২১ নভেম্বর ২০২৫, ০২:২০ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
জামাল কাড়াল, বরিশাল
বরিশাল নগরীর ভাড়া বাসা থেকে মো. মহিউদ্দিন (৫৫) নামের এক স্কুল শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) গভীর রাতে নগরীর করিম কুটির মসজিদ গলির স্মরণিকা ভিলা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।মো. মহিউদ্দিন নগরীর হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। বিমানবাহিনীর কমিশন অফিসার থেকে অবসরের পর তিনি শিক্ষকতায় যোগ দেন। তিনি উজিরপুর উপজেলার হরিদ্রাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ মাঝির ছেলে। মহিউদ্দিন স্মরণিকা ভিলার নিচ তলায় ভাড়া বাসায় একা বসবাস করতেন, তার স্ত্রী আট বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে অন্য বাসায় থাকতেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, নিচ তলার বাসাটির খোলা জানালা দিয়ে দুপুরের পরও তাকে বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। রাত পর্যন্ত একই অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখে ৯৯৯ কল করে বিষয়টি জানান তারা। পরে পুলিশ গিয়ে খাটের উপর তাকে মৃত অবস্থায় পায়মৃতের ছোট ভাই বরিশাল বিএম স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুলের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে কিছুদিন আগে মহিউদ্দিন ভাই বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং সাংবাদিকদেরও জানিয়েছেন। এজন্য তাকে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। অনেকে তো আমাকে গিয়েও হুমকি দিয়েছে যেন ভাইকে স্কুল থেকে চলে যেতে বলি।’কয়েক মাসে মহিউদ্দিনকে বহিরাগত লোকদের দিয়ে মারধর করা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এসব ঘটনা ভাই পরিবারের কাউকে বলতে চাইতো না। নিজেই একা সমাধান করতে চাইতো। কিন্তু আমাদের ধারণা ওনার আকস্মিক মৃত্যুর সঙ্গে বিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ করার বিষয় জড়িত রয়েছে।’তিনি আরও বলেন, তার ভাইয়ের মৃত্যু অস্বাভাবিক বলেই তাদের মনে হচ্ছে। এ ঘটনায় পরিবারের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনের দিকে এগুবেন।মহিউদ্দিনের বড় ভাই ও পিরোজপুর জিলা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জসিম উদ্দীন বলেন, আমার ভাইয়ের হঠাৎ মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না। তাকে হত্যা করা হয়ে থাকলে আল্লাহ যেন হত্যাকারীর বিচার করেন। মহিউদ্দিনের মৃত্যুর খবর আমরা সবাই পেয়েছি, ওর স্কুলের সবাইকে জানিয়েছে কিন্তু তারা কেউ আসল না।’ওসি মিজানুর বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।স্বজনরা যদি অভিযোগ দেন সেই অনুযায়ী তদন্ত করা হবে বলেও জানান ওসি।