০৩ মে ২০২৪, ০১:০২ পূর্বাহ্ন, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শুক্রবার, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
দামুড়হুদায় কনের বাড়িতে ভ্রাম্যমান আদালত, খাবার পেল এতিমখানা গৌরনদীর ধানডোবা গ্রামে স্ত্রীর অধিকার পেতে তিন মাসের আন্তঃসত্ত্বা নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন ঢাকা রিজিয়ন টুরিস্ট পুলিশ ও নেক্সট টুর অপারেটর এর মধ্যে আলোচনা ও মতবিনিময় স্মার্ট বাবুগঞ্জ গড়ার প্রত্যয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী স্বপনের গনসংযোগ আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে : এসএম জাকির হোসেন কালকিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন ঝালকাঠিতে আর ডি এফ’র কিশোরী কর্মী সহ দুই কিশোরীর বাল্য বিয়ে পন্ড ও আর্থিক জরিমানা দামুড়হুদায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাগণের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত আগৈলঝাড়ায় নির্বাচনী ভোটযুদ্ধে চেয়ারম্যান পদে ২জন সহ প্রার্থী হয়েছে ১৩ জন বাকেরগঞ্জের দাড়িয়ালে সড়ক নির্মানে দূর্নীতি ও অনিয়ম
সুন্দরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা নিয়মিত না আসায় আসে না কোনো শিক্ষার্থীও

সুন্দরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা নিয়মিত না আসায় আসে না কোনো শিক্ষার্থীও

শহীদুল ইসলাম শহীদ,(গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
চলতি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আসেননি কেউ। নেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর। আর নিয়মিত শিক্ষক না আসায় আসে না কোনো শিক্ষার্থীও। যেদিন আসেন, সে দিনই শিক্ষকরা হাজিরা খাতায় মেরে দেন সব স্বাক্ষর। মিছেমিছি করা হয় বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীদের হাজিরাও। এমন ঘটনাই ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের চর কাপাসিয়া নামক একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এতে ওই অঞ্চলে বাড়ছে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ও বাল্যবিয়ের হার।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়টিতে আকস্মিক পরিদর্শনে এসেছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। সঠিকভাবে বিদ্যালয়টি চলমান না থাকায় সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয় বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হুজ্জাজুল ইসলামকে। বিদ্যালয়টিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত এবং পাঠদান অব্যাহত রাখতে তাদের বিদ্যালয়ে আনয়নের জন্য সরকারি অর্থায়নে প্রায় লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করে দেওয়া হয় একটি বড় নৌকাও। কিন্তু তবুও যেন টনক নড়েনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও কাপাসিয়া ক্লাস্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নৌকায় নদী পাড়ি দিয়ে স্কুলে পৌঁছলেন দপ্তরি কাম প্রহরী মো. তাজুল ইসলাম। পরে টাঙালেন জাতীয় পতাকা। উপস্থিত ছিলেন না কোনো শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।

শিক্ষক হাজিরা খাতা ঘেটে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সহকারী শিক্ষক নুরুল হুদা, যিনি বর্তমানে অস্থায়ীভাবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন এবং সহকারী শিক্ষক আবু তাহের কোনো ছুটি নেননি। কিন্তু চলতি মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত কোনো স্বাক্ষরই করেননি শিক্ষক নুরুল হুদা। এদিকে, মাসের প্রথম দুই দিন শিক্ষক আবু তাহেরের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর পাওয়া গেলেও বাকী দিনগুলোতে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। তাহলে শিক্ষকরা পক্ষকাল কিংবা মাস শেষে একদিনে সব স্বাক্ষর করেন কি না এমন প্রশ্ন রাখেন শিক্ষানুরাগীরা।

জানা যায়, বিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা
৪৫ জন। তার মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে ৬ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১০ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১০ জন ও পঞ্চম শ্রেণিতে রয়েছে ৭ জন। চলতি মাসের একই সময়ে শিক্ষার্থীদেরও কোনো হাজিরা করা হয়নি। যে কটি বেঞ্চ রয়েছে শিক্ষার্থীদের বসার জন্য তাও ছিল এলোমেলো। অপরিচ্ছন্ন ছিল না পাঠদানের কক্ষগুলো। দেখেই অনুমান করা যায় পাঠদান বন্ধ ছিল বেশকিছু দিন ধরে। অগোছালো দেখা যায় অফিস কক্ষটিও।

স্থানীয়রা বলছেন, নৌকা দেওয়ার পরও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির বিষয়টি দুঃখজনক। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা যদি সঠিকভাবে মনিটরিং করতেন তাহলে হয়তো বিদ্যালয়টির এমন দুর্দশা দেখতে হতো বলেও মত দেন তারা।

গণমাধ্যম কর্মীদের দেখতে পেয়ে শিক্ষকদের ফোন দিতে দেখা গেল দপ্তরি কাম প্রহরী মো. তাজুল ইসলামকে। তিনি বলেন, সপ্তাহে দুই তিন দিন আসেন শিক্ষকরা।

ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষক নুরুল হুদা। চলতি মাসে একদিনও আসেননি স্কুলে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার চোখ অপারেশন হয়েছে দুদিন হলো। চিকিৎসক আমাকে নড়াচড়া করতে বারণ করেছেন। আর শিক্ষক আবু তাহেরের বিষয়ে কোনো দায়িত্ব নিতে চাইলেন না তিনি।

১৬ দিন ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির বিষয়ে কাপাসিয়া ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রিপন আল জানান, বিগত কয়েকদিন ধরে যদি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কোনো এ্যাটেনডেঞ্চ না থাকে, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা অপরাধ করেছে। এটি গ্রহণযোগ্য নয়, কাম্যও নয়।

এ বিষয়ে রিপোর্ট করতে বলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আমি গতকাল বিষয়টি জেনেছি। আজ সেই বিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট পেলে বিদ্যালয়টির মানোন্নয়নে ব্যবস্থা নেব ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019