১৫ মে ২০২৫, ১০:৫৪ অপরাহ্ন, ১৬ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার শ্রীধাম লক্ষীখালী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুরের ১০৩ তম বারুনী স্নানোৎসব ও মতুয়া মেলা তিন দিনব্যাপী এ স্নানোৎসব শুরু হয়েছে।
বুধবার রাত থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতুয়া সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারী পুরুষ মতুয়া ভক্তরা এ মেলায় অংশ গ্রহন করেন। মূলত বৃহস্পতিবার ভক্ত ইহজাগতিক পাপ মোচন ও পারামার্থিক কল্যাণ লাভের জন্য কামনা সাগরে পূর্ন স্নানের মধ্যে দিয়ে মেলার মাঠ এখন লাখো ভক্তের পদচারনায় মুখরিত। নিশান, ডাঙ্গা ঢোলের বাধ্যযন্ত্রের হরিনামে মাতোয়ারা ভক্তরা। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন পূণ্যার্থীদের নানা ভাবে সহযোগিতা করছেন।
এবারে বারুণী স্নান উৎসবে বাংলাদেশ মতুয়া মহাসংঘের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ, বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেছেন বলে শ্রীধাম লক্ষীখালীর গদীনশিন সেবাইত সাগর সাধু ঠাকুর জানিয়েছেন।
পূর্ণব্রহ্ম শ্রী শ্রী হরিগুরু চাঁদ ঠাকুরের ২১২ তম শুভ জয়ন্তি জন্ম স্মরণে বাংলা ১৩২৮ সাল থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত লক্ষীখালী গ্রামে তার ভক্ত শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুরের লীলাধামে প্রতিবছর এই দিনে মতুয়া ভক্তদের মিলন মেলা বসে। যা এখন ‘গোপাল সাধুর’ মেলাও নামে পরিচিত। লক্ষীখালী ধামের বর্তমান গদিনাশিন বাংলাদেশ মতুয়া মহা সংঘের সাধারণ সম্পাদক সাগর সাধু ঠাকুর আরও বলেন, দেশের অভ্যন্তরিন তালিকাভুক্ত ৪ শতাধিক দল এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান সহ লক্ষাধিক ভক্ত ইহজাগতিক পাপ মোচন ও পারামার্থিক কল্যাণ লাভের জন্য স্নানে আজ অংশ নিয়েছেন। ওড়াকান্দির ১৫দিন পরে ঠাকুরের দোয়ালীয়া বাড়ি গোপাল চাঁদের লীলা নিকেতন মোরেলগঞ্জের লক্ষীখালীতেও প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় বারুণী স্নান ও মহামেলা।
এ সর্ম্পকে মোরেলগঞ্জ থানা ওসি মো. রাজিব আল রশিদ বলেন, গোপালচাঁদ মেলায় সমবেত ভক্ত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় বাগেরহাট থেকে লক্ষীখালী পর্যন্ত ৪/৫টি স্পটে মোবাইল টিম কাজ করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, এ অঞ্চলে ঐতিহ্য লক্ষীখালীর গোপাল চাঁদ ¯œান উৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগত ভক্তদের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক, আনসার, পুলিশের টিম সার্বক্ষনিক মাঠে থাকছেন। বাগেরহাট পুলিশ সুপার মোঃ তৌহিদুল আরিফ জানান, হিন্দু ধর্মালম্বীদের স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে পুলিশ, র্যাব ও সাদা পোশাকসহ দেড় হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুরো এলাকাজুড়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মনিটরিং সেল বসানো হয়েছে। ৪/৫টি স্পটে মোবাইল টিম কাজ করছেন। পুণ্যার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্নে করতে মহাসড়ক ও সড়কে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় তৎপর রয়েছে।
**