২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এম.এ.আর নয়ন, স্টাফ রিপোর্টার:
কাজ করার ভয়ে আমাদের সমাজে অনেকেই নানা অজুহাতে বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। কারণ হাত পেতে যদি টাকা পাওয়া যায় তাহলে কাজ করে উপার্জন করার দরকার নাই এমন চিন্তা কিছু ভিক্ষুকদের মাথায় সবসময় কাজ করে। মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা চাইতে তাদের অজুহাতের কোন শেষ থাকেনা৷ অনেকে আবার নিজ এলাকার বাইরে যেয়ে অন্য এলাকায় যেয়ে শুরু করেন ভিক্ষা করার কাজ।
মেয়ের বিয়ে, মা অসুস্থ, অপারেশন করাবেন নিজের বা নিজের পরিবারের কোন এক সদস্যের কিংবা বয়সের ভারে কাজ করতে পারেন না এমন অজুহাত প্রায়ই শোনা যায়। আর তাদের এই অজুহাত কোনদিন বন্ধ হয়না চলতে থাকে সারাজীবন। এসব অজুহাতে মানুষের কাছে ভিক্ষুকদের হাত পাতা বন্ধ করে দেশকে ভিক্ষুক মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে সরকার। পুনর্বাসিত করা হয় দেশের অনেক ভিক্ষুককে। দেশের অনেক উপজেলা বা জেলায় টানিয়ে দেওয়া হয় ভিক্ষুকমুক্ত এলাকার সাইনবোর্ড।
কিন্তু কিছুদিন পরেই তারা আবার আগের পেশায় ফিরে যান৷ কিন্তু বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়লেও পরিবারে উপার্জনক্ষম কেউ না থাকা বা ছেলেমেয়েরা দেখভাল না করার কারণে অনেকেই জীবনের শেষদিন পর্যন্ত কাজ করে নিজ হাতে উপার্জন করেন। এমনই এক ব্যক্তি যিনি বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়লেও বিক্রি করছেন বাদাম, যা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ স্কুলে প্রবেশ করার সময় দৃষ্টিগোচর হয় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সাদিকুর রহমানের।
তিনি ঐ অসহায় বৃদ্ধের কাছে যেয়ে তার গায়ে জড়িয়ে দেন কম্বল, মুখে পড়িয়ে দেন মাস্ক এবং হাতে তুলে দেন সাবান। বিস্তারিত পরিচয় শুনে বৃদ্ধকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন ইউএনও মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান। মঙ্গলবার (২২শে ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়ে আধুনিক লাইব্রেরি এবং বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করতে যেয়ে বিদ্যালয় চত্ত্বরে বাদাম বিক্রি করতে থাকা বৃদ্ধকে দেখে এই মানবিক কাজ করেন ইউএনও মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান।
এ বিষয়ে ইউএনও মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভিক্ষুকমুক্ত করণের জন্য বিভিন্ন কাজ করি। অনেককেই বিভিন্ন কাজ দেই, তাদেরকে স্বাবলম্বী করার জন্য। রকমারি অজুহাতে তারা কাজ করতে চাননা। বয়সের ভার অথবা নগদ নারায়ণের কথা বিবেচনায় অনেকে আবার ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরে যান। যারা এই রকম ভাবেন তাদের জন্য এই মুরুব্বি অবশ্যই অনুপ্রেরণা।