১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫০ অপরাহ্ন, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
বানারীপাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের ফুলেল শুভেচ্ছায সিক্ত মেনন বানারীপাড়ায় তহশিলদার ও সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ যুবকের আত্নহত্যা, বাড়িতে খালু শ্বশুরের ঘুষি, সালিশে মেম্বারের দেওয়া থাপ্পড় না কি স্ত্রীর ওপর অভিমান বাবুগঞ্জে আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গায় ৫’শ পেঁপে গাছ কেটে দেয়ার প্রতিবাদে কৃষকজোটের মানববন্ধন ও সমাবেশ বাবুগঞ্জে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন গাবখান সেতুর টৌলপ্লাজায় ভয়াভয় দূর্ঘটনায় দায়ী ঘাতক ট্রাকচালক ও সহযোগী আটক মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা গলায় তিল থাকা নারীদের যেসব গুণ থাকে বরিশালে হাসপাতালের প্রিজন সেলে খুনের ঘটনায় ৩ কারা পুলিশ বরখাস্ত
জনগণ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকবে না: নতুন সেনাপ্রধান।

জনগণ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকবে না: নতুন সেনাপ্রধান।

আজকের ক্রাইম ডেক্স
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকালে সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন তিনি।
এদিন সকালে সামরিক রীতিতে জেনারেল আজিজ আহমেদকে বিদায় জানানোর মধ্যদিয়ে নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদকে বরণ করা হয় সেনাসদরে।
সকাল ৯টায় শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। পরে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে এস এম শফিউদ্দিন আহমেদকে র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরানো হয়।
এরপর সেনাসদরে সেনাবাহিনী প্রধানের সচিবালয়ে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান জেনারেল আজিজ আহমেদ ছাড়াও ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সেনাপ্রধানকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন বিদায়ী সেনাপ্রধান।

এ সময় সামরিক রীতিতে গাড়িতে দড়ি বেঁধে কর্মকর্তারা বিদায় জানান জেনারেল আজিজ আহমেদকে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নতুন সেনাপ্রধান বলেন, মুজিব শতবর্ষে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পাওয়া তার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়।
এর আগে গত ১০ জুন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ওয়াহিদা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদকে সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল শফিউদ্দিন উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ সালে মোজাম্বিকে ১৬ মাস শান্তিরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এ ছাড়া ২০১৪-১৬ পর্যন্ত সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক-এ ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে অসামান্য কর্মদক্ষতা প্রদর্শনের জন্য এসআরএসজি কর্তৃক সাইটেশন প্রাপ্ত হোন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল শফিউদ্দিন, বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডিফেন্স স্টাডিজে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এমআইএসটি হতে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজে এমফিল সম্পন্ন করেন।
জেনারেল শফিউদ্দিন বর্তমানে বিইউপিতে পিএইচডিতে অধ্যয়নরত রয়েছেন। তার কর্মজীবনে তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়াদি, শান্তিরক্ষী বাহিনী এবং ডিফেন্স অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সম্পর্কিত বিভিন্ন সেমিনার, সম্মেলন, কর্মশালা ইত্যাদিতে অংশ নিয়েছেন। দেশ ও বিদেশের জার্নালে তার স্বনামধন্য আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল শফিউদ্দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন। উল্লেখযোগ্য দেশসমূহ মোজাম্বিক, সোয়াজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, চায়না, ইউএসএ, শ্রীলংকা, নিউজিল্যান্ড, ভারত, নেপাল, কুয়েত, মালদ্বীপ, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, রুয়ান্ডা, মরক্কো, কঙ্গো, জার্মানি, ফ্রান্স, কেনিয়া, ইউনাইটেড আরব আমিরাত ও থাইল্যান্ড।
সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, ১৯৬৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর খুলনা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর নবম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি হতে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন।
সামরিক কর্মজীবনে স্টাফ, প্রশিক্ষক এবং কমান্ড নিযুক্তিতে কর্মরত ছিলেন। জেনারেল শফিউদ্দিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, একটি পদাতিক ব্রিগেড এবং একটি পদাতিক ডিভিশনসহ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী অপারেশনে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে মাল্টিন্যাশনাল ফোর্স কমান্ডার হিসেবে প্রথম বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন কমান্ডের অনন্য অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন অফিসার। কমিশন পরবর্তী Counterinsurgency অপারেশন এলাকায় যোগদানপূর্বক তিনি তার সামরিক কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে Counterinsurgency অপারেশন এলাকার পদাতিক ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবেও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বিভিন্ন ফরমেশন সদর দপ্তরে সিনিয়র অপারেশনাল এবং প্রশাসনিক স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ প্রশিক্ষক হিসেবে ক্যাডেট কলেজ ও বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সদর দপ্তর আর্টডকের চিফ অব ডকট্রিন ডিভিশন এবং সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে সামরিক প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের পরিচালক হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১২ সালের ৭ মে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করে ১৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সফলতার সঙ্গে ডিভিশন কমান্ড শেষে তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে ডিজি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন জাতিসংঘ সদর দপ্তর কর্তৃক মিনুস্কাতে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত লাভ করেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল শফিউদ্দিন বর্তমান পদবিতে পদোন্নতি লাভের পূর্বে এনডিসি এর এসডিএস (আর্মি-১) এবং লজিস্টিকস এরিয়ার জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জেনারেল শফিউদ্দিন গত ২৫ আগস্ট ২০১৯ তারিখে জিওসি হিসেবে আর্টডকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
জেনারেল শফিউদ্দিন দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন। তিনি চীনের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি (এনডিইউ)’তে আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম কোর্সে অংশগ্রহণ করেন। ২০১০ সালে তিনি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে ডিফেন্স অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ কোর্স, এনডিইউ, চায়না সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ হতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে জেনারেল শফিউদ্দিন বিবাহিত এবং দুই কন্যাসন্তানের জনক।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019