২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, শুক্রবার, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তে দু’ দেশের পতাকা বৈঠক শেষে ভারতীয় নাগরিককে ফেরত কাঠালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ১ ডাকাত গ্রেফতার দামুড়হুদায় নাশকতার মামলায় জামায়াতের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সাবেক চেয়ারম্যান,সাবেক ভাইস ঝালকাঠি পৌরসভার দুই খেয়াঘাট ইজারায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাবুগঞ্জে পাট ক্ষেত দিয়ে হাটার প্রতিবাদ করায় কৃষককে কুপিয়ে জখম টুরিস্ট পুলিশের মতবিনিময় সভা গাজীপুর জেলার শালবন গ্রীন রিসোর্টে সাথে ঝালকাঠিতে জাতীয় দিবস পালন না করায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে শোকজ ঝালকাঠিতে ভূমি সেবার টেকসই মানোন্নয়নের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের সাথে টিআইবি-সনাকের অধিপরামর্শ সভা বরিশালে মসজিদে নামাজ চলাকালীন এসি বিস্ফারণ, কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সমাদৃত করেছেন-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
প্রায় ৫লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা মাত্র ৫জন চিকিৎসক

প্রায় ৫লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা মাত্র ৫জন চিকিৎসক

প্রায় ৫লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসাস্থল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক ও জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ২২জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও হাসপাতালটিতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৫জন চিকিৎসক। “দেশের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত ডাক্তারের সংখ্যা, জনসংখ্যার অনুপাতে একজন চিকিৎসকের বিপরীতে চিকিৎসাপ্রার্থী মানুষের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৭৯ জন” হলেও বাউফল হাসপাতালের ক্ষেত্রে এই অনুপাত একজন চিকিৎসকের বিপরীতে চিকিৎসাপ্রার্থী মানুষের সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ জন। আর এতে প্রকৃত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জনসাধারন। দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি থেকেও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। এমনই অভিযোগ বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের।
অবশ্য আর্থিকভাবে স্বচ্ছলরা চিকিৎসক না পেয়ে রোগী নিয়ে অনত্র চলে যেতে পাড়লেও গরিব-অসহায় রোগীরা চিকিৎসক না পেয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানাগেছে, প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য আসেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকে প্রায় শতাধিক রোগী। অধিক সংক্ষক রোগীদের সেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। চিকিৎসক সংকটের কারণে জরুরি বিভাগে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকল অফিসার (ঝঅঈগঙ) দিয়ে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৫ সালে ১১টি শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯৮২ সালে উন্নীত হয় ৩১শয্যায়। ২০১৩ সালে বর্তমান সরকার হাসপাতালটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে। ৫০শয্যা হাসপাতালের জনবল কাঠামো অনুমোদিত হয় ২০১৭ সালে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ৫০শয্যার একটি হাসপাতালে চিকিৎসক প্রয়োজন ২২ জন। কিন্তু ৫০শয্যা বিশিষ্ট বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আছেন মাত্র ৫জন চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০শয্যার হাসপাতাল হিসেবে বর্তমানে হাসপাতলে চিকিৎসকের ২২টি পদ রয়েছে। যার মধ্যে ১৭টি পদই শূন্য। কনসালটেন্ট ৪জনের বিপরীতে সবপদ শূন্য রয়েছে। এবং ১৭জন মেডিকেল অফিসারের বিপরীতে রয়েছে ৫জন। নার্সের (ব্রাদার) দুটি এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১৮টি পদ খালি রয়েছে।
রোগীর স্বজনরা বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ডাক্তার না পেয়ে রোগীদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। দীর্ঘদিন হাসপাতালে থেকেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ডাক্তার না পেয়ে অনেকেই তাদের রোগী শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অনত্র নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যাও কম। ডাক্তার সংকট থাকায় রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। চিকিৎসার মান উন্নয়নে হাসপাতালের সকল বিভাগে ডাক্তার নিয়োগের জন্য তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, “নোংরা পরিবেশ ও বেড সংকটের কারনে এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা প্রশ্নবিদ্ধ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একাধিক রোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নামে এটা সরকারী হাসপাতাল, টাকা ছাড়া এখানে কোন সেবা পওয়া যায়না। হাসপাতালের কর্মরত সেবিকাদের ব্যাবহার খুবই খারাপ। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন একবার ডাক্তার তাদের দেখতে আসেন। একটু কথা শুনে ওষুধ লিখে দিয়ে চলে যান। তাদের ধারনা দিনে একাধিক বার ওয়ার্ডগুলোতে ডাক্তার আসলে তাদের রোগের কথা শুনে পরামর্শ দিলে তারা তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠতেন। গরিব এবং অসহায় বলেই তারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।”
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ প্রশান্তকুমার সাহা এই প্রতিবেদকে বলেন, “জনবল সংকটের কারনে খুব সমস্যায় আছি। বিশেষ করে চিকিৎসক সংকটে সমস্যা বেশি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে ইনডোর-আউটডোরে রোগীর চাপ অনেক বেশি। মেডিকেল অফিসার না থাকায় রোগীর চাপ সামলাতে প্রতিদিন হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ ছাড়াও আউটসোসিংয়ের দুইজন পুরুষ, তিন জন নারী, একজন নিরাপত্তা প্রহরী, একজন অফিস সহায়ক, একজন আয়া ও একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করলেও মামলা জনিত কারণে তাদেরকে প্রত্যাহার করে নেয়ায় চরম দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত জনবল নিয়োগ দেয়া না হলে যেকোন সময় হাসপাতালটি অচল হয়ে যেতে পারে

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019