২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৭ অপরাহ্ন, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
রাজাপুরে খাল দখল করে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মহোৎসব। আজকের ক্রাইম-নিউজ

রাজাপুরে খাল দখল করে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মহোৎসব। আজকের ক্রাইম-নিউজ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি :ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলায় সরকারী খাল দখল করে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মানের মহোৎসব। খাল দখলের এই মহোৎসবে জলাবদ্ধতার হুমকিতে রয়েছেন উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক বাসিন্দারা। উপজেলা শহরের জমির দাম আকাশ চুম্বি হওয়ায় ভুমিদস্যুরা হাকডাক দিয়ে দিন দিন খাল দখলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত খাল দখল করে হরদমে অট্টালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় একের পর এক পাকা স্থাপনা নির্মাণ ও খাল ভরাটের ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো হলেও প্রশাসনের রসহ্যজনক ভুমিকায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সব জেনে বুঝেও নীরব প্রশাসন।

সরজমিনে জানা যায়, লোকচক্ষু এড়ানোর জন্য খালের চর প্রথমে বেড়া দিয়ে আগলে রাখে তা ভরাট করে ভূমিদস্যুরা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে। বর্তমানে খালের চর বিক্রির হিড়িক চলছে। নগদ পয়সাওয়ালারা ভাল স্থান দেখে খালের চর ক্রয় করছেন। তার পরে খালের মধ্যে শুরু করে বিভিন্ন ভবন নির্মাণ। জোয়ারের সময় সামান্য পানি থাকলেও ভাটায় খালে পানি থাকে না। এ কারনে শহরের কোথাও আগুন লাগলেও পানির সংকট দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে পানির উৎস পাওয়া যায় না। ভূমি দস্যুদের দখলবাজি আর প্রয়োজনীয় ড্রেজিংয়ের অভাবে পলি পড়ে নাব্যতা হারাচ্ছে উপজেলার অর্ধশতাধিক খাল। সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা সহ নানা সমস্যা একইসাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। খাল দখলের কারনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খালের মধ্যে বর্জ্য জমে পয়নিস্কাশনে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টি হলেই উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকতে দেখা যায়। খাল ধ্বংস হওয়ার ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদিরা।

স্থানীয় প্রভাবশালীরা রাজনৈতিক পরিচয়ে খাল দখল করে অবৈধভাবে বাড়ি-ঘর, নানা কৌশলে পাকা স্থাপনা, খালের মধ্যে বাশ-খুটি ও পিলার পুতে দোকান-পাটসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। উপজেলার সদর আবাসিক এলাকা টিএন্ডটি রোড এর খাল, বাজারের খাল, জেলে বাড়ির খাল, হাসপাতাল খাল, বাইপাসের খাল, জেলে বাড়ি হইতে জেলখানার খাল অধিকাংশ দখল হয়েছে এছাড়াও দখলদারদের কবলে রয়েছে মোল্লারহাটের খাল, বারবাকপুর (আমিনবাড়ি) খাল, বড়ইয়া কাচারিবাড়ির খাল, লেবুবুনিয়ার খাল ও গালুয়া এলাকার পুলের হাট সংলগ্ন খালটি সহ উপজেলা সদরের খালগুলো ভরাট করে কাঁচা-পাকা ভবন নির্মাণ চলছেই। খাল দখলবাজদের থাবায় দিন দিন ছোট হয়ে আসছে অতীতের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা বানিজ্যের শহর খ্যাত রাজাপুর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি সরকারী খাল। প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ আর তদারকি না থাকায় প্রতিনিয়ত সংকুচিত হচ্ছে খাল, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। দখলের কারনে জোয়ারের পানি চলাচল করতে না পারার কারনে অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষাকালে উপজেলা বাসীকে পোহাতে হয় চরম দূর্ভোগ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, খালগুলো ক্রমাগত এভাবে ভরাট হয়ে যাওয়াতে জলাবদ্ধতার শিকার হতে যাচ্ছে এলাকাবাসী।

অনসন্ধানে আরো জানা যায়, খালগুলোর মাধ্যমে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্রমেই কমছে বোরো আবাদ সহ মৌসুমী সবজি উৎপাদন। ভূমি দস্যুদের কবলে পড়ে খাল দখল আর ভরাট হওয়ায় সেই জৌলুস এখন আর নেই। প্রথমে মাটি আর আবর্জনা ফেলে ভরাট করে নির্মাণ করছে ছোট ছোট টিনশেড। পরে সুযোগ বুঝে খালের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন আর দোকানপাট। দখল ব্যবসায় মেতে উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ভূমিদস্যু মহল। অবৈধ পন্থায় খাল দখল করে কেউ বানিয়েছেন পাকা বাড়ি, কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কেউ ব্যক্তিগত চলাচলের পথ তৈরী করেছেন বলে এমন অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয় সচোতন মহল দ্রুত এই সরকারি খাল গুলো উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ হাওলাদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, টিএনটি অফিস সংলগ্ন যে খালটি রয়েছে সেখানে একজন ব্যক্তি পাইলিং দিয়ে বাধ নির্মান করছেন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করি একই সাথে ঐ ব্যক্তিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে নির্মানাধীন বাদ ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019