২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি॥
সন্ধ্যা কোন এলোকেশী তরুনীর নাম নয়। সন্ধ্যা একটি রাক্ষসী নদীর নাম যার
গর্ভে ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে বানারীপাড়া উপজেলার বিস্তীর্ন জনপদ।
একমাত্র সম্বল ভিটে মাটি ও ফসলী জমি হারিয়ে নিঃস্ব ও রিক্ত হয়ে পড়েছে
শতশত পরিবার। সবকিছু হারিয়ে অনেকেই এখন বেছে নিয়েছেন যাযাবর জীবন।
বানারীপাড়ায় অনিয়মতান্ত্রিক ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে রাক্ষুসে
সন্ধ্যা নদীর ভাঙন তীব্র রূপ ধারণ করেছে। বালু উত্তোলনের কারনে ভাঙছে
নদী, পুড়ছে কপাল, কাঁদছে হাজারো মানুষ। আর কপাল খুলে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ
বনে গেছেন সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী মহল। অনিয়মান্ত্রিকভাবে যত্রতত্র
ভাবে বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে নদী শাসন বিষেষজ্ঞরা জানান নদীর যে স্থানে
ভাঙ্গন তীব্ররূপ ধারণ করছে সেই স্থান থেকে বালু উত্তোলন করলে নদীর গভীরতা
আরও বৃদ্ধি পেয়ে আশপাশের এলাকাও ভাঙ্গন’র কবলে পতিত হয়। বালু দস্যুদের
কারনে ইতিমধ্যে সন্ধ্যা নদীর তীরবর্তী উপজেলার উত্তর নাজিরপুর, দক্ষিন
নাজিরপুর, দান্ডয়াট, শিয়ালকাঠি, জম্বদ্বীপ, ব্রাক্ষ¥নকাঠী, কাজলাহার,
ডুমুরিয়া, ইলুহার, ধারালিয়া,বাসার, নলশ্রী, মসজিদবাড়ি, গোয়াইলবাড়ি,
খোদাবখসা, কালির বাজার,চাউলাকাঠি, মীরেরহাট ও খেজুরবাড়ি গ্রামের কয়েক শত
একর ফসলি জমি,অসংখ্য বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল,কলেজ,
মাদ্রাসা,মসজিদ ও মন্দির সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলিন হয়ে
গেছে।উপজেলার ইলুহার বিহারীলাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়,মিরেরহাট ও জম্বদ্বীপ
সাইক্লোন শেল্টার যে কোন সময় নদী গ্রাস করে ফেলতে পারে। হুমকির মুখে
রয়েছে খেজুরবাড়ি আবাসন ও উত্তর নাজিরপুর গুচ্ছ গ্রাম। ভাঙনের কারনে বসত
ঘর, ভিটামাটি ও ফসলি জমি সহ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব ও রিক্ত হয়ে পড়েছে শত
শত পরিবার। উল্লেখিত গ্রামগুলো মানচিত্রে থাকলেও নদী গ্রাস করে ফেলায়
গ্রাম গুলো বাস্তবে নেই। চলতি বর্ষা মৌসুমে বিশেষ করে প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড়
আম্ফানের কারনে নদীর পানি বৃদ্ধি ও জলোচ্ছ্বাসের কারনে পূনরায় নতুন করে
ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। ২৮ মে একরাতে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের মসজিদ
বাড়ি গ্রামের দাসেরহাট এলাকার ১৬ টি পরিবারের বসভিটা নদী গ্রাস করে
ফেলেছে। এছাড়া বাইশারী ইউনিয়নের উত্তর নাজিরপুর গ্রামে ভাঙনের ফলে উপজেলা
পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুকের বাড়ি যেকোন সময় নদী গর্ভে
বিলীন হয়ে যেতে পারে।এদিকে রবিবার বিকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে
আলমের নেতৃত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো.
হারুন-অর রশিদ ও নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্ল কুমার সেন মসজিদবাড়ি গ্রামের
দাসের হাট এবং বাইশারী ইউনিয়নের উত্তর নাজিরপুর ও শিয়ালকাঠি গ্রামের
ফেরীঘাট সংলগ্ন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শণ করেন। এ প্রসঙ্গে বরিশাল-২
আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে
আলম বলেন নদীর ভাঙন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ###