বুধবার, ০৩ মার্চ ২০২১, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন
আজকের ক্রাইম নিউজ
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন ঝাঁঝাঁডাঙ্গা গ্রামে গাজা চুরির অপবাদ সইতে না পেরে মধ্য বয়সি এক কৃষক বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে। নিহতের স্ত্রী ছাবিনা বেগম জানান, গ্রামের পাঁচজন গাঁজা ব্যবসায়ীর অত্যাচারে ও হুমকি ধামকিতে আমার স্বামী বাধ্য হয়ে বিষ পান করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে এবং মৃত্যু বরণ করে।
শুক্রবার দুপুরে ময়না তদন্তের পর বিকালে দাফনকাজ শেষ করা হয়েছে। পুলিশ ও নিহতের স্ত্রী ছাবিনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, উপজেলার ঝাঁঝাঁডাঙ্গা গ্রামের চারজন ও নাস্তিপুর গ্রামের একজন মোট পাঁচজন গাঁজা ব্যবসায়ী তার স্বামী আশরাফ আলী (৪০)কে সীমান্ত থেকে গাঁজা নিয়ে শহরে পৌঁছানোর কথা প্রায় সময়ই বলতো। তাদের ভয়ে ও জান বাঁচানোর জন্য কখনো কখনো বাধ্য হয়েই বহন কারি হিসেবে অন্যায় কাজটি করতো বলেও সত্তর বছর বয়সী গ্রামের মুরব্বী খাজের আলী সাংবাদিকদের জানান। ছাবিনা বেগম জানান, ঐ পাঁচজন গত সোমবার সীমান্তের ওপার থেকে প্রায় আধামন গাঁজা আনার কথা বলে আমার স্বামীকে। যেখানে মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখানো হয়েছিল। কিন্তু নিহত আশরাফ আলী রাজি না হলে কখনো প্রকাশ্যে আবার মোবাইলে হুমকি ধামকি সহ পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার কথা বলে।হুমকি ধামকি ও পুলিশের ভয়ে আমার স্বামী বাড়ি ছেড়ে বেশ কয়েকদিন গ্রামের পাশে সীমান্তবর্তী মাঠে রাত কাটাতো। পরে আমার স্বামীকে তারা খুজে না পেয়ে গাঁজা চুরি করে পালিয়েছে বলে অপবাদ ছড়াতে থাকে। আমার স্বামীকে খোঁজ করার কথা বলে বাড়িতে এসেও তারা অত্যাচার করেছে। চুরির অপবাদ, পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে ও গাঁজা ব্যবসায়ীদের অব্যাহত অত্যাচার হুমকি ধামকিতে অবশেষে বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয় মাঠেই বিষ পান করলে ঐদিন সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালে নেয়ার পর শুক্রবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুপুরে ময়না তদন্তের পর ঐদিন বিকেলে গ্রামের কবরস্থানে দাফনকাজ শেষ করা হয়।
দর্শনা থানার ওসি (তদন্ত) শেখ মাহবুবুর রহমান জানান, সদর হাসপাতালে মারা গেলে সদর থানায় মামলা হয়।সে মোতাবেক এখানেও মামলা হয়েছে এবং তদন্ত হবে।
তবে এলাকার সচেতন মহল ও নিহতের পরিবারের লোকজন সাংবাদিক ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জানান, সরকার যেখানে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছেন, সেখানে মাদক সিন্ডিকেট কথিত গড ফাদারদের প্রকাশ্যে ও মোবাইলে হুমকি ধামকিতে সাধারণ একজন মানুষের জীবন প্রদীপ নিভে গেল। এর সুষ্ঠু তদন্ত পুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে বলে সকলেই মনে করছেন। নিহতের স্ত্রী ছাবিনা বেগম জানালেন তার স্বামীর জন্য যদি আমার জীবনটাও চলে যায়, তাতেও আমি রাজি, তারপরেও আজ শনিবার ঐ পাঁচজন গাজা ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করে দর্শনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।