০৪ মে ২০২৪, ০১:১৯ অপরাহ্ন, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স
রাজধানীর তুরাগে দুই বছরের শিশুকে ধর্ষণ মামলার আসামি জামিনে বের হয়ে এসে হুমকি দিচ্ছে ভুক্তভোগীর পরিবারকে। ভয়ে পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন নিম্নবিত্ত বাবা। মেডিকেল রিপোর্ট এবং আদালতে দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনেও মিলেছে ধর্ষণের আলামত। তবুও ছয়মাস পর আসামি কিভাবে জামিন পেল, সে বিস্ময় কাটছে না শিশুটির পরিবারের। হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে আসামিপক্ষের দাবি পুরো বিষয়টি মিথ্যা এবং সাজানো।
ছোট্ট শিশুর বয়স এখন ৭। ২০১৬ সালে ছিল দুবছর। সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে তুরাগে ৩৮ বছর বয়সী বাড়িওয়ালা লতিফুর রহমানের হাতে। এই বিভৎস ঘটনায় আসামি লতিফুর রহমান মায়ের কোল থেকে চকলেট দেয়ার কথা বলে নিয়ে যায় তাকে। পরিবারের অভিযোগ পরে নির্জন ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে শিশুটিকে। রাতের শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালেও নিতে দেয়নি আসামিরা। তিনদিন পর কৌশলে বাড়ি থেকে বের হয়ে শিশুকে হাসপাতাল নিয়ে যান ভুক্তভোগী বাবা।
ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করলে ছয় মাস কারাভোগ করার পর অনেকটা গোপনীয়তায় জামিন নিয়ে বের হয়ে বাদীপক্ষকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন অভিযুক্ত।
শিশুটির বাবা বলেন, মামলাটা উঠিয়ে নে। না হলে তোর সমস্যা হবে। তুই একটা ভাড়াটিয়া, আমরা হলাম বাড়িওয়ালা।
মেডিকেল রিপোর্ট এবং তুরাগ থানা থেকে দেয়া তদন্ত রিপোর্টেও ধর্ষণের আলামত মিলেছে। কিন্তু কেন বাদীপক্ষকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে? রাজধানীর তুরাগের শেখদির টেকে আসামি লতিফুর রহমানের বাড়িতে গেলে পাওয়া যায়নি তাকে। যদিও আসামির ভাইদের দাবি, সম্পত্তির লোভে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে তদের।
অভিযুক্তদের পরিবার জানান, ওর বয়স ১৬ থেকে ১৭ মাস। তার সাথে এটা হয়। তাকে পাঁচকাঠা জমি লিখে দিতাম।
ঘটনার পর মামলার দায়িত্ব নিয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি বলছেন, ধর্ষণ মামলার ধীরগতির কারণে অপরাধীরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে বলপ্রয়োগ করেন।
জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি সালমা আলী বলেন, অনেক সময় হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগী পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি দেয়।
বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত শিশু পরিস্থিতি রিপোর্ট বলছে, শুধু ২০২০ সালেই ৬১৬টি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, ২০১৯ সালে দেশে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার ১ হাজার ৪১৩ নারী ও শিশু।