২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অনলাইন ডেস্ক:: চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজধানীর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ব্যবসায়ী। রহিম নামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় তুলে নিয়ে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে ওসিসহ ৫ আসামি ২ লাখ টাকা দাবি করে। পুরো টাকা দিতে না পারায় ব্যবসায়ী একটি মামলায় জড়িয়ে দেন ওসি। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করলে বিচারক আবু সুফিয়ান মো. নোমান আমলে নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থাকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই মামলার অপর আসামিরা হলেন- কোতয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিসুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) খায়রুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম এবং পুলিশের কথিত সোর্স দেলোয়ার হোসেন।
এর আগে গত ১৭ নভেম্বর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. রহিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আজ তদন্তের আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রহিম গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় কাজ শেষে চরকালিগঞ্জ জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে বাসায় ফিরছিলেন। রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া ব্রিজের ওপর আসলে অজ্ঞাতনামা তিনজন তার গতিরোধ করে। তারা নিজেদের ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দেন। রহিমের নামে ডিবিতে একটি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানায়। পরে তারা রহিমকে একটি দোকানে নিয়ে তল্লাশি করেন। তবে তার কাছ থেকে কিছু উদ্ধার করতে পারেনি।
মামলার অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, ওই দোকানে উপস্থিত লোকজন রহিমকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। তবে তারা রহিমকে দোকান থেকে বের করে বাবু বাজার ব্রিজের কাছে নিয়ে যান। সেখানে এসআই আনিসুল ইসলাম, এএসআই খায়রুল ইসলাম ও সোর্স দেলোয়ার উপস্থিত ছিলেন। এই তিনজন নিজেদের কাছ থাকা ইয়াবা বের করে অভিযোগ করেন, এগুলো রহিমের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
ওই সময় এএসআই আনিসুল ইসলাম বলেন, যদি ফাঁসতে না চাস, তাহলে দ্রুত দুই লাখ টাকা জোগাড় কর। না হলে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেব। এ থেকে বাঁচার জন্য রহিম তার কাছে থাকা এক ভরি স্বর্ণের চেইন, নগদ ১৩ হাজার টাকা তুলে দেন। দাবিকৃত দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় তারা রহিমকে রাত সোয়া ৯টার দিকে থানায় নিয়ে যান। পরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহিম তাদের ৫০ হাজার টাকা দেন। রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ওসি মিজানুর রহমান রহিমকে ডেকে নেন এবং তাকে বলেন, তোকে বাঁচিয়ে দিলাম। ছোট মামলা দিলাম, দুই একদিনের মধ্যে বের হয়ে আসতে পারবি।
অভিযোগ থেকে আরও জানা গেছে, দাবিকৃত টাকা পেয়েও রহিমের বিরুদ্ধে ১০ পিস ইয়াবার মামলা দিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ১৭ দিন জেল খাটার পর ৩০ অক্টোবর মুক্তি পান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রহিম।’