১৫ মে ২০২৫, ০৩:৩০ অপরাহ্ন, ১৬ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ক্রাইম রিপোর্টার।।দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামসুদ্দোহা মুকুলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। ২০১২ সাল থেকে অদ্যাবধি একই স্থানে দায়িত্ব পালন করায় স্বাস্থ্য সেবার নামে দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক শোষণ, চিকিৎসা খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা করে চলেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।স্থানীয়রা জানান, ডা. মুকুল তার ব্যক্তিগত নিউ লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে গর্ভবতী নারীদের অহেতুক ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সিজার করাতে বাধ্য করেন। এসব সিজারের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করে নেন তিনি। অথচ সরকারি হাসপাতালেই সিজার করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সেখানে করানোর বিষয়ে নিরব থাকেন তিনি। এছাড়াও নিয়মিত অফিসে আসেন না তিনি। দুপুর ২টার পর বহির্বিভাগে রোগী দেখা শুরু করেন ডা. মুকুল। তখন হাসপাতালের বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তার নিজস্ব ক্লিনিকে ও ডায়াগনস্টিকে সেন্টারে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে চিকিৎসা বাণিজ্যও করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক ব্যক্তি বলেন, হাসপাতালে কর্মরত কিছু নার্স মিলে ডা. মুকুল একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নার্স হলেন মৌসুমি আক্তার, রুনা আক্তার ও হাবিবা। তারা পুরোনো ও ভুলভাল আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট দেখিয়ে রোগীদের বিভ্রান্ত করেন। রাত হলেই হাসপাতাল থেকে কৌশলে নিউ লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে রোগীদের রেফার্ড করেন।শুধু গর্ভবতী নারী নয়, হাসপাতালের অন্যান্য ভর্তি রোগীদেরকেও অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসার মাধ্যমে হয়রানি করা হয়। এই কর্মকান্ডে তার কিছু ঘনিষ্ঠ সহযোগী হৃদয় রায় ও মুস্তাফিজুর রহমান নামে দুজন ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। হাসাপাতালে তার ২৪ ঘন্টা থাকার কথা থাকলেও তিনি ৩ ঘন্টাও থাকে না হাসপাতালে।কিন্তু ক্লিনিকে তাকে সব সময়ই পাওয়া যায়।খানসামার আঙ্গারপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শরিফ উদ্দিন সরকার অভিযোগ করে বলেন,বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ডা. মুকুল ১৩ বছর থেকে একই কর্মস্থলে রয়েছেন। তাকে হাসপাতালে কম আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিছিল প্রোগ্রামেই বেশি দেখা যেত। একই কর্মস্থলে থেকে তিনি অনিয়ম-দূর্নীতি ও ক্লিনিক বানিজ্য করে বিপুল পরিমাণ সম্পদেরও মালিক হয়েছেন। তার বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে লেখালেখি হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন,আমি কেমন করে ডিউটি করি সেটা আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখে। আর যেগুলো অভিযোগ করা হয়েছে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আসিফ ফেরদৌস বলেন,আমি নতুন জয়েন করেছি কিছুদিন হলো। এ বিষয়ে আমি জানি না। কেউ যদি অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’