০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, রবিবার, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বহুল আলোচিত সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার।
‘ফুল ফুটেছে রাফির কবরে ফেনীর আদালত থাকবে সারা দেশের মানুষের নজরে’।
এমন স্ট্যাটাস এখন ফেসবুকের পাতায় পাতায়। নুসরাত জাহান রাফি হত্যার পর সব আসামি গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীসহ সচেতন মানুষদের স্লোগান ছিল ‘ আমার বোন কবরে খুনি কেন বাইরে’ এই প্রতিবাদী স্লোগানে উত্তেজিত ছিল দেশের সমগ্র রাজ পথ।
এখন দেশের মানুষ তাকিয়ে আছেন বিচারকের আদেশের দিকে। রায় ঘোষণা করবেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ।
ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় প্রতিক্ষার প্রহর গুণছে নুসরাতের পরিবার। সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অধ্যক্ষের অনুসারীদের দেয়া আগুনে পুড়ে জীবন দিতে হয়েছে নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী নুসরাতকে।
সারা দেশের মানুষ নুসরাত হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিল এই রায়ের দিনের জন্য।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর শুনানি ও পর্যবেক্ষণ শেষে ২৪ অক্টোবর রায়ের দিন ধার্য করেন বিচারক মামুনুর রশিদ। বিচার কাজ শুরুর ৬১ কার্যদিবসে মামলাটি চূড়ান্ত রায়ের কার্যক্রম শেষ করা হয়।
নুসরাতের পরিবার ও বাদী পক্ষের আইনজীবীরা আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আসামিদের নির্দোষ দাবি করে খালাস প্রত্যাশা করেছেন।
রায়ের দিনে নুসরাতের কবরে বাঁশের বেড়ায় ফুটন্ত সাদা ও লাল গোলাপের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে।
রায়ের দিনে ফেসবুকে কবরের পাশে ফুটন্ত গোলাপের ছবি নিয়ে মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া জ্ঞাপন করে কবরে নুসরাতের জন্য জান্নাত কামনা করেছেন বহু লোকে।
কেউ কেউ লেখেছেন মহান আল্লাহ ন্যায় বিচারক ও বিচার দিনের মালিক। সুতরাং নুসরাত ইহ ও পরকালে ন্যায় বিচার পাবেন।
প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন।
ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে এর আগে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে।
নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত।
এসময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।
১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।