২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০৮ অপরাহ্ন, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
খোলা চিঠি
দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তেজগাঁও, ঢাকা।
বিষয়: বেতন ও প্রণোদনা অনিশ্চয়তায় আধ্যহারে-অনাহারে দিন কাটছে বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের।
করোনা ভাইরাসের কারণে দিন-দিন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সাথে মৃত্যু।সরকারের পক্ষ থেকে সকল পেশার মানুষকে ঘরে থাকার উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।সেই সাথে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এতে করে সরকারের অনুদান প্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিপাকে না পড়লে ও ,
বিপাকে পড়েছে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, সতন্ত্র এবতেদাবী মাদ্রাসা শিক্ষকরা ও নন-এমপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
বিশেষ করে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পযন্ত্র কোন সহায়তায় , ব্যবস্থা না হাওয়ায় মানবেতর জীবন কাটছে তাদের।
বেতন ভাতা না থাকায় জীবন-যাপনের জন্য এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা পাঠদান শেষে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ছিলো।করোনা ভাইরাসের কারণে তাও বন্ধ।
কর্মহীন হয়ে পড়ায় স্ত্রী সন্তান মা বাবা পরিবার-পরিজন নিয়ে মহা -বিপদে পড়েছেন তারা।
যেখানে বেসরকারি শিক্ষকদের নূন আনতে পানতা ফুরায় সেখানে দীর্ঘ-দিন কর্ম না থাকায় আধ্যহারে অনাহার ঘরে থাকতে হচ্ছে তাদের।
হে মান্যবর প্রধানমন্ত্রী
আপনি মানবতার মা।এই দেশের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আপনি ও আপনার পরিবারের যে ত্যাগের নজির রয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।দেশের মানুষকে ভালো রাখতে দিন-রাত চেষ্টা করে যাচ্ছেন।দেশের সবচে বেশি পরিশ্রমী মানুষ এখন আপনি।করোনা মোকাবেলায় আপনার উদ্যোগ শ্রম ও তৎপরতা বিশ্বে প্রশংসিত।
এই সংকট-কালে নানা খাতে প্রণোদনা ঘোষণা করে ইতোমধ্যেই আপনি সংকটাপন্ন মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন।
একজন উদার ,মানবিক, জন-দরদি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
এই সংকটকালে দেশের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে শিক্ষাখাত।
কওমী মাদ্রাসা প্রণোদনার আওতায় আসলেও ; এখনো প্রণোদনা বাহিরে আছে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা,সতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা ও নন-এমপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি অংশ সরকারি বেতন ভাতা পেলেও আর একটি অংশের কপালে জোটেনি বেতন ভাতা ।করোনা সংকটে ও জোটেনি প্রণোদনা ও রেশন।
অথচ আর কদিন পর মুসলমানদের সবচে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলো ঈদ-উল – ফিতর।
বেসরকারি শিক্ষকরা ঈদ-উল-ফিতরে না পারবে কিছু কিনতে ,না পারবে ভালো মত খেতে।তাই জরুরি ভিত্তিতে এই শিক্ষকদের বেতন ভাতা ও প্রণোদনার সবিনয় অনুরোধ করছি।
হে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী
আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে,০১জুলাই১৯৭৩সনে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩৬,১৬০টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন।জাতি গঠনের নিপুন কারিগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অভিভাবক হয়ে হ্নদয়ে চির -স্বরনীয় হয়ে আছেন।
এরপর , অনেক সরকার ক্ষমতায় থাকলে ও কেউ আর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেননি।
আপনি ,আপনার বাবার মত বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্ব হাতে নিয়েই বাঙালী জাতির শিক্ষার মুল ভিত্তি মজবুত করার লক্ষ্যে ০৯জানুয়ারি২০১৩সনে-২৬,১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে জাতীয়করণ কালীন ২৬,১৯৩টি বিদ্যালয়ের মাঠ পর্যায় থেকে যে , পরিসংখ্যান আপনার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো তাহার সংখ্যা যথাযথ না হওয়ায় প্রায়-৪১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণে বাহিরে রয়ে যাই।এই বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের জন্য বিভিন্ন সময়- শিক্ষক সমাবেশ, আন্দোলন সংগ্রাম, মানববন্ধন, স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।
জাতীয়করণ কালীন যে,০১টি জাতীয় স্বারক (৪৯৯)করা হয়েছিলো সেই স্বারককে এই বিদ্যালয়গুলো যাচাই-বাছাই হলেও আজও জাতীয়করণের মুখ দেখেনি ।তাই এই বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের জন্য আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পাশাপাশি এই সংকটকালে সকল শিক্ষককের জন্য প্রণোদনা ও রেশনের অনুরোধ জানাচ্ছি।
নিবেদক
মোঃ মামুনুর রশিদ খোকন
সভাপতি
বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, ঢাকা।
মোবাইল-০১৭৩৮০৩১৯১৩।