১৫ Jul ২০২৫, ০২:০৩ অপরাহ্ন, ১৯শে মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি, মঙ্গলবার, ৩১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ
উপজেলায় বিভিন্ন প্রকল্পের নামে সাবেক সংসদ সদস্যের দেয়া বিশেষ বরাদ্দের প্রায় অর্ধ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
জানাযায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে তেঁতুলিয়া উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা), গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর), কাবিটার জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে নগদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। এসব প্রকল্পের ভুয়া কমিটি ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে অফিসকে ম্যানেজ করে বরাদ্দের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
২৩-২৪ অর্থ বছরে বিভিন্ন সময় সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক খাত সহ সরকারের দেয়া বিশেষ বরাদ্দ থেকে প্রায় ২ কোটি ২১ লক্ষ ৩৯ হাজার ১৬৭ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া প্রায় ১২০ মে.টন চাল ও ১২০ মে.টন গমও বরাদ্দ দেয়া হয়। উক্ত বরাদ্দ গুলো সঠিক ভাবে কাজ না করে ভুয়া কমিটি ভুয়া ভাউচারে প্রকল্পের নাম ব্যবহার করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ সমূদয় অর্থ লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগের কতিপয় ব্যক্তি। যে সকল প্রকল্পের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় সেগুলো নামমাত্র লোক দেখানো কাজ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎএর অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
এদিকে সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য বিশেষ বরাদ্দ নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক খাতে কাবিটা ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার টিআর ১৭ লক্ষ ৪৪ হাজার ও বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচীর ১৫ লক্ষ মোট ৪২ লক্ষ ৯৪ লক্ষ টাকা এবং ১৭.৪শ মে.টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এসব বরাদ্দ বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে ভাগ করা হয়।
কাবিটা’র ১৫ টি প্রকল্পের বিপরীতে প্রতিটিতে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। কিন্তু অদ্যবদি কোন প্রকল্পই দৃশ্যমান নয়। এসব প্রকল্পের মধ্যে ছিল শালবাহান বাজার বাটুল মুচির বাড়ি হতে রমজান আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, রওশনপুর উত্তর জামে মসজিদ হত পুর্ব দিকে ঈদগাহ মাঠ রাস্তা সংস্কার, ঘাটিয়পাড়া হতে ধাইজান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, শান্তিনগর পাকা রাস্তা হতে পুর্বদিকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, ভুতিপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট, খাটিয়াগছ পাকা রাস্তা হতে পশ্চিমে ঘন্টুমনি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার সহ পুরো প্রকল্প গুলোই লুটপাট করেছে দলীয় নেতাকর্মীরা ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
টিআর ২৪ টি প্রকল্পের মধ্যে ভুঁইফোড় সংগঠনের নাম ব্যবহার করে খাটিয়াগছ করতোয়া আদর্শ ক্লাবের ঘর সংস্কার ১ লক্ষ ৬০ হাজার, বগুলাহাটি পাবলিক লাইব্রেরি সংস্কার বাবদ ৮০ হাজার টাকা সহ প্রতিটি প্রকল্পই হরিলুট করেছে।
এছাড়া বৃক্ষ কর্মসূচীর আওতায় নামমাত্র গাছ লাগিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করা হয়েছে। যে সকল ইউনিয়নে বা উপজেলার বিভিন্ন পর্যটক কেন্দ্র গুলোতে বৃক্ষ রোপণের বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল তাতে লোক দেখানো হাতে গোনা কয়েকটি গাছ লাগিয়ে সমূদয় টাকা আত্মসাৎ করেছে সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায় এসব বরাদ্দ থেকে ৩০% অর্থ সংসদ সদস্যর নামে কর্তন করে রাখেন এবং সেই টাকা দিয়ে ঈদ বোনাস হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে পাঞ্জাবি পায়জামা বিতরণ করেছেন।
শুধু মাত্র উপজেলা পরিষদওয়ারী ৭০ টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল প্রায় ১ কোটি ২৭ লক্ষ ৭ হাজার টাকা। যা ভুয়া বিল ভাউচার অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন’র সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন প্রকার কথা রাজি হননি। উপজেলায় টিআর কাবিখা কাবিটার বরাদ্দ কত তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার কাছে কোন তথ্য নাই সব ওয়েব সাইটে দেয়া আছে লাগলে ওখান থেকে নিতে পাবেন। তবে ৩০% অর্থ কর্তনের বিষয়টি কৌশলে স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি’র কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দেননি।