২২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০১ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ছারছীনার পীর সাহেব হুজুরের বরিশাল আগমন উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় উদ্ধার হওয়া তিনটি তক্ষক বনায়ন ও নার্সারি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বাগানে অবমুক্ত ফাতেমা জোহরা আদিবার আন্তর্জাতিক সাফল্য; অস্ট্রেলিয়ার নিবন্ধিত আর্কিটেক্ট স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ
জুয়ার টাকা জোগাড় করতে মা-ছেলে হত্যা করেন

জুয়ার টাকা জোগাড় করতে মা-ছেলে হত্যা করেন

আজকের ক্রাইম ডেক্স

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানাধীন গোবিন্দি এলাকার বাসিন্দা সাদিকুর সাদির (২৪) সঙ্গে কারও বিবাদ ছিল না কখনো। এলাকার নম্র-ভদ্র ছেলে হিসেবে সবার কাছে পরিচিত সেই সাদিই এখন জোড়া খুনের মামলার আসামি। আইপিএল খেলায় জুয়া খেলে নিজের সব টাকা খুইয়ে আরও ৭০ হাজার টাকা ঋণী হয়ে পড়েন সাদি। অসহায় অবস্থায় পাশের বাড়ির ভাবি রাজিয়া সুলতানা কাকুলির কাছে ১০ হাজার টাকা ধার চান।

টাকা না পেয়ে স্বর্ণালঙ্কারের লোভে কাকুলি ও তার ৮ বছরের শিশু সন্তান তালহাকে গলাকেটে হত্যা করেন সাদি।
গত ২ জুলাই রাতে গোবিন্দি এলাকার নিজ বাসায় কাকুলি ও তার শিশু সন্তান তালহাকে খুন করা হয়। ঘটনার তদন্তে কাকুলির ঘরের পাশে একটি সুপারি গাছে লাগা মাটি দেখে ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে গত শনিবার (৯ জুলাই) নিজ বাসা থেকে সাদিকুর সাদিকে গ্রেফতার করা হয়।

গতকাল রবিবার (১০ জুলাই) হত্যাকাণ্ডে নিজের দায় স্বীকার করে আদালতকে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সাদি।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় পিবিআই সদস্যরা দেখতে পান কাকুলির ঘরের পেছনে একটি সুপারি গাছে মাটি লেগে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কেউ বেয়ে উঠেছে, কিন্তু গাছে সুপারি নেই।

আবার গাছ বেয়ে ওই ঘরে প্রবেশের সুযোগও নেই। তবে গাছে উঠে ভেন্টিলেটর দিয়ে কাকুলির ঘরের ভেতরটা দেখা যায়।
হত্যাকাণ্ডের সময় গাছ বেয়ে কেউ উঠেছে এমন ধারণা করে খোঁজ করতে থাকেন পিবিআই সদস্যরা। একপর্যায়ে জানা যায়, বাড়ির পেছনে ফ্রি ওয়াইফাই সংযোগ থাকায় কাকুলির ভাসুরের ছেলে অজিদ কাজীসহ (১৬) কয়েকজন সেখানে বসে ভিডিও গেম খেলে। অজিদ কাজীকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জানায়, ২ জুলাই রাতে সে ওই ঘরের পেছনে বসে অনলাইনে গেম খেলছিল।

আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ কাকুলির ছেলে ভিকটিম তালহার চিৎকার শোনা যায়। এরপর অজিদ কৌতুহলবশত সুপারি গাছ বেয়ে উপরে ওঠে ভেন্টিলেটর দিয়ে সাদিকে দেখতে পায়।
এরপর সাদিকে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে অজিদ। সে ভাবে কাকুলির সঙ্গে সাদির অবৈধ সম্পর্ক আছে। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে সাদিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মালয়েশিয়া প্রবাসী স্বামী আড়াইবছর আগে মারা যাওয়ার পর কাকুলি তার সন্তানকে নিয়ে ওই ঘরেই বসবাস করতেন। তার কাছে টাকা-পয়সা আছে ভেবে ধার চাওয়ার পরিকল্পনা করেন সাদি।

সাদিকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পিবিআই প্রধান বলেন, ২ জুলাই রাতে কাকুলির ঘরের দরজায় নক করে দরজা খুলতে বলে সাদি। কাকুলি দরজা খুললে ভেতরে গিয়ে দেখতে পায় তার ছেলে তালহাকে ভাত খাওয়াচ্ছে। ভাত খাওয়ানোর পর তালহা ঘুমিয়ে যায়। এরপর সাদি কাকুলিকে আরেক রুমে ডেকে নিয়ে ১০ হাজার টাকা ধার চান, একপর্যায়ে কাকুলির পায়ে ধরে অনুরোধ করেন।

এলাকার ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত সাদিকে বিশ্বাস করে আলমারি খুলে কাকুলি দেখান, তার কাছে দেওয়ার মতো কোনো টাকা নেই। মাত্র ১০০ টাকা আছে। আলমারি খুললে সাদি দেখতে পায় সেখানে কিছু স্বর্ণালঙ্কার রাখা আছে। এরপর সাদি তার ভাবি কাকুলিকে চেয়ারে বসতে বলেন। তখন ওড়না দিয়ে কাকুলির গলা পেঁচিয়ে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর ইস্ত্রি দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে বটি দিয়ে গলা কেটে দেন সাদি।

তখন সাদি ভাবে কাকুলির ছেলেও হয়তো তাকে দেখে চিনে ফেলেছে। তাই ঘুমন্ত শিশু তালহাকেও গলা কেটে হত্যা করেন সাদি। এরপর কাকুলির আলমারি থেকে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে চলে যান। পরে সেসব কিছু সাদির ঘর এবং যাদের কাছে বিক্রি করেছে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে পিবিআই।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, আইপিএল খেলায় জুয়ায় হেরে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ঋণী হয়ে যান সাদি। পাওনাদারদের চাপ সহ্য করতে না পেরে টাকা ধার চাইতে এসে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের মনে হয়েছে সাদির হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল না। ঘটনার আকস্মিকতায় পাওনাদারদের চাপ সহ্য করতে না পেরে সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা তদন্তের এ জায়গাটা বাকি রেখেছি, তদন্তে যদি পাওনাদারদের কোনো ভূমিকা পাওয়া যায় তাহলে তাদের আসামি করা হবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019