২২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়াঘাট(দিনাজপুর)
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট বুলাকীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার আব্দুস সাদেকের বিরুদ্ধে খাজনার নামে অতিরিক্ত ঘুষ আদায়ের ্অভিযোগ তদন্তের ৭ দিন ্অতিবাহিত হলেও বিচার পাননি উপজেলার কালুপাড়া গ্রামের আদিবাসী মৃত, সুফল মুরমুর ছেলে সিদা মুরমু।উপজেলা নির্বাহী ্অফিসার মোঃ রাফিউল আলম শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং ঘুষের টাকা ফেরত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিযোগকারী সিদা মুরমুকে। সিদা মুরমু গত ২৫ মে তারিখে তহশীলদার আব্দুস সাদেকের বিরুদ্ধে খাজনার নামে অতিরিক্ত ঘুষ আদায়ের ্অভিযোগ করেন। ্অভিযোগটি তদন্ত করে গত ৩০ মে তারিখে উপজেলা পরিষদে উভয় পক্ষের শুনানী শেষে উপজেলা নির্বাহী ্অফিসার মোঃ রাফিউল আলম শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং ঘুষের টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য অভিযোগকারী সিদা মুরমুকে পরামর্শ দেন।
উপজেলার বুলাকীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চলছে তুঘলুকী কান্ড। খাজনার নামে অতিরিক্ত ঘুষ আদায় করছেন তহশীলদার আব্দুস সাদেক। চোর ডাকাতেরা রাতের বেলায় চুরি ডাকাতি করে। বুলাকীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার সরকারি চেয়ারে বসে জনসাধারণের হয়রানি এবং বিভিন্ন কায়দায় ঠান্ডা মাথায় মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে জনসাধারণের দিন দুপুরে ডাকাতি করে যাচ্ছে। অত্র ভুমি অফিসে বর্তমান তহশীলদার,পিয়ন মোরশেদুল হক, পিয়ন পুত্র মানিক ও হরিপাড়া পোষ্ট মাষ্টার জিয়াউর রহমানসহ একটি চক্র জনসাধারণের নিকট হতে অবাধে খাজনার ইতরিক্ত ঘুষ গ্রহন করছে। ভুমি মালিকগন খাজনা পরিশোধ করিতে গিয়ে নানা রকম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ্অথচ বলার এবং দেখার কেউ নাই। সরকারি চেয়ারে বসে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন কৌশলে অবাধে ঘুষ গ্রহন করছেন।
আদিবাসী মৃত, সুফল মুরমুর ছেলে সিদা মুরমু তার জমির খাজনা পরিশোধ করতে গিয়ে পড়েন পিয়ন মোরশেদুল হক, পিয়ন পুত্র মানিক ও হরিপাড়া পোষ্ট মাষ্টার জিয়াউর রহমানের খপ্পড়ে। তিনি প্রথমত তহশীল ্অফিসের পিয়ন পুত্র দালাল মানিক ও পোষ্ট মাষ্টার জিয়াউর রহমানকে, তারা জানান,অনলাইন করতে ১০০ টাকা দিতে হয় । তারপর খতিয়ান না থাকিলে পিয়ন মোরশেদুল ২০০টাকা জরিমানা নিয়ে খসড়া অনুলিপি দেন। তহশীলদার রেজিষ্টার খাতা দেখে, তোমার হাল সন পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করতে ৬ হাজার টাকা দিতে হবে। ভূমির মালিক সিদা মুরমু বলেন, এত টাকা কেন পরিশোধ করতে হবে জানতে চাইলে উত্তরে তহশীলদার বলেন, আপনার জমির উপর সার্টিফিকেট কেস হয়েছে। অচিরেই জমি নিলাম হবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। অতপর তহশীলদার পিয়ন পুত্র মানিকের সাথে সিদা মুরমুকে যোগাযোগ করতে বলেন।
সিদা মুরমু মানিকের সরনাপন্ন হলে মানিক সিদা মুরমুকে বলেন, তহশীলদার যা বলেছেন তাই লাগবে। তবে আমি বলে দিলে ৩ হাজার টাকায় তহশীলদারকে রাজি করাতে পারব। তবে খাজনার রশিদে কত টাকা উঠাতে হবে তাতে আপনি কোন আপত্তি করতে পারবেননা। তখন অসহায় সিদা মুরমু রাজী হয়ে গরু ছাগল ও বিভিন্ন জিনিষ পত্র বিক্রি করে ৩ হাজার টাকা তহশীলদারকে দেন। তহশীলদার ৫৩০ টাকার খাজনার রশী কেটে দিবেন বলে ১৮/২০ হাজার টাকা দাবি করে বসেন।
অপর দিকে একই কায়দায় পিয়ন পুত্র মানিক বলেন, ১২ হাজার টাকা দিলে আমি তহশীলদারকে রাজি করাতে পারব। কয়েকদিন পর ১২ হাজার টাকা তহশীলদারকে দিলে তিনি ২ হাজার ৫৯০ টাকার খাজনার রশীদ কেটে দেন। ্ভুক্তভোগী সিদা মুরমুর ন্যায় একইভাবে অনেকেই খাজনা পরিশোধ করতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা দাবী করায় তারা সরকারি খাজনা পরিশোধ করতে পারছেন না।
তহশীলদারের দুর্নীতির কারণে সাধারণ জনগণ এভাবে আর্থিক ক্ষতির স্বীকার হচ্ছেন। এখানে বলার কেউ এবং দেখার কেউ নাই। উক্ত পিয়ন পুত্র মানিক অনেক সম্পদের মালিক হয়েছে। ঘুষের টাকা দিয়ে দুই লক্ষ টাকার মটর সাইকেল কিনে রাজপুত্রের মত জীবনযাপন করছে এবং অধিক মূল্যের জমি খরিদ করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করতেছেন। বুলাকীপুর হরিপাড়া তহশীলদার আব্দুস সাদেক ও পিয়ন মোরশেদুলকে অন্যত্র বদলীসহ শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তহশীল অফিস দালালমুক্ত ও ঘুষ এবং দুর্নীতি মুক্ত করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।