২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, ৩০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, মঙ্গলবার, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
লক্ষাধিক নতুন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশকে অনুরোধ জাতিসংঘের বরিশালে প্রবাসীর স্ত্রী নিয়ে মুয়াজ্জিন উধাও বাগেরহাটে নিয়ম-নীতি না মেনে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইটভাটা চলছে কাঠ পোড়ানোর মহোৎসব মোরেলগঞ্জে জাতীয় আইন সহায়তা দিবসে র‌্যালী ও আলোচনা সভা বাগেরহাটে মুখমন্ডলে টেপ প্যাঁচানো অবস্থায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার বিজয়নগরে আধিপত্য বিস্তারে দুই গ্রুপে সংঘর্ষে আটক ৪ আলমডাঙ্গা পুলিশের হাতে ছিনতাই’কৃত ইজিবাইক সহ গ্রেফতার -২ বাবুগঞ্জে ভূগর্ভস্থ পানির সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত, অমৃত গ্রুপের বিরুদ্ধে মানববন্ধন বাড়ির উঠানে স্বামীর লাশ ফ্রিজিং ভ্যানে রেখে সালিস করছেন গ্রামবাসী ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা ছয় লেইনের সড়ক ও মীরগঞ্জে সেতু নির্মাণের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান।
বাগেরহাটে সৌখিন কৃষক মোস্তফা হাসানের সাফল্য, ২১ কেজি বীজে ২২১ মন ধান উৎপাদন

বাগেরহাটে সৌখিন কৃষক মোস্তফা হাসানের সাফল্য, ২১ কেজি বীজে ২২১ মন ধান উৎপাদন

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট: বাগেরহাটের ফকিরহাটে চলতি বোরো মৌসূমে কৃষক মোস্তফা হাসান চার বিঘা জমিতে মাত্র ২১ কেজি বীজ লাগিয়ে ২২১ মন ধান উৎপাদন করেছেন। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। অত্র উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে সোনালী বর্ণের এই ধান। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক জাত ব্রি-১০৮ ধান চাষে এ অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন উপজেলার সৌখিন এই চাষি।
ইউটিউবের মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে সম্পূর্ন ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষক মোস্তফা হাসান শেরপুর থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে ২১ কেজি বীজ ধান সংগ্রহ করেন। চার বিঘা জমিতে কিষান খরচ, জমি চাষ, সার ওষুধ ও সেচ খরচ মিলে তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও খরা সহিষ্ণু হওয়ায় বীজতলা থেকে শুরু করে ধান পাকা পর্যন্ত তার এই খরচ হয়েছে বলে জানান। সার ব্যবস্থাপনা কম লাগায় ও বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় অধিক লাভের আশা প্রকাশ করেন। জানুয়ারিতে রোপন করা ধান ইতোমধ্যে পেকে গেছে। এক শতক জমির ধান নমুনা কর্তনে ৪৫ কেজি ধান পেয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে প্রতি মন ধানের মূল্য ১ হাজার ৬০০ টাকা বলে তিনি জানান। ২/১ দিনের মধ্যে বাকি ধান কর্তন করবেন বলে জানান মোস্তফা হাসান।বাগেরহাট রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির জানান, চাষিদের কে সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন সীড কোম্পানি পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে সার ও বীজ দিয়ে গরীব কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে।
ইতোমধ্যে ফকিরহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বীজের জন্য ২০ মন ধানের চাহিদার কথা জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন।
উপজেলার বাহিরদিয়া ব্লকে কৃষক মোস্তফা হাসানের ধান খেতে গিয়ে দেখা গেছে, আশে পাশের অনেক কৃষক আগ্রহ নিয়ে ধান দেখতে এসেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাসহ কৃষি বিভাগের লোকজন কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন।
উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নয়ন সেন বলেন, “সোনালী রঙের ব্রি-১০৮ জাতের ধানটি এই উপজেলায় প্রথম চাষ হয়েছে। সম্ভাবত জেলায়ও প্রথম হবে। এ ধানের চাল মাঝারি লম্বা ও চিকন। ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু হওয়ায় উচ্চ মূল্যের জিরা ধানের বিকল্প হিসেবে উদ্ভাবন করা হয়েছে। একদিকে উৎপাদন খরচ কম, অন্যদিকে অধিক দামের কারণে ইতোমধ্যে ধানটির প্রতি ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে।”
কৃষক মোস্তফা হাসান ও খেত মজুর রহমত ফকির জানান, ৪ বিঘা ৫ শতক জমিতে ব্রি ১০৮ ধান চাষের সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা লাভ হবে। এ অঞ্চলে প্রথম চাষেই সাফল্য পাওয়ায় অনেক চাষি এটি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করতে চান তিনি। কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ ও কারীগরি সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “ব্রি-১০৮ হলো বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের আবিস্কৃত সর্বাধুনিক জাতের ধান। এ ধানটি অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশি উৎপাদন হয়। প্রতি গোছায় গড় কুশির সংখ্যা ১৬/১৭টি। দানার পুষ্টতা শতকরা ৮৮.৬ ভাগ। চালে প্রটিনের পরিমান ৮.৮ ভাগ যা অন্যান্য চালের তুলনায় বেশি স্বাস্থ্য সম্মত।”
উপজেলার অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ধানটি ছড়িতে দিতে এই খেত থেকে সরকারিভাবে বীজ সংগ্রহের পরিকল্পনার কথা জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019