১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৪ অপরাহ্ন, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রাজনৈতিক নয়: প্রধানমন্ত্রী ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট দেশে তিনদিনের হিট অ্যালার্ট জারি গাড়ি-বাড়ি নিয়ে শো-অফ, ভুয়া ভিসা বিক্রি করে রাতারাতি কোটিপতি মামুন বানারীপাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের ফুলেল শুভেচ্ছায সিক্ত মেনন বানারীপাড়ায় তহশিলদার ও সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ যুবকের আত্নহত্যা, বাড়িতে খালু শ্বশুরের ঘুষি, সালিশে মেম্বারের দেওয়া থাপ্পড় না কি স্ত্রীর ওপর অভিমান বাবুগঞ্জে আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গায় ৫’শ পেঁপে গাছ কেটে দেয়ার প্রতিবাদে কৃষকজোটের মানববন্ধন ও সমাবেশ বাবুগঞ্জে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন
বাউফল/ স্বামীর মামলায় স্ত্রী কারাগারে, কাঁদছে ৬ বছরের সন্তান।

বাউফল/ স্বামীর মামলায় স্ত্রী কারাগারে, কাঁদছে ৬ বছরের সন্তান।

 

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:::বাবার মিথ্যে ঘটনার মামলায় মাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে । মাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না। আমার মাকে ছাড়বে কবে ( কখন )? তোমরা আমার মাকে এনে দাও । এ কথাগুলো বলতে বলতে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে ছয় বছরের শিশু মো .আলিফ ।

আলিফের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া গ্রামে । তার বাবার নাম মো .মিরাজ হোসেন ( ২৮ )। মায়ের নাম মোসা . নুপুর আক্তার ( ২৭ ) । আলিফ উপজেলা সদরের বাউফল দাসপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ।

আলিফের বাবা মিরাজকে মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার মা নুপুর আক্তার , নানী মোসা . রেহেনা বেগম ( ৪৫ ) খালা মোসা . আকলিমা বেগমকে ( ২২ ) গত শনিবার বিকেলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে রোববার সকালে কারাগারে পাঠায় । আদালত রেহেনা বেগমকে জামিন দেন । নুপুর ও আকলিমাকে পটুয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন । তাঁরা কারাগারে আছেন ।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে , দাসপাড়া গ্রামের মিরাজ ও নুপুরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল । একপর্যায়ে পরিবারের সম্মতি ছাড়াই ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর তাঁরা দুজনে বিয়ে করেন । তাঁদের সংসারে রয়েছে ৬বছর বয়সের আলিফ নামে এক পুত্র সন্তান । সংসার জীবনে তাঁরা সুখেই ছিলেন ।

একপর্যায়ে মাদরাসা অধিপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে মিরাজের চাকুরি হয় । সেই সুবাধে মিরাজ ঢাকায় থাকেন । দুই বছর আগে স্ত্রী নুপুরকে না জানিয়েই মিরাজ দ্বিতীয় বিয়ে করে । শুরু হয় পারিবারিক কলহ । দ্বিতীয় স্ত্রীকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বাড়িতে এসে প্রায়ই নুপুরকে মারধর করতেন মিরাজ । নুপুরের শশুর বাড়ির লোকজন মিরাজের পক্ষ নেয়। তাঁদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ২০/২৫ দিন আগে শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে ওঠেন নুপুর ।

সর্বশেষ ১৫ এপ্রিল ( গত বৃহস্পতিবার ) রাত সাতটার দিকে নুপুরের বাবার বাড়িতে মিরাজ গিয়ে নুপুরকে মারধর করতে থাকেন । তাঁকে রক্ষা করতে নুপুরের মা রেহেনা বেগম ও বোন আকলিমা এগিয়ে গেলে তাঁদেরকে মারধর করে । একপর্যায়ে তাঁরা ( নুপুর , রেহেনা ও আকলিমা ) প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুললে মিরাজ দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আহত হন। ওই ঘটনায় মিরাজের বোন হেপী বেগম ( ৩২ ) বাদী হয়ে মিরাজের স্ত্রী , শাশুড়ি ও শ্যালিকাসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে বাউফল থানায় মামলা করেন । ওই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে সাত ব্যক্তিকে । যাঁরা সবাই মিরাজের স্বজন ।

মিরাজের একমাত্র ছেলে আলিফ বলে, ‘ আমার মায়ের কোনো দোষ নাই । সব দোষ বাবার । ’

স্থানীয় মো . খলিলুর রহমান ( ৪২ ) বলেন , মিরাজের স্বভাব চরিত্র ভালো না । শুনেছি দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে প্রায়ই নুপুরকে মারধর করা হত । গত বৃহস্পতিবার মিরাজ তাঁর স্ত্রী নুপুরকে মারতে থাকে । তখন নূপুরের মা ও বোনের প্রতিবাদের মুখে পালিয়ে যাওয়ার সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চোখের ওপরের অংশে আঘাত পেয়েছে । সেই ঘটনায় নুপুর ও তাঁর বোন আকলিমা কারাগারে আছেন । এটা খুবই কষ্টদায়ক । খলিলুরের মত এ ঘটনায় অনেকেই মিরাজের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে মিরাজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

তবে মামলার বাদী ও মিরাজের বোন হ্যাপী বেগম বলেন , এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন না । মিরাজই ভালো বলতে পারবেন । ’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনা ঘটার পরে সাক্ষীরা ঘটনাস্থলে গিয়েছে । সাক্ষীরা সবাই তাঁদের স্বজন বলেও স্বীকার করেন ।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি/তদন্ত) মোঃ আল মামুন বলেন ,‘ মামলাটি তদন্তাধীন । তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হবে । ’

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019