২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০১ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এর ৫০ বছর পূর্তীতে ঝালকাঠি জেলা জাসাসের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাংলাবান্ধায় ভারসাম্যহীন নারী গণধর্ষণেন শিকার চার ধর্ষক আটক বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা হত্যাকাণ্ড: ২১ জনের নামে মামলা! দর্শনায় দাড়ানো ট্রাকে আগুন ধরিয়েছে দুর্বৃত্তরা বিরামপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের বড় বোনের ইন্তেকাল
বরিশালের বানারীপাড়ায় মাদ্রাসা শিক্ষকের অবহেলায় ৬ তলা ভবনের ছাদ থেকে পরে এক কিশোরী শিক্ষার্থীর মৃত্যু

বরিশালের বানারীপাড়ায় মাদ্রাসা শিক্ষকের অবহেলায় ৬ তলা ভবনের ছাদ থেকে পরে এক কিশোরী শিক্ষার্থীর মৃত্যু

মোঃ নাঈম মোঘল বানারীপাড়া প্রতিনিধি : বরিশালের বানারী পাড়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের একটি ৬ তলা ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে মৌ (১৪) নামের এক কিশোরী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ওই ভবনের পঞ্চম তলার নুরে জান্নাত নূরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মৌ উজিরপুর থানার মোঃ শাহিন মিয়ার মেজ মেয়ে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে সে তার নানা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন মিয়ার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতো। গত শুক্রবার (২১ মার্চ ) বেলা ১টার দিকে মৌ ওই ভবনের ছাদ থেকে প্রথম পার্শ্ববর্তী রহিম মাস্টারের একতলা টিনের চালা ঘরের উপর ও সেখান থেকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধর করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। মৌ ওই সময় ভবনের রেলিং ঘেরা ছাদে কেন গিয়েছিল এবং সেখান থেকে কিভাবে পড়ে গেল এটা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি তবে ধারণা করা হচ্ছে সে উপরে কাপড়-চোপড় আনতে গিয়েছিলো। এই মৃত্যু নিয়ে এলাকায় রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক সাথীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এই মেয়ে অনেক চঞ্চল এবং বদমেজাজি ছিল সে প্রায় সময় রেলিং উপরে হাটতো তাকে জিজ্ঞেস করা হলো ও কখন ছাদে গিয়েছে আপনি দেখেননি তিনি উত্তরে বলেন আমি কিছু জানি না প্রশ্ন করা হলো চাবি পেল কোথায় কারণ ওই ছাদের গেট তো তালাবদ্ধ থাকে সাথী উত্তরে বলল চাবি ওয়ালের সাথে ঝুলানো ছিল। প্রশ্ন করা হলো আমরা জানতে পেরেছি আপনার দু বছরের বাচ্চার ছেলের কাঁথা আনতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেছে এবং ওর সাথে আরো দুই শিক্ষার্থী ছিল তিনি বলেন মৌ একাই ছাদে গিয়েছিল ওর সাথে কেউ ছিল না তিনি বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন তিনি বলেন আমি তাকে ছাদে পাঠাইনি অথচ এর আগে তিনি বললেন চাবি ওয়ালের সাথে ঝুলানো ছিল ওখান থেকে নিয়ে গেছেন প্রশ্ন হলো মৌ যে একা ছাদে গিয়েছে সেটা সে জানলো কিভাবে কারণ তিনি তো কিছু দেখেননি । এ ব্যাপারে ওই ভবনের অন্য ভাড়াটিয়া এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন ছয়তলার উপরে সাথীর পরিবারের শুকনো কাপড়চোপড় আনতে গিয়েই দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে পড়ে যায়। বিষয়টি এলাকার মানুষ এবং পুলিশ ও সাংবাদিকরা ছয়তলার উপরে ঘটনস্থানে পরিদর্শনে গেলে সেখানে একটি বাচ্চাদের কাঁথা পড়ে থাকতে দেখা যায় ধারণা করা হচ্ছে কাথাটি তুলতে গিয়ে ওখান থেকে মৌ পরে যায়। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যক্তি বলেন ওই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিভিন্ন কাজ করানো হতো এবং দু একজন মহিলা শিক্ষকদের স্বামী মাঝে মধ্যে ওখানে এসে রাত যাপন করতেন যা ওই বাড়ির সিসি ক্যামেরা ফুটেজ চেক করলে স্পষ্ট ভাবে পাওয়া যাবে। এদিকে বিষয়টি সুশীল সমাজে জানাজানি হলে তাদের মনে একটাই প্রশ্ন জাগে মেয়েরাঐ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী কিন্তু তাদেরকে দিয়ে পারিবারিক কাজ কেন করানো হয়। অতটুকু বাচ্চাদের কেনই বা ছাদে উঠতে দেওয়া হল আর চাবি তো শিক্ষকদের কাছে থাকে এবং ওই বাড়ির ছাদের গেট তালাবদ্ধ থাকে তাহলে ওই কিশোরের মৃত্যুতে কি তাদের বিন্দুমাত্রা অবহেলা ছিল না। সুশীল সমাজ মেনেই নিল দুর্ঘটনায় মৌ এর মৃত্যু হয়েছে তবে কি মাদ্রাসা শিক্ষকরা অবহেলার দায় এড়াতে পারবেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর পরিবারের সাথে জানতে চাইলে তারা বলেন আমাদের এই বিষয়ে কোন অভিযোগ নেই আমরা যা হারিয়েছি তার কোনদিন ফেরত যোগ্য নয়। এ ব্যাপারে বাড়ির কে আর টেকার পূর্ণিমার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বাড়ির ছাদ কেচিগেট দ্বারা বেষ্টিত এবং এটি তালাবদ্ধ থাকে পাঁচতলা ভবনের মাদ্রাসার দায়িত্বে থাকা সাথী আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে গেছিল তারা উপরে জামাকাপড় শুকা দিত দুর্ঘটনা ঘটার পরে তারা আমার কাছে চাবিটি ফেরত দিয়ে যায়। এদিকে অপর একটি সূত্র থেকে জানা যায় মৌ এর মৃত্যুতে তার পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় জেলা প্রশাসকের অনুমতি ক্রমে শনিবার সকাল দশটায় জানাজা সম্পন্ন করে তার বাবার উজিরপুরের নিজ বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এই ঘটনা থেকে সভ্য সমাজবাদীরা একটা শিক্ষা নিল দুর্ঘটনার পরে আমরা সচেতন হই আগে কেন নয় যদি একটা বিচার করা যেত তাহলে হয়তো বা কিছুটা সচেতন হই।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019