২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ
বাংলাবান্ধা-পঞ্চগড় মহাসড়কে বালু-পাথরের ব্যবসা ট্রাক-লোড আনলোড জনসাধারণের চলাচলে দূর্ভোগ সহ বড় ধরণের সড়ক দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।
বাংলাবান্ধা-পঞ্চগড় ব্যস্ততম মহাসড়কের দু’ধারে একাধিক স্থানে বালু-পাথর স্তুপ করে ব্যবসা করা হচ্ছে। এসব ব্যবসায়ী মহাসড়কের ধার সহ বিদ্যালয়ের পাশেও পাথর-বালু স্তুপ করেছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর নিজবাড়ী, জেমকন খাম্বা লিমিটেড, বুড়াবুড়ি বাজার, দরগাসিং থেকে খয়খাটপাড়া, রণচন্ডি, ভাদ্রুবাড়ী, ইসলামপুর এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউ’পি, জগদল বাজারের পাশে চৈতন্যপাড়া, ঠুটাপাগরী, বোর্ডবাজার, দশমাইল নামকস্থানে যত্রতত্র সড়কের উপর দুপাশে বালু-পাথরের স্তুপ করা হয়েছে। সড়কের ধারে বালু-পাথরের স্তুপ সাইটে মহাসড়কের উপর দিন-রাতে হাইওয়ে পুলিশকে তোয়াক্কা না করেই ট্রাক লোড-আনলোডিং করে জমজমাট ভাবে ব্যবসা চলছে। এছাড়া বুড়াবুড়ি বাজার, ভজনপুর বাজার ও তিরনইহাট-বাংলাবান্ধা দালাল অফিসের সামনে সড়কের দুপাশে লোড-আনলোডের ট্রাকের দীর্ঘ লাইন। সারিবদ্ধ সড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক দেখলে মনে হয় মহাসড়কটি যেনো ট্রাক স্ট্যান্ড পরিণত হয়েছে। সড়কের উপর বালু-পাথর লোড-আনলোডিং সহ দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের কারণে জনসাধারণ ও স্কুল-কলেজ গামী ছাত্র-ছাত্রীসহ ছোট যানবাহনের চলাচলে ভীষণ দূর্ভোগ পোহাতে হয়। সড়কের উপর বালু-পাথর লোড-আনলোডিং করায় ধুলোবালি বাতাসে উড়ে জনসারণের চোখে মুখে পড়ছে। ট্রাকের দীর্ঘ লাইন থাকায় ছোট যানবাহনগুলো চলাচলে নানামুখী সমস্যার পাশাপাশি ছোট বড় দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
বিগত ২০১৮ সালে পঞ্চগড়- বাংলাবান্ধা মহাসড়কের দশমাইল নামক স্থানে জমে থাকা একটি ট্রাকের কারণে মিনিবাসের সংগে পোলবাহী ট্রাকের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে প্রায় ১৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। এছাড়া ২০২৩ সালের শেষ দিকে বোর্ড বাজার, জগদল বাজার, মাগুরমারী, ভজনপুর করতোয়া ব্রিজের পূর্ব-উত্তর বাঁকে, মাঝিপাড়া শালবাহান রোড, সিপাইপাড়া ও রণচন্ডি বাজার নামকস্থানে ট্রাক ও মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় বেশ ক’জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এরপরও সড়ক ও জনপথ বিভাগ, হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের চোখে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এক শ্রেণির পাথর-বালু ব্যবসায়ী সড়কের দু’ধারে এবং সড়কের উপর অবৈধভাবে ট্রাক লোড-আনলোডিং বালু-পাথরের ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সূজন) পঞ্চগড় জেলার সভাপতি, এ, কে, এম ফজলে নূর বলেন, বাংলাবান্ধা-ঢাকা মহাসড়কের দু’ধারে একাধিক স্থানে বালু-পাথরের স্তুপ করে ব্যবসা করায় জনসাধারণের চলাচলে দূভোর্গসহ ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটছে। সড়কের দু’ধারে বালু-পাথরের স্তুপ অপসারণের জন্য জেলা প্রশাসনের আশু দৃষ্টি কামনা করছি।
তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, হাইওয়ে পুলিশ টহলের সময় সড়কের উপর কোন ট্রাক লোড-আনলোডিং করে না। পাথর-বালু ব্যবসায়ীরা রাতের আধারে সড়কের ধারে পাথর ফেলে স্তুপ করছে। হাইওয়ে পুলিশ টহলে থাকাবস্থায় ব্যবসায়ীদের সড়কের উপর থেকে পাথর-বালু সরায়ে নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু কোনভাবেই বিষয়টি দমানো যাচ্ছে না।
এব্যাপারে পঞ্চগড় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের দুপাশে পাথর-বালু ব্যবসায়ীদের একাধিকবার অপসারণের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পরও মানছে না। এখন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনী সহযোগিতা পেলে সড়কের ধারে অবৈধ পাথর-বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে।