১২ Jul ২০২৫, ০৪:৪১ অপরাহ্ন, ১৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে বলেন বিমানে বোমা আছে: র‌্যাব বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বৈরি আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবি বানারীপাড়ায় ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে স্কুল ছাত্রী অপহরণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় সমাবেশ’ বাস্তবায়ন করতে বাবুগঞ্জে জামায়াতের প্রস্তুতি সভা। বরিশালে ডিবি পুলিশের অভিযানে স্বর্ণ প্রতারকের তিন সদস্য আটক  বানারীপাড়ায় “জুলাই বিল্পব নতুন বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত জীবননগরে কিস্তির টাকার জন্য রাতে নারীকে তালাবদ্ধ পুলিশ এসে উদ্ধার সাংবাদিক আরিফ হোসেন’র ভাগ্নের সাফল্যে উচ্ছ্বাসিত তার পরিবার বানারীপাড়া বালিকা বিদ্যালয় এসএসির ফলাফলে এবারও শীর্ষে বাবুগঞ্জে এসএসসি-তে অকৃতকার্য, অতঃপর আত্মহনন
রেস্ট হাউজে ‘নারীসহ’ ওসি, আটকে ‘চাঁদা দাবি’ ছাত্রদল নেতার

রেস্ট হাউজে ‘নারীসহ’ ওসি, আটকে ‘চাঁদা দাবি’ ছাত্রদল নেতার

অনলাইন ডেস্ক
যশোরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রেস্ট হাউজে ‘ওসিসহ নারীকে আটকে চাঁদাবাজির’ অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে। এ- সংক্রান্ত সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস হওয়ার পর চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম এক নারীকে নিয়ে রেস্ট হাউজে অবস্থান করছিলেন। এসময় এক ছাত্রদল নেতা ৫-৬ জন সহযোগী নিয়ে সেখানে হানা দেন। ভাঙচুর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই লাখ টাকায় আপসরফা করে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন।

গত ৩০ জুন এ ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস হলে বিষয়টি শহরময় ছড়িয়ে পড়ে।

রেস্ট হাউজে ‘নারীসহ’ ওসি, আটকে ‘চাঁদা দাবি’ ছাত্রদল নেতারসিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে নেওয়া

সিসিটিভি ফুটেজ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৩০ জুন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে নিয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরোনো রেস্ট হাউজের কপোতাক্ষ কক্ষে ওঠেন পার্শ্ববর্তী জেলা ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। এর ঘণ্টাদুয়েক পরে রেস্ট হাউজে ৫-৬ জন সহযোগীদের নিয়ে হাজির হন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি। রেস্ট হাউজটির দরজা ধাক্কা দিতেই বাইরে বেরিয়ে আসেন ওসি সাইফুল ইসলাম। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে তিনি বাধা দেন। একপর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে ধস্তাধস্তি করে ওসিকে সঙ্গে নিয়েই কক্ষে প্রবেশ করেন তারা।

এরপর ওই নারীকে নিয়ে একান্তে সময় কাটানোর অভিযোগ তুলে ছাত্রদল নেতা সনি ওসির কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুরু করেন ভাঙচুর ও ভিডিও ধারণ। আনসার সদস্য ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মচারীকে মারধরও করেন তারা। একপর্যায়ে এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে দুই লাখ টাকায় রফাদফা করেন তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ হাজির হলে ছাত্রদল নেতা সনি ওসিসহ নারীকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে দেন।

ঘটনার দিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেটে ডিউটি করা দায়িত্বরত আনসার সদস্য রাজু জানান, ওইদিন সন্ধ্যায় একজন নারীকে সঙ্গে নিয়ে বাংলোতে প্রবেশ করেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। এর ঘণ্টাখানেক পরে এলাকার কিছু লোকজন বাংলোর ভেতরে প্রবেশের পর দরজা আটকে দেন এবং ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেননি। এরপর আরও অনেকে আসেন। থানা থেকে পুলিশের লোকজনও আসেন। তবে ভেতরে কী ঘটেছে তা তিনি জানেন না।

রেস্ট হাউজের ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী তরুন হোসেন জানান, কার্যত পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশনায় তিনি ওসি সাইফুল ইসলামকে কক্ষ বরাদ্দ দিয়েছিলেন। সঙ্গে আনা নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়েছিলেন। আর সাইফুল ইসলাম রেস্ট হাউজে অবস্থানকালে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পাউবো ও থানার লোকজন সেখানে যান।

পাউবো রেস্ট হাউজের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান বলেন, ‌ওসি সাইফুল স্ত্রী পরিচয়ে একজন নারীকে নিয়ে বাংলোয় ওঠেন। আমি নিজে দরজা খুলে দিই। কপোতাক্ষ (কক্ষ) গুছিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে যাই। এরপর কিছু সময় পর ওসি স্যার নাশতা আনতে শহরের একটি হোটেলে পাঠান। আর ওসি সাইফুল ইসলাম ওই নারীসহ কক্ষে ঘণ্টাখানেক অবস্থান করার পরে এলাকার কিছু লোকজন প্রবেশ করেন। রেস্ট হাউজের সামনে এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন। এর কিছুক্ষণ পর সাইফুল ইসলাম দরজা খুলে বের হেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর চক্রটি তাকে টেনেহিঁচড়ে ওই নারীসহ ঘরে ঢোকেন।’

কেয়ারটেকার আরও বলেন, ‘এসময় ওসি টাকা বের করে দেন চক্রের লোকজনের হাতে। টাকা লেনদেন দেখে ফেলায় এবং রেস্ট হাউজে অবস্থানের চেষ্টা করায় আমাকেও মারধর ও রেস্ট হাউস ভাঙচুর করা হয়। বাবুর্চি মিজানকেও মারধর করে।’

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানান, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওসিকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে সেখানে বহিরাগতরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটান। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখছে।

এদিকে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ছাত্রদল নেতার কাছে হেনস্তার শিকারের দৃশ্য দেখা গেলেও তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন ওসি সাইফুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, তার এক বন্ধু যশোরে একটা কাজে এসেছিলেন। তাকে নিয়ে রেস্ট হাউজে অবস্থানের সময় কয়েকজন ছাত্রনেতা আসেন। তারা পূর্বপরিচিত। তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি বলেন, ‘নারীসহ একজন রেস্ট হাউজে অবস্থান করছেন সংবাদ পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে কোনো নারীর অবস্থান পাইনি।’

সিসিটিভি ফুটেজে নারী, ওসিসহ তাকে দেখা গেছে—এমন তথ্য জানানো হলো ওই ছাত্রদল নেতা বলেন, বিষয়টি সত্য নয়। আর যেহেতু নারী পাওয়া যায়নি, তাই ওসির সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলে চলে আসি। ফলে আপসরফার বিষয়টির কোনো ভিত্তি নেই।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত বলেন, পাউবো রেস্ট হাউজে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। তবে পুলিশ সেখানে গিয়ে কাউকে পায়নি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019