২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৪ অপরাহ্ন, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
নীরবে কাঁদছেন সারা দেশের সেইপ প্রকল্পে কর্মরত গেস্ট ট্রেইনাররা।

নীরবে কাঁদছেন সারা দেশের সেইপ প্রকল্পে কর্মরত গেস্ট ট্রেইনাররা।

বিশেষ প্রতিনিধি : দক্ষতা জনশক্তি দেশের সম্পদ। দারিদ্র বিমোচনে ও বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দক্ষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মানুষের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের উন্নয়নে দেশ বিদেশে ব্যাপক অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ‘‘ স্কিলস্ পর এমপ্লমেন্টে ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেইপ) বাস্তবায়ন প্রকল্প। দক্ষ জনশক্তি রূপান্তরে ২০১৪ সালের জুলাই মাসে শুরু এ প্রকল্পের কার্যক্রম, প্রকল্পের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে হচ্ছে ২০২০ সালের মধ্যে দেশে ৫ লক্ষ দুই হাজার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা । সম্পূর্ণ সরকারি খরচে এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ৭০ শতাংশে চাকুরি সুযোগ করে দেওয়া। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, সুবিধা বঞ্চিত মানুষকে কর্মসংস্থানের সহায়তা করা। প্রশিক্ষণ চলাকালে বৃহত্তজনগোষ্ঠিকে প্রশিক্ষণ ভাতার পাশা-পাশি বিশেষ বৃত্তি প্রদান করয়েছে উল্লেখ্য বিষয় নিয়ে। সব কিছু সুনামের সহিত কাজ করে যাচ্ছে এ প্রকল্পটি। এ সুনামের বড় অংশিদারের সিংহ ভাগ ভূমিকা রাখছেন দক্ষ প্রশিক্ষকরা অর্থাৎ যাদের কাগজে কলমে বলা হয় (গেস্ট ট্রেইনার)। ২০১৪ সাল থেকে বেশির ভাগ অতিথি প্রশিক্ষকরা দেশ উন্নয়নের অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও নীরবে সইতে হচ্ছে নানা দুঃখ,কষ্ট, যন্ত্রণা। কুল রাখি না শ্যাম রাখি (চাকুরি রক্ষা ও চাকুরি হারানোর) ভয়ে সব কিছু আপন করে সইছেন প্রশিক্ষকরা। সূত্রে জানা যায় , সারা দেশে শিক্ষা মন্ত্রনালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রনালয়, পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), শিল্প সংস্থাসমুহ চলছে এ (সেইপ) প্রকল্প। আর এই প্রকল্প পরিচালনা করতে দেখা যায় সারা দেশে বিভিন্ন সরকারি ও আধা সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তার মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য ভূমিকা পালন করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধিনে থাকা (টিটিসি) গুলো। সারা দেশে প্রশিক্ষণের উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় সমুহের মধ্যে রয়েছেন- গ্রাফিক্স ডিজাইন, আইটি সাপোর্ট টেকনিশিয়ান, ওয়েব ডিজাইন, সুইং বেসিকস এন্ড সুইং মেশিন, কোয়ালিটি কন্ট্রোল সুপার ভাইজার, মার্চেন্ডাইজিং, ওয়েল্ডিং, রিফ্রেজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশনিং, রাজমিন্ত্রী, প্ল্যাম্বিং পাইপ ফিটিং, অটোমোবাইল মেকানিক, মোবাইল সার্ভিসিং,ড্রাইভিং, টাইলস এন্ড মোজাইক সেটিং, আউটসোসিং,আইটি সেলস ম্যানেজেমেন্ট, ফুড এনড বেভারেজ সার্ভিসেস সহ নানা প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন দক্ষ প্রশিক্ষকরা। জানা যায়,সর্ব সময় দক্ষতার মানুষ গড়তে প্রকল্পে কর্মকরত অতিথি প্রশিক্ষকরা নানা স্বপ্ন দেখেন দেশে উন্নয়ন নিয়ে। কিন্তু স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস। বিশ্ব ব্যাপী করোনা সংক্রামনের প্রেক্ষিতে লকডাউনের বাংলাদেশ ২০২০ লাকডাউন ঘোষণার পর প্রকল্পে কর্মকরত অতিথি প্রশিক্ষকরা ২/১ মাস ভালো চলেই পরবর্তীতে শুরু ওদের পরিবার পরিজন নিয়ে নানা দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা, পড়তে হয় অর্থনৈতিক বিপাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছক লালমনির হাট টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার ও সিলেট টিটিসির একজন গেস্ট ট্রেইনার জানান ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে আমাদের বেতন ভাতা বন্দ হয়ে প্রকল্প থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কোন বেতন ভাতা না পাওয়ার কারণে অনেকে পরিবার নিয়ে রাস্তায় নেমে গেছি। ওই টাকার আসায় ঋণ করতে করতে বড় অংকের ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। অথচ করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্র ছাত্রীদের ৫ হাজার টাকা উপবৃত্তি ও জব প্লেসম্যানন্ট অফিসার নিয়মিত বেতন ভাতা প্রদান করা হয়। যারা মাসের পর মাস গেস্ট ট্রেইনার নিঃস্বার্থে কাজ করেছেন তাদের প্রতি কোন মানবিক কোন দৃষ্টি দেয়ি প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে প্রকল্পের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি সারা দেশে কর্মকরত গেস্ট ট্রেইনার প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তেমন কোন সাড়া দেয় নি বলে অভিযোগ করেন তারা। আরও জানান,মানবিক দৃষ্টি কোন থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন টিটিসির অধ্যক্ষরা বার প্রকল্প পরিচালক সহ বিভিন্ন জনকে অবগতি করা হয় গেস্ট ট্রেইনারদের এই দূযোর্গ পরিস্থিতিতে তাদের সহযোগীতা করার জন্য। ২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে পুণরায় প্রকল্প কার্যক্রম শুরু হলে কিছুটা আলোর মুখ দেখেন গেস্ট ট্রেইনাররা। তাও এপ্রিলের ৫ তারিখ থেকে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণার পর বন্ধ হয়ে গেছে ক্লাসের সকল কার্যক্রম। আবারও অনিশ্চিতায় পড়ে গেছে গেস্ট ট্রেইনাররা এবং উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। করোনা পরিস্থিতি ভয়ংকর অর্থনৈতিক সংকট থেকে কি ভাবে উত্তরণ পাবেন তা নিয়ে নীরবে কাঁদছেন ।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019