২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, মঙ্গলবার, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
বোরকা পরে বালিকা মাদরাসায় যুবক, ধরা পড়ে খেলেন গণপিটুনি ২৪ বছর কারাভোগ শেষে ভ্যান নিয়ে বাড়ি ফিরলেন ওলিউল কাতারের সঙ্গে ৫ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই পথিকের তৃষ্ণা নিবারণে নলছিটি ফ্রি পানির বুথ করছে বিডি ক্লিন দামুড়হুদায় স্থানীয় এমপির নিকট আত্নীয় হওয়ায় ঘোষনা দিয়ে উপজেলা আঃলীগের সাঃ সম্পাদকের মনোনয়ন প্রত্যাহার গোবিন্দগঞ্জে অটোবাইক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা কালে জনতার হাতে ২ জন আটক জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচী উপলক্ষে জনসচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত ঝালকাঠিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে দুর্ধষ ডাকাতির ঘটনার প্রধান আসামি কুখ্যাত ডাকাত সরদার দিপক বড়াল কে আটক করেছে র‌্যাব ৮ চুয়াডাঙ্গায় নিখোঁজের ৬ দিন পর নারীর ঝুলন্ত অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কার
ভারতীয় সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রল’-এ খুনের কৌশল দেখে কয়েক বন্ধু মিলে হত্যার চেষ্টা। আজকের ক্রাইম নিউজ

ভারতীয় সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রল’-এ খুনের কৌশল দেখে কয়েক বন্ধু মিলে হত্যার চেষ্টা। আজকের ক্রাইম নিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
জনপ্রিয় ভারতীয় সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রল’-এ খুনের কৌশল দেখে প্রভাবিত হয়ে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরাফাতকে তার কয়েকজন বন্ধু মিলে হত্যার চেষ্টা করেছে। পরে আরাফাতকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। গত রবিবার পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ইয়াসির আরাফাত নামের শিশুটির এক জোড়া রোলার স্কেটস ছিল। তার এক বন্ধু সেটি কিনতে চায়, কিন্তু টাকা পরে দেবে বলে জানায়। আরাফাত রাজি হয়ে বন্ধুকে স্কেটস জোড়া দিয়ে দেয়। বন্ধু যখন টাকা দিতে পারছিল না, তখন আরাফাত টাকার বদলে বন্ধুর কবুতর জোড়া চায়। বন্ধু কবুতরও দেয় না, উল্টো দুই বন্ধুর সঙ্গে পরিকল্পনা করে ভারতীয় সিরিজ ‘ক্রাইম পেট্রলের কাহিনির’ মতো করে আরাফাতকে খুনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামাফিক তারা আরাফাতকে একটি আখখেতে নিয়ে বেদম মারধর করে। শেষ পর্যন্ত আরাফাতকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

আরাফাত এই বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছে। তিন বন্ধুর মধ্যে দুজন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র, আরেকজন সপ্তম শ্রেণির। তাদের সবার বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলায়। অভিযুক্ত তিন শিশুকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের সঙ্গে নিয়েই রবিবার রাতে আখখেতের ভেতর থেকে আরাফাতকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অসিত কুমার বসাক একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরাফাতকে খুঁজে বের করার পুরো বর্ণনা দিয়েছেন। তার বর্ণনা অনুযায়ী, রবিবার সকাল আটটায় বাড়ি থেকে বের হয় আরাফাত। দুপুরে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও ফেরেনি সে। আরাফাতের পরিবার থানায় খবর দিলে পুলিশ আরাফাতের কাছের এক বন্ধুকে ডেকে আনে।

জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, দুপুর ১২টার দিকে আরাফাতকে একটি ছেলের সাইকেলে করে যেতে দেখেছে। আরও দুই শিশুও একই কথা জানায়। এভাবে প্রায় দেড় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর একপর্যায়ে একটি শিশু বলে, ‘স্যার আমার কিছু হবে না তো?’ পরে পুলিশের আশ্বাস পেয়ে সে বলে, ‘আরাফাতের লাশ কোথায় আছে আমি জানি, কিন্তু আমি কাছে যেতে পারব না।’

এরপর রাত ১১টায় ওই শিশুর দেখানো জায়গায় পৌঁছায় পুলিশ। জায়গাটি ঈশ্বরদী থানা থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে। যাওয়ার পথে এক শিশু বলে, ‘স্যার আমরা আখখেতের ভেতরে আরাফাতকে মেরে ফেলেছি। সে ওখানে মরে পড়ে আছে।’ তাদের কথামতো আখখেতের ভেতরে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় আরাফাতকে পাওয়া যায়। মাথায় অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন, বাঁ কানের অনেকটা অংশ কাটা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ। মারধরের পর দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা ধরে রক্তক্ষরণ হয়। অস্ফুট স্বরে বলছিল, ‘আপনারা কারা? আমাকে একটা বালিশ দিন আমি একটু ঘুমাব। আমার আব্বু আম্মু কোথায়?’ এত রক্তক্ষরণের পরেও শিশুটি বেঁচে ছিল।

ঈশ্বরদী থানা-পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, রবিবার তিন বন্ধু আরাফাতকে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। এরপর তারা আখখেতে গিয়ে একসঙ্গে আখ খায়। একপর্যায়ে এক বন্ধু আরাফাতকে বলে, আখের গোড়ার দিকে যে নতুন কুশি বের হয়েছে সেগুলো ভেঙে নিয়ে বাড়িতে লাগালে আখ গাছ হবে। বন্ধুদের কথামতো এই কাজ করার সময় পেছন থেকে একজন আরাফাতের মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। মারধরের একপর্যায়ে আরাফাত মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ফেরার পথে রডটি একটি পুকুরে ফেলে দেয় তারা। পুলিশ রক্তমাখা সেই রডটি উদ্ধার করেছে। মঙ্গলবার রাতে আরাফাতকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় রওনা হয়েছে তার পরিবার।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, আটক তিন বন্ধুই জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বীকার করেছে, কীভাবে তারা ক্রাইম পেট্রল দেখার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আরাফাতকে হত্যার চেষ্টা করেছে। তারা আগে থেকেই ঘটনাস্থলে ব্যাগে করে লোহার রড রেখে এসেছিল। তিনজনকেই যশোর শিশু সংশোধনাগার কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019