২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩২ পূর্বাহ্ন, ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেঃ রেকর্ড, বানারীপাড়ায় বৃষ্টি কামনায় ইস্তিসকার নামাজ আদায় দর্শনায় তৃষ্ণার্থ পথচারীদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ,স্যালাইন এবং শরবত পানি বিতরণ ঘোড়াঘাটে সড়ক দুর্ঘটনায় চালক- হেলপার নিহত ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রতীক পেয়ে ভোটের মাঠে প্রার্থীরা সুন্দরগঞ্জে যুবলীগ নেতা আজমের উপর দুর্বৃত্তদের হামলা চুয়াডাঙ্গায় রাতে বাবাকে নিতে আসতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলের মুত্যু, দু’ বন্ধু মারাত্নক জখম বানারীপাড়ায় বসতঘরে লাগা আগুনে শতবর্ষী বৃদ্ধার করুন মৃত্যু ! বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ঝালকাঠিতে মৎস্য কর্মকর্তার ৩ ঘন্টার অভিযানে ১ লক্ষ টাকার অবৈধ জাল জব্দ
বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে ফ্রি ফায়ার পাবজি গেম।

বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে ফ্রি ফায়ার পাবজি গেম।

আজকের ক্রাইম ডেক্স:: ফ্রি ফায়ার ও পাবজির মতো জনপ্রিয় দুই গেম বন্ধ হচ্ছে বাংলাদেশে। এর আগে পাবজি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হলেও পরে আবার চালু করা হয়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সুপারিশ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও আলোচনা হয়। সেখানে ওই দুই গেমের আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়। সম্প্রতি ফ্রি ফায়ার ও পাবজি নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ওই দুটি গেম কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করেছে।

হঠাৎ করে বন্ধ করতে গেলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে। তাই ধীরে সুস্থে বিকল্প পদ্ধতিতে গেম দুটি বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে। যারা এ ধরনের গেমে আসক্ত তারা ভিপিএনসহ নানা বিকল্প উপায়ে গেমটি খেলতে পারবেন। আমরা সেসবও বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করবো। গেরিনা ফ্রি ফায়ার (ফ্রি ফায়ার ব্যাটলগ্রাউন্ডস বা ফ্রি ফায়ার নামেও পরিচিত) একটি ব্যাটল রয়্যাল গেম। ২০১৯ সালে এটি বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক ডাউনলোড করা মোবাইল গেম হয়ে উঠেছে। জনপ্রিয়তার কারণে, গেমটি ২০১৯ সালে গুগল প্লে স্টোর দ্বারা ‘সেরা জনপ্রিয় ভোট গেম’ এর জন্য পুরস্কার পেয়েছিল।

২০২০ সালের মে পর্যন্ত ফ্রি ফায়ার বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৮০ মিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারীদের সঙ্গে একটি রেকর্ড তৈরি করে। গেরিনা বর্তমানে ফ্রি ফায়ারের উন্নত সংস্করণে কাজ করছেন যা ফ্রি ফায়ার ম্যাক্স নামে পরিচিত। গেমটি অন্য খেলোয়াড়কে হত্যা করার জন্য অস্ত্র এবং সরঞ্জামের সন্ধানে একটি দ্বীপে প্যারাসুট থেকে পড়ে আসা ৫০ জন ও তার অধিক খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে বন্দুক দিয়ে মসজিদে মুসলমানদের হত্যা এবং সেই দৃশ্য ফেসবুক লাইভের বিষয়টি অনেকেই পাবজির সঙ্গে তুলনা করেন। সম্প্রতি নেপালে পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। অনলাইন গেম ‘প্লেয়ার আননোনস ব্যাটলগ্রাউন্ডস’ (পাবজি)।

সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব ও শিক্ষার্থী- কিশোর-কিশোরীদের সহিংস করে তুলছে এমন আশঙ্কা থেকেই গেমটি বন্ধ করা উচিত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। পাবজি গেমটির মোবাইল ভার্সনে একসঙ্গে অনেকজন মিলে অবতরণ হন এক যুদ্ধক্ষেত্রে। যতক্ষণ না পর্যন্ত একজন সিঙ্গেল সেনা বেঁচে থাকছেন যুদ্ধে ততক্ষণ খেলে যেতে হয়। ২০১৮ সালে অ্যাঙ্গরি বার্ড, টেম্পল রান, ক্যান্ডি ক্রাশের মতো গেমগুলোকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন গেমের তালিকায় শীর্ষে জায়গা করে নেয় পাবজি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে দেশে জনপ্রিয় তরুণ প্রজন্মের মাঝে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি। দক্ষিণ কোরিয়ার গেম ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ব্লু হোয়েল এর অনলাইন ভিডিও ২০১৭ সালে চালু হয়। এরপর থেকে এই গেমটি দ্রুত বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অন্যদিকে চায়না প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালে তৈরি করা যুদ্ধ গেম ফ্রি ফায়ার একইভাবে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু এই গেম দুটির ব্যবহারের ফলে দিনে দিনে এর অপব্যবহার এর মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে এর ফলে তরুণ প্রজন্ম যাকে কিশোর গ্যাং বলা হয়। এরা চরমভাবে বিপথগামী হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, বিশেষ করে করোনা মহামারির ফলে স্কুল, কলেজ, ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে অন্যদিকে অনলাইনভিত্তিক ক্লাস হওয়ার ফলে অভিভাবকরা তার সন্তানদের হাতে সহসাই ল্যাপটপ, মোবাইল ডিভাইস তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এ সুযোগের বেশির ভাগ অপব্যবহার ঘটছে। এমনকি তরুণ প্রজন্ম এই গেম দুটির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, তাই এই গেম দুটি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, গত ২১শে মে চাঁদপুরে মামুন (১৪) নামে এক তরুণ মোবাইলের ডাটা কেনার টাকা না পেয়ে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করে। আমরা যখন আগামীর তরুণ প্রজন্মকে সহজলভ্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রাপ্তির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি ঠিক তখন আগামী তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তির অপব্যবহার করে বিপথগামী হয়েছে। যা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং নিয়ন্ত্রক কমিশনকে দ্রুত এবং দ্রুততার সহিত এই গেমগুলোর অপব্যবহার বন্ধ এবং ভালো দিক তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা গড়তে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এ ধরনের গেম খেলার ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। অনলাইনে গেম খেলার পাশাপাশি ভার্চ্যুয়ালে অর্থ লেনদেন হচ্ছে এমএমএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্র, সমাজ, ব্যক্তি ও পরিবার।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019