২১ মে ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, ১২ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের স্টিকার লাগানো গাড়িতে মিলল ৭ লাখ পিস ইয়াবা মোটরসাইকেলের কাগজ দেখতে চাওয়ায় দুই পুলিশকে পেটালেন যুবক আগৈলঝাড়ার বাকাল ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত পর্যটকদের নিরাপদ আবাসন নিশ্চিতে টুরিস্ট পুলিশ সুপারের হোটেল ফার্স অ্যান্ড রিসোর্ট পরিদর্শন বিএনপি নেতার গেটে সাইনবোর্ড ‘ভোট চাহিয়া লজ্জা দেবেন না প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, পুলিশ সদস্য আটক ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে: প্রধানমন্ত্রী ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, প্রেসিডেন্ট রাইসির লাশ উদ্ধার বানারীপাড়ায় শিক্ষাই শক্তি সংগঠনের উদ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা সুন্দরগঞ্জে ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ভাটা বন্ধের নির্দেশ
দান সম্পদে প্রাচুর্য আনে, বিপদ দূর করে

দান সম্পদে প্রাচুর্য আনে, বিপদ দূর করে

মুফতি আতিকুর রহমান

মানবীয় গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম উৎকৃষ্ট গুণ হলো দানশীলতা। দানশীলতার গুণ বান্দার জন্য বয়ে আনে অফুরান কল্যাণ, যা দ্বারা বান্দা দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতেই ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়। দান-সদকার দ্বারা দুনিয়ায় সম্পদের প্রাচুর্য বাড়ে, সাথে সাথে ব্যাপক মানসিক প্রশান্তিও মেলে। আর পরকালের জন্য সঞ্চিত হয় অগণিত সওয়াব।

রাসুল (সা.) দানশীলতায় ছিলেন উদারমনা। দানের ক্ষেত্রে সর্বস্ব উজার করে দিতেন। পরবর্তী বেলার আহারসামগ্রী আছে কি নেই, কখনো তা চিন্তাও করতেন না। আর রমজান মাস এলে রাসুল (সা.) এর দানশীলতা আরো অধিক বেড়ে যেত। কেননা রমজানে দানের ফজিলত ও সওয়াব অন্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি। রমজানে প্রতিটি নেক কাজের বিনিময়ে সত্তর গুণ বেশি সওয়াব দেয়া হয়।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা। রমজান মাসে তার দানশীলতা অন্য সময় থেকে অধিকতর বৃদ্ধি পেত, যখন জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর জিবরাইল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং তারা পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। রাসুল (সা.) তখন কল্যাণবাহী বায়ুর চেয়েও অধিক দানশীল ছিলেন। সহিহ বুখারি ৬

আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে কিছু মানুষকে সম্পদশালী করেছেন। আর কিছু মানুষকে করেছেন দরিদ্র ও অসহায়। এর উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহতায়ালা দেখতে চান, ধনী শ্রেণি অসহায় দরিদ্রের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়ায় কি না।

রমজান মাস এলে দেখা যায়, হতদরিদ্র ও দিনমজুর শ্রেণি এক ধরনের দুর্দশায় নিপতিত হয়। কেননা রোজা রেখে হাড়ভাঙা খাটুনি ও পরিশ্রম করার মত যথেষ্ট শক্তি অনেকের শরীরে থাকে না।

ফলো করুন-
রমজান রহমতের মাস। এই মাসে আল্লাহতায়ালা বান্দার ওপর রহমত বর্ষণ করেন। রহমতের এই মাসে যারা নিজ অধীনস্তদের প্রতি দয়াশীল হবে, অধীনস্তদের কাজকে সহজ করবে আল্লাহতায়ালাও তাদেরকে আরো অধিক রহমতের বারিধারায় সিক্ত করবেন। তাই যেসব দিনমজুরের যথেষ্ট পরিশ্রমের সাধ্য নেই, মালিকশ্রেণির উচিৎ তাদের কাজের সময় কমিয়ে পূর্ণ মজুরি প্রদান করা। এটাও দানের অন্তর্ভুক্ত।

আমাদের আশপাশে এমন সব বিপন্ন, আর্তপীড়িত ও বিপর্যস্ত ছিন্নমূল মানুষ আছে যাদের ন্যূনতম শ্রমের সাধ্য নেই। এছাড়া স্টেশনের প্লাটফরমে কিংবা ফুটপাতে মাথার ওপর খোলা আকাশ নিয়ে অনেক অসহায় পড়ে থাকে। তাদের অসহায়ত্ব আকাশের পরিধির চেয়ে কম নয়। রহমতের এই মাসে তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানো সকলের দায়িত্ব। তারা যেন সাহরি ও ইফতারের সময় যথাযথ খাবার পরিতৃপ্তির সঙ্গে খেতে পারে সকলে মিলে সেই ব্যবস্থা করা উচিৎ। এই ব্যবস্থাপনাও দানের অন্তর্ভুক্ত হবে।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে পেট ভরে খাইয়ে পরিতৃপ্ত করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে আমার হাওজে কাওসার থেকে এভাবে পানি খাইয়ে পরিতৃপ্ত করবেন, যার পর সে জান্নাতে প্রবেশ করার পূর্বে আর তৃষ্ণার্ত হবে না। এটা এমন এক মাস যার প্রথমাংশে রহমত, মধ্যাংশে মাগফিরাত এবং শেষাংশে জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত। যে ব্যক্তি এ মাসে তার অধীনস্তদের ভার-বোঝা সহজ করে দেবে, আল্লাহতায়ালা তাকে ক্ষমা করবেন। তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেবেন। মিশকাত ১৯৬৫

অসহায়কে সাহায্য করা, আর্ত-পীড়িতের সেবা করা, হতদরিদ্রকে স্বাবলম্বী করা— এগুলো সব দানের অন্তর্ভুক্ত। দান করলে মানুষ ফতুর হয় না। দানে যা বের হয় তার চেয়ে শতগুণ বেশি প্রবেশ করে। সময়ের ব্যবধান কেবল। আর প্রয়োজন শুধু বিশ্বাস।

দান সম্পদে প্রাচুর্য আনে। এই বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাদের উপমা একটি বীজের মত। যা সাতটি শীষ উৎপাদন করে। প্রত্যেক শীষে থাকে একশো শস্যদানা। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছে বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ সর্বব্যাপী প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। সুরা বাকারা ২৬১

জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী। এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে যথাসম্ভব নেক ও পুণ্যের কাজ করে আখেরাতের জন্য কিছু পাথেয় সঞ্চয় করে যাওয়া উচিৎ। রমজানে দানশীলতায় অধিক সওয়াব। মহিমান্বিত এই মাসে কারো দানশীলতায় যদি কোনো অসহায় হতদরিদ্রের মুখে হাসি ফোঁটে, তবে এই হাসি জান্নাতে যাওয়ার পাথেয় হবে।

লেখক: ধর্মীয় নিবন্ধকার

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019