০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, মঙ্গলবার, ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মলমূত্র খাওয়ালো প্রভাবশা
১ মিনিট ১৪ সেকেন্ড এর ওই ভিডিওটিতে দেখা যায় যুবকটির পেছন থেকে হাত-পা বেঁধে বুকের ওপর পা চেপে ধরে মলমূত্র খাওয়ানো হচ্ছে। যুবকটি অনেক চেষ্টা করেও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
হিজলার হরিনাথপুর তালতলা জামে মসজিদ রোড নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানাগেছে।
যা নিয়ে গত ক’দিন ধরেই পুরো হিজলা উপজেলা জুড়ে তোলপাড় চলছে। তবে এ ধরনের কোন ঘটনা ইতিপূর্বে জানা ছিলো না বলে দাবি করেছেন স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের পরিচয় খুঁজতে গিয়ে জানাগেছে, তিনি হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের হরিনাথপুর বাজার সংলগ্ন টমুচরের বাসিন্দা মহিউদ্দিন বেপারীর ছেলে আজম বেপারী (২৫)। সে হরিনাথপুর লঞ্চঘাটের জ্বালানী তেল ব্যবসায়ী।
এছাড়া তাকে যারা নির্যাতন করেছে তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। তিনি হলেন- একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক সিকদারের ছেলে ও হরিনাথপুর লঞ্চঘাটের সুপারভাইজার মাহবুব সিকদার। তার নেতৃত্বেই যুবককে নির্যাতন ও মল-মুত্র খাওয়ানোর ঘটনা ঘটে বলে জানাগেছে।
তাছাড়া ঘটনার পর থেকেই আজম বেপারী নামের ওই যুবকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও তার পরিবারের দাবি আজম ঘটনার পরে তাবলিক জামায়াতে গেছে। তবে এ বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, ‘আজম বেপারীকে হাত-পা বেধে রাস্তার ওপর ফেলে রাখা হয়েছে। তার চার দিক ঘিরে দাড়িয়ে আছে ৭-৮ জন লোক। এর মধ্যে একজন আজমের বুকের ওপর পা দিয়ে দাড়িয়ে আছে। এছাড়া অপর একজন ব্যক্তি আজমের পা এবং অন্য একজন ব্যক্তি তার মাথা মাটির সাথে চেপে ধরে আছে।
একটু পরেই বুকের ওপর পা দিয়ে দাড়িয়ে থাকা ব্যক্তি মলমূত্র নিয়ে তা জোর করে আজমের মুখে ঢালার চেষ্টা করছেন। তখন আজম অনেক অনুনয় বিনয় এবং ধস্তাধস্তি করেও তাদের থেকে রক্ষা পায়নি। এসময় পাশে দাড়িয়ে কিছু লোক ওই ঘটনা উপভোগ করলেও কেউ প্রতিরোধে এগিয়ে আসেনি। আর পুরো ঘটনাটি পাশ থেকে দাড়িয়ে কেউ একজন মোবাইল ফোনে ভিডিও করে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, ‘ঝাক-ফুকের কাজ করে বলে অপবাদ দিয়ে আজম নামের ওই তেল ব্যবসায়ী যুবকে এমন মধ্য যুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে মাহবুব ও তার লোকজন। এমনকি ঘটনার পরে ওই যুবক লোক লজ্জায় মোবাইল ফোন বন্ধ করে তাবলিগ জামায়াতে চলে যায়। তবে সে কোথায় আছে সে সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে পারছে না।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে খবর পেয়ে হিজলার হরিনাথপুর শাওড়া সৈয়দখালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক তারেক আহসান রাসেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারনে তিনি ঘটনাটি এড়িয়ে যান।
তবে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক তারেক আহসান রাসেল এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেছে বলে জানেন না বলে দাবি করেন তিনি। পরে অবশ্য বলেন, ‘আমি রাতেই (সোমবার) ঘটনাটি শুনেছি। তবে ভিডিও ভাইরালের বিষয়টি আমার জানা নেই। সেটি এখনো আমার হাতে এসে পৌছায়নি। মঙ্গলবার এই বিষয়ে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার ঘটনা আমি শুনেছি। রাতেই স্থানীয়দের মাধ্যমে এ বিষয়ে আমার কাছে খবর আসে। তবে এখন পর্যন্ত ভিডিওটি দেখিনি। থানা পুলিশকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।