১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ অপরাহ্ন, ১৮ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, বুধবার, ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক ইমরান জামান কাজল।
গতকাল ২০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রি: দুপুরে আনুমানিক সময় ১:৪৫ মিনিটে লবণচরা থানার একটি চৌকস টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা টুংগীপাড়া এক্সপ্রেসে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৯০৩৩) একজন ব্যক্তি সন্দেহজনক কোন বস্তু বহন করে নিয়ে যাচ্ছে।
অতঃপর জিরোপয়েন্ট মোড়স্থ খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে রূপকথা রেষ্টুরেষ্টের সামনে পাঁকা রাস্তার উপর টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহন থামিয়ে কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; সহকারী পুলিশ কমিশনার (খুলনা জোন) গোপীনাথ কানজিলাল; লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ মমতাজুল হক এবং এসআই (নি:) প্রদীপ বৈদ্য সহ সঙ্গীয় ফোর্স, স্থানীয় জনগণ এবং সাংবাদিকের সম্মুখে বাসটি তল্লাশি করা হয়।
পরবর্তীতে টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহনের বিভিন্ন স্থান এবং যাত্রীদের চেক করাকালে মাসুম বিল্লাহ (২৮), পিতা-মোঃ আলম গাজী, মাতা-রাশিদা বেগম, সাং-শাখরা কমলপুর, থানা-দেবহাটা, জেলা-সাতক্ষীর নামক এক ব্যক্তির আচরণ ও কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হয়।
অতঃপর উপস্থিত বাসযাত্রী ও জনগণের সম্মুখে প্রকাশ্যে তার দেহ তল্লাশীকালে এক পর্যায়ে তার স্বীকারোক্তি মতে তার দুই পায়ে পরিহিত চকলেট রংয়ের জুতা (লোফার) এর ভিতরে সুকৌশলে সাজিয়ে রাখা (৬+৬)=১২ (বার) পিস স্বর্ণের বার, যার প্রতিটি স্বর্ণের বারের ওজন ১১৬.৬৫ গ্রাম প্রায় ও সর্বমোট ওজন ১৩৯৯.৭৪ গ্রাম, যার সর্বমোট মূল্য অনুমান ১,৩৪,৪০,৩০৩/-(এক কোটি চৌত্রিশ লক্ষ চল্লিশ হাজার তিনশত তিন) টাকা উদ্ধারপূর্বক উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
উক্ত গ্রেফতারকৃত স্বর্ণ চোরা চালানকারী মাসুম বিল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জানা যায় সে দীর্ঘদিন যাবৎ এই রুটে স্বর্ণ পাচারের সাথে জড়িত। এর পূর্বেও সে পাঁচবার এই রুট ব্যবহার করে স্বর্ণের চালান পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করেছে।
উল্লেখ্য যে, আজকেও ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে স্বর্ণের বার বাসযোগে সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো এবং সেখান থেকে স্বর্ণ সাতক্ষীরা বর্ডার অঞ্চল দিয়ে ভারতে পাচার করার উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
উল্লেখিত স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে আরও কে কে জড়িত আছে এবং কোথা থেকে স্বর্ণগুলো আনা হয়েছে ও কোথায় পৌঁছে দিবে সেই রহস্য উদঘাটনের জন্য গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ঢাকা ও সাতক্ষীরা প্রান্তের আরও কিছু সংশ্লিষ্ট চোরাকারবারির নাম খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের হস্তগত হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে প্রত্যক্ষদর্শী উক্ত বাসের একজন যাত্রী মোহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদকে জানাই যে উক্ত ব্যক্তি ঢাকা হতে তাদের একজন যাত্রী হিসেবে E-1 সিটে বসে সাতক্ষীরা যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু আমরা বাসে থাকা অন্যান্য যাত্রীগণ বিন্দু পরিমাণ বুঝতেই পারলাম না যে উক্ত ব্যক্তি একজন সোনা কারবারি।হঠাৎ করে খুলনা জিরো পয়েন্ট এলাকায় আমাদের এই যাত্রীবাহী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস কে পুলিশের একটি আভিজেন এক দল সংকেত দেখিয়ে জিরো পয়েন্টের পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায়। এরপরে পুলিশের অভিযানের দলটি গাড়িতে উঠে সকল যাত্রীদের ব্যাগ ও শরীর তল্লাশি নিতে থাকে। তল্লাশির এক পর্যায়ে অভিযানের দল উত্তর চোরাকারবারি ধরতে পারে। আমরা সকল যাত্রীরা হতবাক হয়ে যায়, যে এত পরিমাণে স্বর্ণের বার কিভাবে তার জুতার পাদদেশের নিয়ে কিভাবে উক্ত সোনা চলাচলানকারী চলাফেরা করতে পারে।
খুব শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃত স্বর্ণ চোরা চালানকারীর বিরুদ্ধে লবণচরা থানার মামলা নং-১২, তারিখ-২০/০৪/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা- The Special Power Act, 1974 এর 25 B(1)(A) রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে সোনা চরাচালানে তার নিজের দোষ স্বীকার করেছে।
পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য তাকে আজ ২১-৪-২০২৪ ইংরেজি তারিখ সকাল ১১:৪৫ মিনিটে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী সহকারে উপস্থাপনের জন্য এবং তাহার এ ধরনের সোনা চলাচালানে জড়িত থাকার কারণে বাংলাদেশ আইন অনুযায়ী তার বিচার করার উদ্দেশ্যে বিচারিক আদালতে উপস্থিত করা হইবে।