২৫ Jun ২০২৫, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, ২৮শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি, বুধবার, ১২ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল: বরিশালের বানারী পাড়া ৬৮ নং দক্ষিণ নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদা ইয়াসমিন এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন খালেদা ইয়াসমিন। বিগত ইংরেজি 24 2-1999 তারিখ হইতে 16/1/2003 তারিখ পর্যন্ত ঝালকাঠি জেলার অন্তর্গত ঝালকাঠি সদর উপজেলাধিন ১ নং জুতিয়া বড় এক সারা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। যাহার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি উপজেলা শিক্ষা অফিসার কোন্দকার জসীমউদ্দীন আহমেদ সেখানে সহকারি শিক্ষক খালেদা ইয়াসমিন এর একটি সার্ভিস বুক রয়েছে। খালেদা ইয়াসমিন ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলা দিন ১ নং জুতিয়া বড় এক সারা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায়।কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে সরাসরি বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলাধীন পশ্চিম চাখার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন। যার সত্যতা স্বীকার করেছেন বানারীপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খগো পতি রায় এবং খালেদা ইয়াসমিনের প্রধান শিক্ষক হিসেবে আরেকটি সার্ভিস বুক রয়েছে। সরকারি চাকুরীর বিধান মতে একই ব্যক্তির দুটি সার্ভিস বুক থাকা বেআইনি তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে যদি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হতেন তাহলে তার পূর্ববর্তী চাকুরীর কথাটি বর্তমান সার্ভিস বুকে উল্লেখ করা থাকতো। বর্তমান সার্ভিস বুকে পূর্বের চাকরির কোন কথা উল্লেখ নেই। যেহেতু খালেদা ইয়াসমিন ১৬/১ /২০০৩ পর্যন্ত জুতিয়া বড় এক সারা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং ১৯/ ১/ ২০০৩ সালে বরিশালের বানারীপাড়া চাখার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রথম যোগদান করেন। তিন দিনের ভিতর একটি সরকারি চাকরি ছেড়ে আরেকটি চাকরিতে যোগদান করা কোনভাবেই সম্ভব নয় এর দ্বারা প্রমাণিত হয় তিনি তথ্য গোপন করে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন। এদিকে খালেদা ইয়াসমিন ৬৮নং দক্ষিণ নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একনাগরে ২১ বছর চাকরি করার সুবাদে তিনি স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছেন নিজের ইচ্ছামত বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য হিসেবে কখনো নিজের স্বামী কখনো শ্বশুর কখনো ভাসুরকে দাতা সদস্য করেছেন অথচ তারা বিদ্যালয় কোন জমি দান করেননি এটা একদমই বেআইনি। এরকমভাবে সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যালয়ের অ্যাড হক কমিটিতে দাতা সদস্য হিসাবে মো: সাইফুর রহমান মিন্টুকে দাতা সদস্য করেন কিন্তু তিনিও বিদ্যালয়ে কোন জমিদান করেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে জোইনিক এক ব্যক্তি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর দাতা সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে 9/4/2025 তারিখে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাডহক কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে সাইফুর রহমান মিন্টুর দাতা সদস্য পদ বাতিল করেন। এছাড়াও খালেদা ইয়াসমিন এর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, পুরাতন ভবন, গাছ বিক্রি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে বাজে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক উপজেলা প্রাথমিকশিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। সেই অভিভাবককে খালেদা ইয়াসমিন বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেছেন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এদিকে গত ২০/৪/২০০২৫ বানারি পাড়া পৌরসভার দুই নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাংবাদিক নাঈম মোঘল প্রধান শিক্ষক খ খালেদা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ায় চাকুরিচুতো করন প্রসঙ্গে সচিব প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষ অধিদপ্তর, উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ব্যাপারে অভিযোগকারী নাঈম মোঘল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন খালেদা ইয়াসমিন একজন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধান শিক্ষক তিনি দীর্ঘদিন একই জায়গায় চাকরি করার সুবাদে বিদ্যালয়টিকে তার স্বামী দ্বারা পরিচালিত করেন এবং নিজ বাড়ি হিসেবে মনে করেন। খালেদা ইয়াসমিন যে দলই ক্ষমতা আসুক সেই দলের ব্যানারে লোক হয়ে যায় তাকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন বৈঠকে দেখা যায় যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একজন প্রধান শিক্ষক দ্বারা মানুষ এটা আশা করে না । আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি আশা করি এর সুষ্ঠু তদন্ত করে তারা তাদের আইন অনুযায়ী বিবেচনা করবেন। এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খগ পতী রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে আমরা ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের এক দাতা সদস্যের পদ বাতিল করেছি। একই ব্যক্তির দুটি সার্ভিস বুক থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন সরকারি চাকরিতে একই ব্যক্তির দুটি সার্ভিস থাকার কোন সুযোগ নেই কিন্তু আমি জানতে পেরেছি তার দুটি সার্ভিস বুক। এ ব্যাপারে আমি সহ আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ আছে অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে । এদিকে তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে খালেদা ইয়াসমিনের চাকুরী নেওয়ার ব্যাপারটি এলাকায় জানাজানি হলে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে এলাকাবাসী সহ সামাজিক ব্যক্তিবর্গের দাবি তাকে দ্রুত চাকুরীচুতো করে আইন আনুক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।