০৪ মে ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
গৌরনদীতে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ: ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম তেঁতুলিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত জীবননগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাগণের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত আগৈলঝাড়ায় বিএনপি’র আহ্বায়ক রেজা ও যুগ্ম আহ্বায়ক লাভলু ভাট্টির দল থেকে পদত্যাগ চুয়াডাঙ্গায় বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৯ বাড়ি শেষ তিন বছর পর জামিনে কারামুক্ত মামুনুল হক দেশজুড়ে টানা বৃষ্টির সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস পাওনা টাকা না পেয়ে বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে, অতঃপর… সাংবাদিককে হুমকি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়: মিলার দামুড়হুদায় কনের বাড়িতে ভ্রাম্যমান আদালত, খাবার পেল এতিমখানা
স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘নির্লজ্জ’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগের দাবি সংসদে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘নির্লজ্জ’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগের দাবি সংসদে।

অনলাইন ডেস্ক
স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অনিয়ম, অক্সিজেন সংকটে বিভিন্ন হাসপাতালে মানুষের মৃত্যু, করোনা চিকিৎসায় চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠেছে সংসদে।

সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের পদত্যাগ দাবি করেন। এসময় তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘নির্লজ্জ’ বলে আখ্যায়িত করেন।

শনিবার (৩ জুলাই) সংসদের পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ দাবি করেন তারা।

বক্তৃতার শুরুতে বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মুহম্মদ সিরাজ আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। বগুড়া-৬ আসনের এমপি সিরাজ বলেন, বগুড়া এখন করোনার হটস্পট। গত তিনদিনে সেখানে ২৪ জন মারা গেছেন। সেখানে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সংকট। সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেই। জেলার তিনটি কোভিড হাসপাতালে করোনা রোগীতে ঠাসা।’

জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘সেদিন সংসদে আমি সার্জিক্যাল মাস্ক কেনা নিয়ে কথা বলেছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেটা তদন্ত করবেন। বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বললেন, এটি সত্য নয়। এজন্য আজকে আমি তথ্য-প্রমাণ নিয়ে এসেছি। সংসদীয় কমিটি বিষয়টি আলোচনা করেছে, দুদকে গেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। সত্য বিষয়টি এড়িয়ে না গিয়ে উনার তদন্ত করা উচিত ছিল। তাই আমার দাবি, এ বিষয়ে তদন্ত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘করোনা অত্যন্ত মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সব জায়গায় সেনাবাহিনী নামিয়ে এটা প্রতিরোধ করতে হবে। পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।’

জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘জিজ্ঞেস করলেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব দিচ্ছি। কিন্তু কোথাও কিছু নেই। এভাবে আমরা একটা বছর সময় নষ্ট করেছি। আমাদের সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব দিলে, অর্থ দিলে আমরা সবকিছু ঠিক করে দিতে পারতাম। কিন্তু আমাদের ওপর দায়িত্ব নয়। দায়িত্বে যারা আছেন, তারা তো দু’দিন পরে চলে যান। জবাবদিহিতা তো তাদের নেই।’

তিনি বলেন, ‘আইসিইউ বেড আছে। কিন্তু প্রশিক্ষিত ডাক্তার-নার্স নেই। অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ রোগী অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন। বিভিন্ন ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়। কিন্তু কোনো তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আজ পর্যন্ত আমাদের সামনে আসেনি। মানুষের জীবনের কি কোনো দাম নেই? করোনা তো এখন সারা বিশ্বেই রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসায় কী এ ধরনের অনিয়ম মানা যায়।’

তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরায় অক্সিজেনের অভাবে সাতজন কোভিড রোগী এক ঘণ্টার মধ্যে ছটফট করতে করতে মারা গেছেন। আগের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হকের বাড়ি সেখানে। সেখানকার হাসপাতালটি ফাইভ স্টার মানের হওয়া উচিত ছিল। মন্ত্রী যান, মন্ত্রী আসেন। কিন্তু নিজের এলাকাটাও ঠিক রাখতে পারেন না।’

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বললেন, এক বছরে নাকি অনেক কাজ করেছেন। আজকের খবর আসছে, বাংলাদেশের ৩৭টি জেলায় অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালে পাঁচজন রোগী অক্সিজেন পায় তো ২০ জন লাইনে থাকে। কেবল অক্সিজেনের কারণে যারা ছটফট করে মারা যাচ্ছেন। পত্রিকায় এত লেখালেখি হচ্ছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী একটি হাসপাতালে গিয়ে এগুলো দেখেছেন। তিনি কি করেন? তিনি জুম মিটিং করেন।’

কোভিড চিকিৎসার সময় নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার কারণে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনন্দে আত্মহারা হয়ে একটি কিস (চুমু) করার কারণে তাকে রিজাইন (পদত্যাগ) দিতে হয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে কি মানুষ! বুঝলাম না। উনার লজ্জা-শরম কিছু নাই। চরিত্র নেই। উনার রিজাইন দেয়া উচিত।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘উনি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) বলেছেন, আপনারা তো হাসপাতালের চেয়ার। মেশিন চলে না, লোক লাগবে এগুলো তো আপনাদের দেখতে হবে। কিন্তু আপনারা তো দেখেন না। নার্স, ডাক্তার যন্ত্রপাতি লাগলে আপনাদের বলতে হবে। অভিযোগ দিলে তো হবে না। এগুলোর ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু আপনাদের বলতে হবে। চেয়ারম্যান হিসেবে এগুলো দেখার দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তায়। উনার বক্তব্যে মনে হচ্ছে, কোনো এমপিই দাযিত্ব পালন করেন না। অথচ আমি হাসপাতালের চিকিৎসকসহ লোকবল নিয়োগের জন্য উনার দফতরে গিয়েছি। এ বক্তব্য আপত্তিজনক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী গোটা হাউসকে অপমান করেছেন। তার বক্তব্য এক্সপাঞ্জ হওয়া দরকার।’

করোনা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যেভাবে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে এটা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।’

এমপি হারুন বলেন, ‘ক্ষুধা দারিদ্র্যের কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে। সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। সামনে ঈদুল আজহা। এ জন্য গরিব মানুষের জন্য দ্রুত খাদ্য দেয়ার দাবি করছি। কোরবানির পশু পরিবহন ও কেনাবেচায় শিগগিরই সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে হবে। না হলে এটা নিয়েও সংকট তৈরি হবে।’

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019