্স
ঝালকাঠিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ তদন্তে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. মঈনুল ইসলাম। গত ২ ফেব্রুয়ারি এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রকৃত শিক্ষক কনক সরকার কর্তৃক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে দাখিলকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত নেহালপুর রেজিস্টার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কনক সরকার নামে একজন নারী ১৯৮২ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।
এর আগে শ্যাম লাল মজুমদার ও আব্দুর রউফ তালুকদার নামে দুজন শিক্ষক নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৯৫ সালে স্কুলটি সরকারি রেজিস্টার স্কুল হিসেবে অনুমোদন পেলে উপজেলা প্রকৌশল অফিস থেকে স্কুলটি মেরামতের জন্য চার লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নানা কুট-কৌশলের আশ্রয় নিয়ে উক্ত কাজের ঠিকাদারি হাসিল করেন পিপলিতা গ্রামের সুলতান আহম্মেদ দুয়ারি। সুলতান দুয়ারি কাজ শুরু করে স্কুলটি বন্ধ করে দেন। দীর্ঘ তিন বছর শেষ হলেও তিনি আর স্কুলটি খুলে দেননি। ১৯৯৭ সালে এলাকাবাসী স্কুল খুলে দেয়ার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে আবেদন করেন।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ১৯৯৭ সালের ১৭ মে নেহালপুর রেজিস্টার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে উপজেলা শিক্ষা অফিস, ইউপি চেয়ারম্যান, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকাবাসীদের নিয়ে এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যাম লাল মজুমদার, সহকারী শিক্ষক আব্দুর রউফ তালুকদার ও কনক সরকার উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিদ্যালয়ে ঠিকাদার সুলতান দুয়ারি কর্তৃক লাগানো তালা ভেঙে স্কুল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রায় তিন বছর স্কুলটি বন্ধ থাকার সুযোগে সুলতান দুয়ারি বিদ্যালয়ের খাতাপত্র নিজের দখলে নিয়ে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে কনক সরকারের স্থলে নিজের সদ্য এসএসসি পাস করা স্ত্রী সুরাইয়া আক্তারকে ১৯৯০ সালে নিয়োগ দেখিয়ে কাগজপত্র তৈরি করেন। নিজের স্ত্রীর নিয়োগ নির্বিঘ্ন করার জন্য ১৯৯৮ সালে কনক সরকার নামের সহকারী শিক্ষককের নামে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমা দিয়ে এবং তার ওপর হামলা করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন।
১৯৯০ সালে ঝালকাঠি সদরের উপজেলা শিক্ষা অফিসার ছিলেন পারভীন জাহান। তার স্বাক্ষর জাল করে সুলতান দুয়ারি তার স্ত্রীর নিয়োগপত্র তৈরি করেন। এলাকায় সুলতান দুয়ারি অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তার এসব অপকর্মের কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। কেউ প্রতিবাদ করার প্রস্তুতি নিলেও তাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন সুলতান দুয়ারি। ২০১৩ সালে সরকার দেশের সব রেজিস্টার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করণের ঘোষণা দিলে নেহালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়কেও সরকারি করা হয়।
সরকারি করার পরে সুলতান দুয়ারি উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাধিক কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে তার স্ত্রীর সুরাইয়া আক্তারের সার্ভিস বুক খোলেন। কিছুদিন আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ইএফটির মাধ্যমে পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিলে সুরাইয়া আক্তারের সার্ভিস বুক ঘেটে এসব অনিয়ম ধরা পড়ে।
ঝালকাঠি উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সুরাইয়া আক্তার ১৯৮৮ সালে গালুয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। আর ১৯৯০ সালে তাকে নেহালপুর রেজিস্টার স্কুলে নিয়োগ দেখানো হয়। সুরাইয়ার বাবার বাড়ি রাজাপুর উপজেলার গালুয়ায় হলেও সার্ভিস বুকে তার বাবার গ্রামের বাড়িও স্বামীর গ্রামের বাড়িরর ঠিকানা পিপলিতা গ্রামে দেখানো হয় যা রহস্যজনক।
৩১/০১/১৯৯৯ সালে সুরাইয়া আক্তারের সার্ভিস বই খোলা হলেও সেই থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সার্ভিস বইয়ে মাহবুব নামে একই অফিস সহকারীর হাতের লেখা তথ্য রয়েছে। এ সার্ভিস বইয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সকলের স্বাক্ষরই জাল। এমনকি সার্ভিস বই থেকে নিয়োগপত্রের কপি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। জাল জালিয়াতির বিষয়টি ধরা না পড়ে। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. মঈনুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে যথা সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে জমা দেয়া হবে।
অভিযুক্ত সুরাইয়া আক্তারের বক্তব্য জানার জন্য তার ০১৭৩২৩৩০১৫৮ নম্বরে কল করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনেই লাইন কেটে দেন।
এদিকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু না করায় সুযোগ বুঝে নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতারণার মাধ্যমে নিয়োগ হাসিলকারী কথিত সহকারী শিক্ষক সুরাইয়া আক্তার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের কিছু লোকজনকে ম্যানেজ করে সার্ভিস বুক হালনাগাদ এবং ইএফটির কাজ শেষ করার তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019