০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, রবিবার, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স
সেতু পেরিয়ে যাওয়ার মতো নেই জনবসতি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এমনকি নেই কাঁচা-পাকা কোনো সড়কও। এরপরও একটি মৃতপ্রায় ছড়ার ওপর সাড়ে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। বান্দরবান সদর উপজেলার ক্যমলংপাড়ার রাস্তার মাথা এলাকা থেকে কয়েকশ গজ দূরে সেতুটি নির্মাণ করছে পার্বত্য জেলা পরিষদ। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে। তারা বলছেন, সরকারি টাকার অপচয় করছে জেলা পরিষদ।
জানা গেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বান্দরবান সদর উপজেলার ক্যামলং এলাকায় জেলা পরিষদের ক্রয়কৃত জমির ওপর প্রায় সাড়ে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ মিটার দৈর্ঘ্যের ফুট ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে সেতুটি নির্মাণ করে পার্বত্য জেলা পরিষদ। পতিত জমি আর মৃতপ্রায় ছড়ার মাঝখানে নির্মিত এই গার্ডার সেতুর দুই প্রান্তেই নেই কোনো সংযোগ সড়ক। শুধু তাই নয়, আশপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেও কোনো জনবসতি নেই। এরই মধ্যে সেতুটির ৯০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। তবে দুই পাশে যাতায়াতের কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় এবং অপর পাশে কোনো গ্রাম না থাকায় সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না।
ক্যমলংপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পাড়াসংলগ্ন জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু গত বছরের বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পাড়ার বাসিন্দাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির পাশে নতুন সেতু নির্মাণ না করে জনমানবহীন স্থানে সেতু নির্মাণ করে সরকারি টাকার অপচয় করছে জেলা পরিষদ।
ক্যমলংপাড়ার বাসিন্দা থুইসিং প্রু বলেন, গতবছর থেকে দেখছি, এখানে একটি ছোট খালের ওপর ব্রিজটি তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমে আমরাও বুঝতে পারিনি কেন এই ব্রিজ হচ্ছে। কারণ, এদিকে তো কোনো বাড়িঘর নেই। এদিকে শুধু একটি আম বাগান আছে।
তিনি আরো বলেন, সেতু হয়ে গেছে, কিন্তু সেতু দিয়ে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই।
একই এলাকার বাসিন্দা মংহ্লা উ মারমা বলেন, ব্রিজের ওপারে জেলা পরিষদের একটি বাগান ও একটি লেক আছে। সেখানে যাওয়ার জন্যই মূলত সেতুটি বানানো হয়েছে। যদিও এটি কারও কোনো উপকারে আসবে না।
ক্যমলংপাড়ার জুমচাষি উনুমং মারমা বলেন, আমাদের ক্যামলং সেতু ভেঙে গেছে গত বন্যায়। সেখানে একটি সেতু প্রয়োজন, সবার যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে সেতু হচ্ছে না। আর এখানে আম বাগানে যাওয়ার জন্য একটি সেতু পড়ে আছে।
পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান বলেন,সেতুর ওপারে একটি পর্যটন কেন্দ্রের পার্ক ও রিসোর্ট নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা করে প্রাথমিকভাবে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। আগামীতে এখানে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে।
পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, জেলা পরিষদের অতিরিক্ত অর্থ না থাকার কারণে একসঙ্গে সব কাজ করার সুযোগ নেই। তাই কাজটি ধাপে ধাপে করা হচ্ছে। প্রথমে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এরপর সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হবে।