১৫ মে ২০২৫, ০৩:৫২ অপরাহ্ন, ১৬ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, সুন্দরবন থেকে ফিরে:
প্রকৃতির অপরূপ রূপে শীতকালের আগমনে বাংলাদেশের জলাশয়গুলোতে শুরু হয়েছে পরিযায়ী পাখির মেলা। দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার পাখি সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া ও চীন পেরিয়ে এসে আশ্রয় নেয় আমাদের নদী-নালা, হাওর-বিল, বনাঞ্চল ও বিস্তৃত সুন্দরবনে।
পাখির কলকাকলি ওড়ায় জীবনের সুর
প্রতিবছর মে ও অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শনিবার বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় “পরিযায়ী পাখি দিবস”। উদ্দেশ্য—পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল নিশ্চিত করা, তাদের প্রতি জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং শিকার বন্ধ করা।
কিছু তথ্য এক নজরে:
বিশ্বে প্রায় ১০,০০০ প্রজাতির পাখির মধ্যে ১৮৫৫টি প্রজাতি পরিযায়ী
বাংলাদেশে মোট পাখির প্রজাতি প্রায় ৬৫০, যার মধ্যে ৩০০টি পরিযায়ী
শীতকালে ২৯০ প্রজাতির পাখি আসে
বাংলাদেশে জলচর পাখির জন্য স্বীকৃত ২৮টি আন্তর্জাতিক স্থান
পরিযায়ী পাখিদের জনপ্রিয় আবাসস্থল:
সুন্দরবন, হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নিঝুম দ্বীপ, কুয়াকাটা, সোনাদিয়া দ্বীপ, চর কুকড়ি-মুকড়ি, মনপুরা, শাহপরীর দ্বীপ, মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট লেকসহ দেশের বহু জলাশয়।
⚠️ হুমকির মুখে অতিথি পাখিরা!
পরিবেশ দূষণ, জনবসতি বৃদ্ধি, বন ও জলাভূমি ধ্বংস এবং অবৈধ শিকার পাখিদের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আইন আছে, প্রয়োগ নেই!
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী—
পরিযায়ী পাখি হত্যা করলে সর্বোচ্চ ১ বছরের কারাদণ্ড বা ১ লাখ টাকা জরিমানা
দেহ, মাংস বা পালক সংরক্ষণ বা বিক্রি করলে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ৩০ হাজার টাকা জরিমানা
কেন রক্ষা করব পাখিদের?
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে
প্রাকৃতিক কীটনাশকের কাজ করে
ফসল রক্ষা করে
সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য বাড়ায়
আহ্বান:
পরিযায়ী পাখির জন্য বন্ধুসুলভ পরিবেশ তৈরি করা, অবৈধ শিকার বন্ধ করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।
“পাখিদের বাঁচান, প্রকৃতিকে রক্ষা করুন।”