২১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪২ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ছারছীনার পীর সাহেব হুজুরের বরিশাল আগমন উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় উদ্ধার হওয়া তিনটি তক্ষক বনায়ন ও নার্সারি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বাগানে অবমুক্ত ফাতেমা জোহরা আদিবার আন্তর্জাতিক সাফল্য; অস্ট্রেলিয়ার নিবন্ধিত আর্কিটেক্ট স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ
প্রশাসন কে তোয়াক্কা না করেই বাকেরগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলন

প্রশাসন কে তোয়াক্কা না করেই বাকেরগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলন

বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই কারখানা নদী থেকে ইজারা ছাড়াই অবাধে বালু উত্তোলন করছেন কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার এবং হুমকির মুখে পড়েছে কারখানা নদীর পার্শ্ববর্তী চরের বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কারখানা নদী থেকে ইজারা ছাড়াই অবৈধ বালু উত্তোলন করছেন স্থানিয় চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বাদল তালুকদারের নেতৃত্বে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। নদীর এক অংশে নলুয়া ইউনিয়ন অপর অংশে কবাই ইউনিয়ন। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, বছরের পর বছর ধরে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নিয়ম উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বালু তুলছেন। অবাধে বালু উত্তোলনের কারণে ফসলি জমি সহ আমাদের বাড়ি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের হাত থেকে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষার জন্য উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি আমরা।

অনুসন্ধানে জানাযায়, সরকারি নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও সেগুলো অমান্য করে নিজেদের ইচ্ছে মত বালু তুলছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল। ইজারা দেয়া বালু মহালের সরকারি নির্দিষ্ট সীমারেখার বাইরে গিয়ে বালু তোলায় ক্ষতিগ্রস্ত নদী ও এর আশপাশের জনপদ। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছর নদী গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর জমি,বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ ভেরি বাঁধের। নদী ভাঙ্গন রোধে জনপ্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই নজরদারি।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় ৩ টি বৈধ বালু মহল রয়েছে। বোয়ালিয়া খয়রাবাদ,দক্ষিণ নারাঙ্গল,দূর্গাপাশা। অথচ অবৈধ ভাবে ইজারাদার নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে বালু উত্তলন করে আসছে বছরের পর বছর। এই বালু মহাল থেকে অবৈধভাবে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন হলেও বিপুল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অপরদিকে ইজারা না থাকা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে যে পরিমান বালু উত্তলন করা হয়েছে তাতে গত ৫ বছরে সরকার রাজস্ব হারিয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ মহালটি ইজারার জন্য প্রতি বছর বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়ে ৫০ জন সদস্যের ভয়ংকর সিন্ডিকেট তৈরি করে নিজেরা প্রতি বছর ইজারা এনে তাদের ইচ্ছে মত বালু উত্তলন করে আসছে। এ সুযোগে বিনা ইজারায় ওই প্রভাবশালী চক্রটি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকার। শুধু এখানেই শেষ নয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের কয়েক ডজন নেতার ও ক্যাডার বাহীনি রয়েছে শেয়ার হিসেবে বালুমহল নিয়ন্ত্রণ করতে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তবুও অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের অথবা স্থানের সঠিক কোনো তালিকা নেই সংশ্লিষ্ট কারো কাছেই। উপজেলা প্রশাসনের তালিকায় তিনটি বালু মহাল থাকলেও, প্রায় ১৫/২০ স্থান থেকে অবৈধ ভাবে তোলা হয় বালু।

বালু মহালগুলো সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকার থেকে যে নির্দিষ্ট সীমানা রয়েছে, তা অতিক্রম করে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো যে কোনো স্থান থেকে ইজারাদাররা প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে চলেছেন। বিভিন্ন সময় উপজেলা প্রশাসন থেকে এদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করলেও কোনোভাবেই অবৈধ বালু উত্তোলন থামানো যাচ্ছে না। দরপত্রের শর্তে আবাসিক এলাকা, মহাসড়কের কাছাকাছি, ব্রিজের কাছাকাছি, নদীর ভাঙ্গন কুল, এলাকার মধ্যে বালু উত্তোলন করা যাবে না নির্দেশনা থাকলেও, ইজারাদার তা অমান্য করে একাধিক নদী থেকে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।

অপরদিকে, উপজেলার বালু মহাল নির্ধারিত স্থান থেকে বালু উত্তলন না করে অবৈধ বালু উত্তোলন করায় বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ইজারাদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না। সাধারন ড্রেজার শ্রমিকদের অর্থদণ্ড ও বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে আসছে। ইজারা ছাড়াই ইউপি চেয়ারম্যান বাদল তালুকদার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। কবাই ইউনিয়নে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নদী থেকে বালু তুলে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আশপাশের ফসলি জমি ও বসতভিটা। নদীর দুই কুলের চর অঞ্চলবাসী হারিয়েছেন তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ভিটেমাটি।

অভিযুক্ত কবাই ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক বাদল তালুকদার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি নয় অনেকেই এসব নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।

এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের ছাড় দেয়া হবে না। অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019