২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স
মুন্সিগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে স্বামী অহিদুল মুন্সী। শুক্রবার (০৪ জুন) দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জোসিতা ইসলামের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
এর আগে শ্রীনগর থেকে দুপুর ১২টার দিকে তাকে সরাসরি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসা হয়। জবানবন্দি গ্রহণের পর আদালত অহিদুল মুন্সীকে জেল হাজতে পাঠায়।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেদায়েতুল ইসলাম ভূঞা জানান, শ্রীনগরে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী অহিদুল। অহিদুলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলের পাশের একটি পুকুর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত কাঁচি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তিনি জানান, ভ্যানচালক অহিদুল মোল্লার সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিলো একই এলাকার রাজা মিয়ার। এরই জের ধরে ২ জুন তাদের মধ্যে ঝগড়া হলে অহিদুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে রাজা। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে অহিদুল।
পরে বুধবার রাতে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে বাড়িতে পুলিশ আসার ভয় দেখিয়ে পালানোর কথা বলে স্ত্রী পারভীন বেগমকে নিয়ে বাড়ির কাছের নির্জন কামলার বিলে যায় অহিদুল। এরপর বগা কাঁচি দিয়ে জবাই করে স্ত্রীকে হত্যার পর পাশের পুকুরে ফেলে দেয় মৃতদেহ। পরদিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপহরণ ও তার স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ করে নাটক সাজায় সে। তবে মরদেহ উদ্ধার, অহিদুলের অসংলগ্ন আচরণ এবং জমি নিয়ে বিরোধের কথা জানতে পেরে সন্দেহ হয় পুলিশের। অহিদুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সব ঘটনা স্বীকার করে সে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত কাঁচিটিও উদ্ধার করা হয়।
অভিযুক্ত অহিদুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে নিহত পারভীনের ভাই মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, তার বোনকে কিভাবে হত্যার করা হয়েছে এই ঘটনাটি শুনে তিনি মামলার বাদী হয়েছেন। তিনি চান তার বোনের হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তিনি আরও জানান, তার বোনের চার সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে গেল কয়েকদিন আগে বিয়ে হয়েছে। এছাড়া অপর ৩টি সন্তান রয়েছে। তারা খুবই ছোট। এই অবুঝ শিশুগুলোর কি হবে তা নিয়েই এখন চিন্তা। বাচ্চাগুলো এখন তাদের হেফাজতে রয়েছে।
ওসি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গৃহবধূর ভাই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা করলে অহিদুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এছাড়া নিহত পারভিনের মরদেহ মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে শ্রীনগরের বাঘাডাঙ্গা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।